“না চেন, না আরাম”: কঠোর পরিশ্রমের বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi) সোমবার সকালে এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড সামিটে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারতের অগ্রগতির নতুন দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরলেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন যে…

PM Modi Emphasizes Hard Work

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi) সোমবার সকালে এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড সামিটে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারতের অগ্রগতির নতুন দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরলেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন যে এখন থেকে ভারতের উন্নয়নের মানদণ্ড হবে ভবিষ্যতের লক্ষ্য অর্জন করা, অতীতের সাফল্যের সঙ্গে বর্তমানের তুলনা করা নয়। “এখন আমাদের কাছে একটি ‘look forward’ দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। ২০৪৭ সালের মধ্যে একটি উন্নত ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্য আমাদের মানসিকতার অংশ,” প্রধানমন্ত্রী বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে মূলত ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি এবং আগামী দিনের চ্যালেঞ্জগুলির কথা তুলে ধরা হয়। তিনি উল্লেখ করেন, “এর আগে প্রতিটি সরকার তাদের কাজের তুলনা করত আগের সরকারের সঙ্গে। আমরাও এই পথে চলেছি। কিন্তু, এখন আর এই তুলনা করে সন্তুষ্ট হওয়া যাবে না। আমাদের সামনে নতুন লক্ষ্য রয়েছে, আর সেই লক্ষ্যই হবে উন্নতির মাপকাঠি।”

   

প্রধানমন্ত্রী মোদী বললেন যে ভারতের অগ্রগতির জন্য শুধু অতীতের সাফল্যে তৃপ্ত থাকার সময় চলে গেছে। এখন সামনে তাকিয়ে এগোতে হবে এবং নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

কঠোর পরিশ্রমের বার্তা
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মূল সুর ছিল কঠোর পরিশ্রমের উপর। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন যে, “না চেন, না আরাম” নীতিতে বিশ্বাস রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশের প্রত্যেক নাগরিকের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছানোর বার্তা দিলেন তিনি।
মোদী আরও বলেন, “আজকের ভারত শুধুমাত্র আরাম করে সফলতা অর্জন করতে চায় না। আমাদের আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং দেশের ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হতে হবে।”

“২০৪৭ সালের উন্নত ভারত”
প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারতের ২০৪৭ সালের জন্য যে উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন, তা দেশের উন্নতির একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা দেয়। তিনি বলেন, “যখন আমরা আমাদের লক্ষ্য স্থির করব, তখন আমাদের মনে রাখতে হবে যে ২০৪৭ সালে ভারতকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “২০৪৭-এর লক্ষ্য শুধুমাত্র একটি সময়সীমা নয়, এটি আমাদের দেশের ভবিষ্যতের স্বপ্ন।”

নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও চ্যালেঞ্জ
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন যে, বর্তমান সময়ে ভারতের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, এবং আমাদের সেগুলি মোকাবিলা করতে হবে কঠোর পরিশ্রম ও নতুন চিন্তাধারার মাধ্যমে। তিনি বলেন, “আমাদের এখন এমন একটি সময়ে বাস করছি যেখানে দেশের প্রতিটি নাগরিককে দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এমনভাবে যেন প্রতিটি পদক্ষেপ ভবিষ্যতের জন্য সুদৃঢ় ভিত্তি তৈরি করে।”

ভারতের সরকার এখন এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করছে, যা আগের সরকারগুলির চেয়ে আলাদা। মোদী বলেন, “আমাদের নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য আরও কার্যকর এবং ভবিষ্যত-দর্শী নীতি গ্রহণ করতে হবে। প্রতিটি সিদ্ধান্ত হবে আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য।”

তুলনামূলক মূল্যায়ন নয়, ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে, তা হলো এখন থেকে আগের সরকারের সঙ্গে তুলনা করে নিজেদের কাজ মূল্যায়ন করা বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, “আমরা আগে যা করেছি তার সঙ্গে বর্তমান কাজের তুলনা করে সন্তুষ্ট হওয়া সম্ভব নয়। এখন আমাদের লক্ষ্য কী, তা নিয়ে কাজ করতে হবে এবং ভবিষ্যতে আরও কী করতে হবে তা নিয়ে ভাবতে হবে।”

তিনি বলেন, “আমাদের দেশের লক্ষ্য এখন শুধুমাত্র অতীতের সাফল্যের উপর দাঁড়িয়ে নয়, বরং ভবিষ্যতের দিকে নজর দিয়ে এগিয়ে যাওয়া। আমরা অতীতকে মনে রাখব, তবে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে।”

ভারতের অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলা
প্রধানমন্ত্রী মোদী তার বক্তব্যে আরও বলেন যে, “ভারত এখন কেবল নিজেকে বিশ্বের মানচিত্রে প্রতিস্থাপিত করছে না, বরং অন্যান্য দেশের কাছে আদর্শ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরছে। আমরা এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি যেখানে আমাদের দেশের প্রতিটি নাগরিক এবং প্রতিটি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করছে দেশের উন্নতির জন্য।” তিনি আরও বলেন যে, “প্রতিটি নাগরিকের নিজের উন্নতি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি দেশের সামগ্রিক উন্নতিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।”

প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যে স্পষ্টতই ভারতের উন্নয়নের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে। “না চেন, না আরাম” নীতি অনুযায়ী, তিনি দেশের প্রত্যেক নাগরিককে কঠোর পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগের মাধ্যমে ভবিষ্যতের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। ২০৪৭ সালের উন্নত ভারতের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য দেশের প্রতিটি স্তরে এই মানসিকতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি জরুরি। ভারতের উন্নতির মাপকাঠি হবে ভবিষ্যতের লক্ষ্য অর্জন এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার দক্ষতা।