সরকারকে ৩দিনের ডেডলাইন বেঁধে ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের

রাজ্যে জুনিয়র চিকিৎসকদের (Junior doctors) মধ্যে তৈরি হওয়া ক্ষোভ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকারকে ৩দিনের ডেডলাইন (3-day deadline) বেঁধে দিলেন আন্দোলনকারীরা। তাদের ১০ দফা দাবির প্রতি…

Junior doctors 3-day deadline

রাজ্যে জুনিয়র চিকিৎসকদের (Junior doctors) মধ্যে তৈরি হওয়া ক্ষোভ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকারকে ৩দিনের ডেডলাইন (3-day deadline) বেঁধে দিলেন আন্দোলনকারীরা। তাদের ১০ দফা দাবির প্রতি রাজ্য সরকারের অঙ্গীকারবদ্ধতার অভাব এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার ফলে আগামী মঙ্গলবার থেকে চিকিৎসকরা সর্বাত্মক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। আগামী সোমবারের মধ্যে রাজ্য সরকার যদি কোন পদক্ষেপ না নেয় তাহলে এই কর্মসূচীর পথে হাঁটবেন তাঁরা। এই ধর্মঘটের ফলে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে, যা সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

কলকাতা মেডিকেল কলেজে  চিকিৎসক সংগঠনের সাথে বৈঠকে বসে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। আগামী তিন দিনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঠিক হয়েছে বৈঠকে। আগামীকাল সোদপুর থেকে ধর্মতলা অনশন মঞ্চ পর্যন্ত বিচারের দাবিতে ন্যায় যাত্রা। রবিবার ধর্মতলায় মহাসমাবেশ। সোমবার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল এবং অফিসে বিক্ষোভ কর্মসূচি।

   

জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁদের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি রয়েছে। প্রথমত, চিকিৎসকদের চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, হাসপাতালগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন এবং পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা। তৃতীয়ত, চিকিৎসকদের কাজের পরিবেশের উন্নতি এবং মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরে রাজ্য সরকার ও চিকিৎসকদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে, কিন্তু কোনও কার্যকর সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও, বাস্তবে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে চিকিৎসকরা এখন তাদের দাবি আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

এই ধর্মঘটের ফলে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হবে, যার প্রভাব পড়বে সাধারণ রোগীদের ওপর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তারা মানবিক কারণে জরুরি পরিষেবাগুলি অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবেন, তবে সাধারণ পরিষেবা বন্ধ থাকবে।
রাজ্য সরকারের কাছে জুনিয়র চিকিৎসকরা বারবার আবেদন জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি সমূহ দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য। কিন্তু সরকারের তরফে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে পরিস্থিতি এই পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাঁদের দাবি, যদি সরকার তাঁদের দাবি মেনে না নেয়, তবে তাঁরা বাধ্য হয়ে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেবেন।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকদের এই ধর্মঘটের খবর পাওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকরা জরুরি বৈঠক করেছেন। তবে এখনও পর্যন্ত সরকার পক্ষ থেকে কোনো সুস্পষ্ট পদক্ষেপের ঘোষণা করা হয়নি। চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাঁরা অপেক্ষা করবেন সরকার কি প্রতিক্রিয়া দেখায়।
চিকিৎসকদের এই আন্দোলন কেবল তাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য নয়, বরং সাধারণ মানুষের জন্যও। তারা মনে করেন, উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করতে হলে তাদের কাজের পরিবেশ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। তাই, এই ধর্মঘটের মাধ্যমে তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন, যাতে দ্রুত তাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়।চিকিৎসকদের এই ধর্মঘট বাস্তবায়িত হলে, তা রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় একটি বড় সংকট সৃষ্টি করবে।