পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হল কালীপুজোর ৪৭তম বর্ষ (Kali Puja at Mamata Banerjee’s Residence)। এই পুজোয় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশ থেকে চোখের অস্ত্রোপচার করিয়ে ফিরলেও অভিষেকের উপস্থিতি পুজোর মহোৎসবকে আরো বর্ণময় করে তুলেছিল।
অভিষেকের আগমন
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই পুজোয় কন্যা আজানিয়াকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হন। কালীঘাটের গিয়ে প্রথমেই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে প্রণাম করেন এবং তারপর কালীর বিগ্রহের উদ্দেশেও প্রণাম নিবেদন করেন। তাঁর চোখে কালো চশমা ছিল, যা তার সদ্য হওয়া অস্ত্রোপচারের কারণে।
পুজোর আয়োজন
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে প্রতি বছর কালীপুজো ধুমধাম করে উদযাপিত হয়। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পুজোর সময় বাড়ির পরিবেশ ছিল অত্যন্ত আনন্দময়। মাটির ঘট দিয়ে পুজো সাজানো হয়েছে, যেখানে পেঁচা এবং ধানের ছড়া আঁকা ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই পুজোর জন্য ভোগ রান্না করেন, যা পুজোর বিশেষ আকর্ষণ হয়ে থাকে।
পরিবারের উপস্থিতি
মমতার বাড়ির পুজোয় অভিষেকের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকিমা কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা পুজোর জোগাড়ের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এই পুজোতে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার মতো পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
এছাড়া, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা, সাংসদ ও বিধায়করাও এই পুজোয় উপস্থিত ছিলেন। পুজোর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে কালীপুজোর মতো একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিতি দলের মধ্যে সংহতি এবং ঐক্যবদ্ধতার বার্তা পৌঁছে দেয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মা কালী আমাদের সকলের জীবনকে সুন্দর ও সমৃদ্ধ করে তুলুক।”
কালীপুজোর সামাজিক গুরুত্ব
কালীপুজো শুধুমাত্র ধর্মীয় উদযাপন নয়, বরং এটি সামাজিক সম্প্রীতির বার্তা বহন করে। কালীঘাটের মন্দিরে বহু মানুষের সমাগম ঘটে। এখানে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে এই পুজোতে অংশগ্রহণ করেন। অভিষেকের কালীঘাটে উপস্থিতি এই বার্তাকে আরো শক্তিশালী করেছে যে, ধর্মের উর্ধ্বে মানুষের মধ্যে একতা থাকা উচিত।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উভয়েই রাজ্যের উন্নয়ন ও অগ্রগতির বিষয়ে মন্তব্য করেন। তারা আগামীদিনে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নানা পরিকল্পনার কথা বলেন। অভিষেক বলেন, “এই পুজো আমাদের সকলকে একত্রিত হতে শেখায় এবং আমাদের নতুন উদ্যমে কাজ করার প্রেরণা দেয়।”
কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজো, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগমন এবং সেখানে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনিক ব্যক্তিদের উপস্থিতি রাজ্যের রাজনৈতিক এবং সামাজিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। পুজোর মাধ্যমে সকলের মধ্যে ধর্ম, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের একটি সেতুবন্ধন তৈরি হয়।