রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) এলিট গ্রুপ এ-তে মুম্বাইয়ের হয়ে খেলতে নেমে নিজেদের স্পিন জাদুতে ওড়িশার বিরুদ্ধে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিলেন শামস মুলানি এবং হিমাংশু সিংহ। এই দুই স্পিনার মিলে নয়টি উইকেট নিয়ে ওড়িশার ইনিংস ধ্বংস করেন এবং ম্যাচে ১০৩ রানে জয় তুলে নেয় মুম্বাই। এই জয়ের ফলে মুম্বাই সাত পয়েন্ট অর্জন করে। ম্যাচ শেষে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন শামস মুলানি, যিনি এই ম্যাচে মোট ১১টি উইকেট নিয়ে মুম্বাইয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
মুম্বাই প্রথম ইনিংসে ৬০২ রানে ইনিংস ঘোষণা করে এবং এরপর ওড়িশা তাদের প্রথম ইনিংসে ২৮৫ রান তুলতেই সংগ্রাম করে। পরবর্তী ইনিংসে আবার ব্যাট করতে নেমে ওড়িশার দল মাত্র ২১৪ রানে গুটিয়ে যায়।
শেষ দিনে ওড়িশার স্কোর ছিল ১২৬/৫। একমাত্র আশীর্বাদ স্বৈন (৫১) ব্যাট হাতে লড়াই চালিয়ে যান এবং নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন, কিন্তু তারপরই শামস মুলানির বলে এলবিডব্লিউ আউট হয়ে ওড়িশার শেষ আশা শেষ হয়ে যায়। ওড়িশার বাকি ব্যাটসম্যানরাও খুব একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেননি এবং দলটি খুব দ্রুতই অলআউট হয়ে যায়।
মুম্বাইয়ের হয়ে এই বিশাল স্কোর গড়তে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন শ্রেয়াস আইয়ার এবং সিদ্ধেশ লাড। শ্রেয়াস আইয়ার ২৩৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন এবং সিদ্ধেশ লাড ১৬৯ রান করে অপরাজিত থাকেন।
ম্যাচ শেষে হিমাংশু সিংহ জানান, “প্রথম ইনিংসে বল তেমন একটা ঘুরছিল না। বেশিরভাগ উইকেটই আমি স্ট্রেইট বল করেই প্রথম স্লিপে ধরাই। তেমন একটা টার্ন না হলেও আজ্জু দা (অজিঙ্ক রাহানে) আমাকে আমার শক্তির উপর নির্ভর করতে বলেন। আমাদের অধিনায়ক খুবই শান্ত। তিনি আমাকে নিজের মতো করে ফিল্ডিং সেট করতে এবং বল করতে বলেন। যদি কোনো কৌশল কাজ না করে, তখন তিনি নিজেই নতুন পরিকল্পনা নিয়ে আসেন।”
অন্যদিকে, পুনেতে মহারাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ৩৫ রানের জয় পায় সার্ভিসেস। পুলকিত নারাং (৬/৮৭) এবং অমিত শুক্লা (৪/৯৪) মিলে যৌথভাবে দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্স দেখান এবং দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যান। মহারাষ্ট্রের অধিনায়ক অঙ্কিত বাওয়ানে দলের হয়ে ৯৪ রান করে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালান এবং সাথী হিসেবে সত্যজিৎ বাছাভ (৪২) এবং সৌরভ নাওয়ালে (৫৬) কিছুটা সাপোর্ট দিলেও, তা যথেষ্ট প্রমাণিত হয়নি। সার্ভিসেস এই ম্যাচ থেকে ৬ পয়েন্ট লাভ করে।
আগরতলায় ত্রিপুরা এবং বরোদার ম্যাচ ড্র হয়ে যায়, যেখানে ত্রিপুরা প্রথম ইনিংসে লিড নিয়ে ৩ পয়েন্ট সংগ্রহ করে। বরোদা ২৩৫ রান করে, আর ত্রিপুরা প্রথম ইনিংসে ৪৮২/৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। বরোদা ম্যাচের শেষ দিনে তিনজন ব্যাটসম্যানের হাফসেঞ্চুরি সহ ২৪১/৪ এ শেষ করে।
মুম্বাইয়ের এই বিশাল জয়ে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান কমে যায় এবং গ্রুপ এ-র শীর্ষে থাকা বরোদার ঠিক পিছনে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে আসে। জম্মু ও কাশ্মীরও ১৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
বিদর্ভের স্পিনার হর্ষ দুবের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বিদর্ভ হিমাচল প্রদেশকে ইনিংস ও ৮৮ রানে পরাজিত করে। এই জয়ে বিদর্ভ গ্রুপ বি-তে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছে।