Indian Railways: শিয়ালদহ ডিভিশনে ‘লেট রোগ’ সারাতে ভরসা মুম্বই মডেল

শিয়ালদহ ডিভিশনের (Sealdah Division) ট্রেন চলাচল দেরিতে হওয়ার সমস্যা মেটাতে এবার নতুন পদক্ষেপ নিল পূর্ব রেল (Eastern Railways) । শুক্রবার থেকে ট্রেন স্টপেজের সময়সীমা কমিয়ে…

Sealdah Division Introduces 30-Second Boarding Time, Adopts Mumbai Model to Reduce Train Delays

শিয়ালদহ ডিভিশনের (Sealdah Division) ট্রেন চলাচল দেরিতে হওয়ার সমস্যা মেটাতে এবার নতুন পদক্ষেপ নিল পূর্ব রেল (Eastern Railways) । শুক্রবার থেকে ট্রেন স্টপেজের সময়সীমা কমিয়ে মাত্র ৩০ সেকেন্ড নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শিয়ালদহ ডিভিশনে (Indian Railways)ট্রেন চলাচলের সময়সূচী ঠিক রাখতে এবং ট্রেনের দেরি হওয়ার সমস্যার সমাধানে। যাত্রী ওঠানামার এই সময়সীমা কার্যকর করতে স্টেশনে মোতায়েন করা হচ্ছে কমার্শিয়াল বিভাগের কর্মী এবং আরপিএফ জওয়ানদের।

শিয়ালদহ ডিভিশনে লেট রোগের সমস্যায় ভুগছে রেল অপারেশনস
দীর্ঘদিন ধরে শিয়ালদহ ডিভিশনে ট্রেন চলাচল দেরিতে হচ্ছে, যাত্রীদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ভোগান্তি বাড়ছে। ট্রেনগুলির নির্ধারিত সময়ে না পৌঁছানোর ফলে যাত্রীরা প্রায়ই অফিস বা অন্যান্য গন্তব্যে দেরিতে পৌঁছাচ্ছেন। এই সমস্যার মূল কারণ হিসাবে ট্রেনের স্টপেজে বেশি সময় লাগা উঠে এসেছে। প্ল্যাটফর্মে ট্রেন থামার পর যাত্রীদের ওঠা-নামা করানোর জন্য বেশি সময় বরাদ্দ হওয়ার ফলে এই দেরি হচ্ছে।

   

মুম্বাই মডেলে ভরসা
শিয়ালদহ ডিভিশনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য মুম্বাই মডেলের উপর নির্ভর করছে রেল কর্তৃপক্ষ। মুম্বাইয়ের লোকাল ট্রেনগুলিতে যাত্রী ওঠানামার জন্য নির্দিষ্ট এবং কম সময় বরাদ্দ করা থাকে। এর ফলে ট্রেনগুলি নির্দিষ্ট সময়সূচী মেনে চলতে পারে এবং দেরি কম হয়। এই মডেল অনুসরণ করে এবার শিয়ালদহ ডিভিশনেও সময়সীমা কমিয়ে মাত্র ৩০ সেকেন্ড করা হয়েছে।

আগে বরাদ্দ ছিল বেশি সময়
এর আগে শিয়ালদহ ডিভিশনের বড় বড় স্টেশনগুলিতে যাত্রী ওঠানামার জন্য ৪৫-৫০ সেকেন্ড বরাদ্দ ছিল। কখনও কখনও এই সময়সীমা ১:৩০ মিনিট পর্যন্ত হয়ে যেত, বিশেষ করে যদি প্ল্যাটফর্মে ভিড় থাকত। এই অতিরিক্ত সময়ই ট্রেন চলাচলের দেরির মূল কারণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

নতুন নিয়ম কার্যকর করতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নতুন নিয়ম কার্যকর করার জন্য শিয়ালদহ ডিভিশনের বড় বড় স্টেশনগুলিতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্ল্যাটফর্মে কমার্শিয়াল বিভাগের কর্মীরা যাত্রী ওঠানামার তত্ত্বাবধান করবেন। সেই সঙ্গে, যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে আরপিএফ (রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স) জওয়ানদের।

যাত্রীদের সহযোগিতার প্রয়োজন
নতুন এই সময়সীমা কার্যকর করতে যাত্রীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রেনের দরজা খোলার সাথে সাথেই যাত্রীদের দ্রুত ওঠানামা করতে হবে। প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষমাণ যাত্রীদেরও ট্রেন আসার আগেই সঠিকভাবে সারিবদ্ধ হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে ওঠানামা প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হয়।

যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া
এই নতুন নিয়মের প্রতি যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। একদিকে কিছু যাত্রী মনে করছেন, কম সময়সীমা দেওয়া হলে তাঁদের ওঠানামা করতে অসুবিধা হতে পারে, বিশেষ করে বয়স্ক এবং শারীরিকভাবে অক্ষম যাত্রীদের জন্য। অন্যদিকে অনেকেই মনে করছেন, দেরি কমানোর জন্য এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অনেক যাত্রী আশা করছেন, এই নিয়ম কার্যকর হলে রেল চলাচল অনেকটাই সময়মতো হবে এবং অফিসযাত্রার সময় সমস্যা কমবে।

রেলের বক্তব্য
পূর্ব রেলের এক আধিকারিক জানান, “শিয়ালদহ ডিভিশনে ট্রেনের সময়সীমা নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। তাই আমরা এই নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আশা করছি, যাত্রীরা আমাদের সহযোগিতা করবেন এবং আমরা দ্রুত ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে পারব।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এই সময়সীমা কমানোর পাশাপাশি রেল কর্তৃপক্ষ আরও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে বলে জানা গিয়েছে। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলিতে যাত্রী ওঠানামার জন্য আলাদা আলাদা গেট স্থাপন করা, ট্রেনগুলিতে অতিরিক্ত বগি যোগ করা এবং প্ল্যাটফর্মে ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।

শিয়ালদহ ডিভিশনে ট্রেনের দেরি কমাতে মুম্বাই মডেলের উপর ভিত্তি করে ৩০ সেকেন্ড সময়সীমা নির্ধারণ করার পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যাত্রী ওঠানামার জন্য এই কম সময় বরাদ্দ করা হলেও, রেলের আশা যাত্রীদের সহযোগিতায় এটি সফল হবে এবং রেল চলাচল আরও সময়মতো হবে।