বহু এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি, জানালেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী

ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝির নেতৃত্বে সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি ঘোষণা করেছেন যে, ‘জিরো ক্যাজুয়ালিটি’ মিশনটি সম্পূর্ণ সফল হয়েছে, এবং এতে কোনো…

ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝির নেতৃত্বে সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি ঘোষণা করেছেন যে, ‘জিরো ক্যাজুয়ালিটি’ মিশনটি সম্পূর্ণ সফল হয়েছে, এবং এতে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। এটি রাজ্যের জনগণের জন্য একটি আনন্দের খবর, যা নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নতুন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

মোহনচরণ মাঝির নেতৃত্বে এই মিশনের মূল লক্ষ্য ছিল দুর্যোগপ্রবণ এলাকা থেকে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিশেষ করে, মরশুমী ঝড় এবং বৃষ্টির সময় মানুষের জীবন রক্ষা করা ছিল প্রধান উদ্দেশ্য। মুখ্যমন্ত্রী এই মিশনের মাধ্যমে রাজ্য সরকার প্রমাণ করেছে যে, তারা জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এলাকাভিত্তিক সেচ প্রকল্প, আশ্রয় কেন্দ্র, এবং জরুরি পরিষেবা প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।

   

মহন চরণ মজি নিজে বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেন। তিনি জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার অভিযান চালান, যাতে তারা দুর্যোগের সময় কীভাবে নিরাপদে থাকতে পারে তা জানতে পারে।

জনগণের সহযোগিতা
এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশনে স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা অপরিহার্য ছিল। সরকারী কর্মচারীরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের দুর্যোগের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করেন। জনগণের সহযোগিতায় এবং সচেতনতায় তারা নিজেদের এবং নিজেদের পরিবারকে নিরাপদ রাখতে সক্ষম হয়।

নিরাপত্তা ব্যবস্থার সফলতা
মহন চরণ মজির ঘোষণা অনুযায়ী, মিশন চলাকালীন কোনো ধরনের প্রাণহানি ঘটেনি, যা একটি ঐতিহাসিক সাফল্য। এই সাফল্যের পেছনে সরকারের নিবিড় প্রস্তুতি, স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার কঠোর পরিশ্রম উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে।

এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক সাফল্য নয়, বরং একটি মানবিক সাফল্যও। সরকার জনগণের জীবনকে কতটা গুরুত্ব দেয়, তা এই মিশনের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।মাঝি জানান, প্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলাগুলি থেকে অন্তত ৬ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই ছ’লক্ষ মানুষের মধ্যে ছিলেন ৬০০০ সন্তানসম্ভবাও। তাঁদের তড়িঘড়ি বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হওয়া ১৬০০ জন প্রসূতি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানি রুখতে আগেই ৮৩২২টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রেখেছিল ওড়িশা প্রশাসন।

মহন চরণ মজি ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন যে, এই সাফল্য ধরে রাখতে এবং ভবিষ্যতে আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তারা পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা আমাদের জনগণের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

রাজ্য সরকার আরও উন্নত প্রযুক্তি এবং পরিকল্পনার মাধ্যমে দুর্যোগের পূর্বাভাস এবং প্রস্তুতির ক্ষেত্রে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করবে। পাশাপাশি, স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হবে যাতে তারা নিজেদের এবং তাদের পরিবারকে আরও ভালোভাবে রক্ষা করতে পারে।

ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মহন চরণ মজির ‘জিরো ক্যাজুয়ালিটি’ মিশনটি একটি সফল উদ্যোগ, যা রাজ্যের মানুষের মধ্যে আশার আলো জ্বালিয়েছে। এই সাফল্যের মাধ্যমে সরকারের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়েছে যে, তারা জনগণের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভবিষ্যতে এই ধরনের আরো সফল মিশনের মাধ্যমে রাজ্যের উন্নয়ন এবং জনগণের জীবনের মানোন্নয়নে কাজ করবে সরকার।