রাহুল বনাম সরফরাজ বির্তকের আগুন উসকে দিল রোহিতের মন্তব্য

ভারত-নিউজিল্যান্ডের প্রথম টেস্টে ভারতের পরাজয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টের আগে দলের সম্ভাব্য পরিবর্তন নিয়ে মুখ খুললেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে ভারতের…

Rohit Sharma KL Rahul vs Sarfaraz Khan

ভারত-নিউজিল্যান্ডের প্রথম টেস্টে ভারতের পরাজয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টের আগে দলের সম্ভাব্য পরিবর্তন নিয়ে মুখ খুললেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে ভারতের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪৬ রানে অলআউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে রোহিতের নেতৃত্বে দলের লড়াই সত্ত্বেও নিউজিল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে যায়। নিউজিল্যান্ড ১৯৮৮ সালের পর প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে টেস্ট জয় পায়। ১০৭ রানের লক্ষ্য নিয়ে নামা নিউজিল্যান্ডের হয়ে উইল ইয়ং (৪৮*) এবং রচিন রবীন্দ্র (৩৯*) দলকে জয় এনে দেন। ভারতের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে যশপ্রীত বুমরাহ (২/২৯) কিছুটা লড়াই করলেও শেষরক্ষা হয়নি।

প্রথম টেস্টে শুবমান গিলের অনুপস্থিতি ভারতের খেলায় বড় প্রভাব ফেলে। গিল গলা ব্যথার কারণে একাদশের বাইরে থাকায়, তার স্থানে সুযোগ পান সরফরাজ খান। তবে, সরফরাজের প্রথম ইনিংস ছিল সম্পূর্ণ ব্যর্থ। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও king pair করেন। তবে মুম্বাইয়ের এই ব্যাটার দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতকে টেস্টে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন, যেখানে তিনি ১৫০ রানের ইনিংস খেলে তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি অর্জন করেন।

   

বেঙ্গালুরুতে নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজয়ের পর রোহিত শর্মা নিশ্চিত করেন যে শুবমান গিল এখন পুরোপুরি সুস্থ এবং দ্বিতীয় টেস্টে তিনি দলে ফিরতে পারেন। এই অবস্থায় সরফরাজ খান বা অভিজ্ঞ কে এ রাহুল-এর একজনকে দল থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। কারণ, রাহুল বারবারই নিজের জায়গা পাকা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

এই চলমান বিতর্কের মাঝেই, রোহিত শর্মা সরাসরি রাহুল, গিল এবং সরফরাজকে নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে বলেন যে, “দলের সবাই জানে তারা কোথায় দাঁড়িয়ে এবং তাদের কী করতে হবে।” রোহিত আরও যোগ করেন, “দেখুন, আমি সেই ব্যক্তি নই যে প্রতিটি ম্যাচের পর ব্যক্তিগতভাবে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলি। তারা নিজেরাই জানে তারা তাদের খেলায় কোথায় আছে, তাদের ক্যারিয়ার কোন পর্যায়ে রয়েছে। আমরা এক ম্যাচ বা এক সিরিজের ভিত্তিতে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করি না। প্রাথমিক পর্যায়ে, তারা জানে দলের কী প্রয়োজন, এবং তারা কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমি তাদের সঙ্গে আগের কথার চেয়ে আলাদা কিছু বলার প্রয়োজন মনে করছি না।”

রোহিতের স্পষ্ট বার্তা, “যে কেউ সুযোগ পাবে, তাকে ম্যাচে প্রভাব ফেলতে হবে। এটি একটি সহজ বার্তা যা আমরা বারবার বলে থাকি। এমন খেলোয়াড়দের অপেক্ষায় থাকাও দলের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। দুর্ভাগ্যবশত শুবমান প্রথম টেস্টে খেলতে পারেননি, সরফরাজ সেই সুযোগটি পেয়েছিল এবং একটি বড় সেঞ্চুরি করেছে। এটি দলের জন্য ভাল লক্ষণ।”

Rahul বনাম Sarfaraz বিতর্ক
ভারতের মিডল অর্ডারে কে এ রাহুল-এর খারাপ ফর্ম এবং সরফরাজ খানের প্রথম টেস্টে শূন্য রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে বড় ইনিংস খেলার পর দুইজনের মধ্যে কাকে বেছে নেওয়া হবে তা নিয়ে চলমান বিতর্কে রোহিতের বক্তব্য নতুন মাত্রা যোগ করেছে। রাহুল ভারতীয় দলের একজন সিনিয়র খেলোয়াড়, যিনি কিছু সময় ধরে ফর্মে নেই। অন্যদিকে, সরফরাজের বড় ইনিংস তাকে একটি মজবুত ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য করেছে।

রোহিতের এই বক্তব্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে দলকে দীর্ঘমেয়াদী ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে এবং এক ম্যাচের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে খেলোয়াড়দের বাদ দেওয়া উচিত হবে না। তবে রোহিতের মতে, প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই নিজের পারফরম্যান্সের দিকে নজর রাখতে হবে এবং যখনই সুযোগ আসে, তখন তা কাজে লাগাতে হবে।

তৃণমূল স্তরের প্রতিযোগিতা
রোহিতের বক্তব্য দলীয় প্রতিযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে, যেখানে দলীয় পরিবেশে প্রত্যেক খেলোয়াড়কেই নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। গিল, রাহুল, এবং সরফরাজের মতো খেলোয়াড়রা নিজেদেরকে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন, এবং এই প্রতিযোগিতা দলের সামগ্রিক শক্তি বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের পরবর্তী টেস্ট ম্যাচটি হবে পুনেতে, এবং সেখানেই দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে। তবে রোহিতের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, টিম ম্যানেজমেন্ট দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে এবং খেলোয়াড়দের থেকে তাদের সেরাটা বের করে আনার চেষ্টা করছে।

সিদ্ধান্ত নেওয়ার চ্যালেঞ্জ
এই মুহূর্তে ভারতীয় দলের সামনে একটি কঠিন সিদ্ধান্ত রয়েছে। দ্বিতীয় টেস্টে গিলের প্রত্যাবর্তন হলে কাকে বাদ দেওয়া হবে—কে এ রাহুল নাকি সরফরাজ খান? কে এ রাহুলএকাধিক সুযোগ পেয়েও ফর্মে ফিরতে পারেননি, অন্যদিকে সরফরাজ বড় ইনিংস খেলে প্রাথমিকভাবে নিজের জায়গা পাকা করতে চাইছেন।

রোহিত শর্মা অবশ্য পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিলেন যে, প্রত্যেক খেলোয়াড় নিজের অবস্থান জানে এবং দলের জন্য কী করতে হবে তা জানে। এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র দলকে শক্তিশালী করবে এবং প্রত্যেক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনবে।

কে এ রাহুল বনাম সরফরাজ খান বিতর্কের মাঝে রোহিত শর্মার “তারা জানে তারা কোথায় দাঁড়িয়ে” মন্তব্য দলীয় মানসিকতার ওপর আরও জোর দিয়েছে। ভারতীয় দল এখন ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে চলেছে, যেখানে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে হবে।