বিজেপির পরেই উপনির্বাচনে প্রার্থী তালিকা তৃণমূলের

কলকাতা, ২০ অক্টোবর, ২০২৪: পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার আসন্ন উপনির্বাচনকে (West Bengal Assembly By-Elections) সামনে রেখে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (AITC) তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। দলের সভানেত্রী…

jjhjoo বিজেপির পরেই উপনির্বাচনে প্রার্থী তালিকা তৃণমূলের

কলকাতা, ২০ অক্টোবর, ২০২৪: পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার আসন্ন উপনির্বাচনকে (West Bengal Assembly By-Elections) সামনে রেখে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (AITC) তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। দলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) অনুপ্রেরণা ও নেতৃত্বে এই প্রার্থীতালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এই উপনির্বাচনে ৬টি আসনের জন্য প্রার্থীদের মনোনীত করা হয়েছে, যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস দলগতভাবে তাদের শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্য রেখেছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, যেসব বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই কেন্দ্রগুলির প্রার্থী তালিকা নীচে উল্লেখ করা হল:

   
  1. সিতাই (এসসি): সঙ্গীতা রায়
  2. মাদারিহাট (এসটি): জয় প্রকাশ টোপ্পো
  3. তালডাংরা:ফাল্গুনী সিংহবাবু
  4. মেদিনীপুর: সুজয় হাজরা
  5. হাড়োয়া: শেখ রবিউল ইসলাম
  6. নৈহাটি: সনৎ দে

এই ছয়টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অঙ্গনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ এগুলি রাজ্যের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিশেষত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস বর্তমানে রাজ্যের শাসক দল হিসেবে তাদের শক্তি ধরে রাখতে চাইছে, এবং এই উপনির্বাচন সেই প্রচেষ্টার একটি অংশ।

সিতাই (এসসি): সংরক্ষিত আসন সিতাই থেকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সঙ্গীতা রায়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত এবং দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর নির্বাচনী প্রচার ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে, এবং তিনি জনগণের উন্নতির জন্য কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।

মাদারিহাট (এসটি): মাদারিহাট আসন থেকে আদিবাসী প্রার্থী হিসেবে জয় প্রকাশ টোপ্পোকে মনোনীত করা হয়েছে। তিনি আদিবাসী সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে আসছেন এবং তাঁর নেতৃত্বে এই অঞ্চলের মানুষ উন্নয়নের আশা করছেন। টোপ্পো ইতিমধ্যেই দলীয় সমর্থকদের নিয়ে জনসংযোগ শুরু করেছেন।

তালডাংরা: এই কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে ফাল্গুনী সিংহবাবুকে মনোনীত করা হয়েছে। তিনি স্থানীয় স্তরে বেশ পরিচিত একটি নাম এবং দলের একটি শক্তিশালী মুখ হিসেবে দেখা হয়। সিংহবাবুর উপর প্রচুর প্রত্যাশা রয়েছে, বিশেষত কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ভোট টানার প্রচেষ্টা চলছে।

মেদিনীপুর: ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই আসন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সুজয় হাজরা। তাঁর লক্ষ্য হবে শিক্ষিত ও তরুণ প্রজন্মকে তৃণমূলের পাশে আনানো এবং উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে মানুষের সমর্থন আদায় করা।

হাড়োয়া: শেখ রবিউল ইসলামকে হাড়োয়া থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। তিনি স্থানীয় স্তরে সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত এবং তাঁর পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি ও কর্মদক্ষতার জন্য দল থেকে প্রার্থী হয়েছেন।

নৈহাটি: এই আসন থেকে প্রার্থী হিসেবে সনৎ দে মনোনীত হয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত এবং সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর কাজে দক্ষ। নৈহাটি আসনটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সনৎ দের প্রচেষ্টায় তৃণমূল এই আসনে জয়লাভের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।

তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় নেতারা এই উপনির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছেন, কারণ এটি আগামী নির্বাচনের জন্য দলের শক্তি পরীক্ষা করার একটি সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। দলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, নির্বাচনী প্রচার ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং প্রতিটি প্রার্থী তাদের এলাকায় প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন। স্থানীয় স্তরে উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতি এবং তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন সরকারের কর্মকাণ্ডের ভিত্তিতে ভোট টানার চেষ্টা চলছে।

দলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রার্থীদের মনোনয়নের পর সকলের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, “এই প্রার্থীরা পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের পথপ্রদর্শক হবেন। আমরা নিশ্চিত যে, জনগণ তাদের উপর আস্থা রাখবে এবং তারা বিজয়ী হবেন।” দলের তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, এই প্রার্থীরা দলের মূলনীতিগুলি মেনে চলবেন এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উপনির্বাচনগুলি পশ্চিমবঙ্গের ভবিষ্যতের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, কারণ এটি তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান জনপ্রিয়তা এবং সরকারের কাজের মূল্যায়ন করার একটি সুযোগ। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলি এই উপনির্বাচনগুলিতে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে চেষ্টা করবে এবং ক্ষমতা ধরে রাখার লড়াইয়ে নামবে।

এখন দেখার বিষয়, আসন্ন উপনির্বাচনে কে বিজয়ী হয় এবং কোন দল কতোটা শক্তি অর্জন করে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই প্রচারে নেমে পড়েছেন এবং তাঁদের লক্ষ্য একটাই—জনগণের আস্থা অর্জন করে উপনির্বাচনে জয়ী হওয়া।