ঘূর্ণিঝড় দানা (Cyclone Dana) গত কয়েক দিন ধরে পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রভাব ফেলছে। আজ সকালে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। গতকাল থেকে বন্ধ থাকা এই পরিষেবা আজ সকাল ৮:৫০ টায় আবার শুরু হয়েছে, যা বহু যাত্রীকে স্বস্তি দিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় দানার বর্তমান পরিস্থিতি
আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় দানা (Cyclone Dana) আজ সকালে ৫:৩০ টায় ১০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিতে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এটি ধামরার প্রায় ২০ কিমি উত্তর-উত্তরপশ্চিমে, ভদ্রকের ৩০ কিমি পূর্বে এবং ভিটরকনিকায় হাবালিখাটি প্রাকৃতিক শিবিরের ৪০ কিমি উত্তর-উত্তরপশ্চিমে অবস্থান করছিল। আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে, এই ঘূর্ণিঝড়টি (Cyclone Dana) উত্তর ওড়িশার ওপর দিয়ে প্রায় উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং আজ দুপুরের মধ্যে একটি ঘূর্ণিজলবায়ুতে দুর্বল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে আবহাওয়ার পূর্বাভাস
এটি উল্লেখযোগ্য যে, ২৫ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে ওড়িশা এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টির (Cyclone Dana)পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এটি ওই অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বর্ষাকাল এলেই সাধারণত এ ধরনের পরিস্থিতি দেখা যায়, তবে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতি
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত ছিল। গতকাল যখন আবহাওয়া পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছিল, তখনই তারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমস্ত ফ্লাইট কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আজ যখন পরিস্থিতি উন্নতি ঘটেছে, তখন দ্রুত ফ্লাইট কার্যক্রম পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা এবং টেকনিক্যাল টিম পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া
ফ্লাইট কার্যক্রম পুনরায় শুরু হওয়ার সাথে সাথে যাত্রীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। এক যাত্রী বলেছেন, “আমরা অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিলাম। এখন ফ্লাইট শুরু হওয়ায় আমরা স্বস্তি বোধ করছি।”
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব ও প্রস্তুতি
ঘূর্ণিঝড় দানা সম্পর্কে যে কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির জন্য সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী (NDRF) এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী ইতিমধ্যেই বিভিন্ন অঞ্চলে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
চিকিৎসা ও সেবা
স্বাস্থ্য বিভাগও এই পরিস্থিতির মোকাবেলায় প্রস্তুত। হাসপাতালগুলোতে জরুরি সেবা বাড়ানো হয়েছে এবং চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যারা ভারী বর্ষণের কারণে বিপদে পড়বেন, তাদের জন্য চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় দানা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আবহাওয়ার অস্বাভাবিক পরিবর্তন আমাদের জীবনে কখনও-কখনও বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সকলের উচিত সচেতন থাকা এবং বিপদের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন এবং জনগণ মিলেই একসাথে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারবে।
এখন শুধু অপেক্ষা, দেখার পালা—ঘূর্ণিঝড় দানা আমাদের ওপর কিভাবে প্রভাব ফেলে এবং আমরা কিভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারি। আশা করা যায়, সঠিক প্রস্তুতি এবং সচেতনতার মাধ্যমে আমরা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হব।
‘দানা’র মধ্যেই চালু বিমান পরিষেবা
ঘূর্ণিঝড় দানা (Cyclone Dana) গত কয়েক দিন ধরে পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রভাব ফেলছে। আজ সকালে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট কার্যক্রম…