বাংলাদেশে বাতিল হচ্ছে ১৫ আগস্ট পালন, ওই দিন বিশ্ব শিহরিত হয়েছিল

ভয়াবহ খবরটা পাওয়ার পর আফশোস করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর। ততক্ষণে বিশ্ব শিহরিত। ভারতের ২৮ তম স্বাধীনতা দিবসের দিন,…

In Bangladesh, the official ceremony to observe Sheikh Mujibur Rahman's assassination day on August 15 will be cancelled

ভয়াবহ খবরটা পাওয়ার পর আফশোস করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর। ততক্ষণে বিশ্ব শিহরিত। ভারতের ২৮ তম স্বাধীনতা দিবসের দিন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে সপরিবারে খুন করা হয়েছিল বাংলাদেশের (Bangladesh) ‘জাতির পিতা’ শেখ মুজিবুর রহমানকে। দিনটি বাংলাদেশে এতদিন জাতীয় শোকদিবস হিসেবে চিহ্নিত।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এই ‘জাতীয় দিবস’ পালন বাতিল হচ্ছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। আর ১৯৭৫ সালে হয়েছিল বাংলাদেশের প্রথম সেনা বিদ্রোহ। দেশটির কয়েকজন বিদ্রোহী সেনা অফিসার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বৈরাচারী শাসক চিহ্নিত করে গণহত্যায় অংশ নেন। মুজিব পরিবারসহ তাঁর ঘনিষ্ট মিলিয়ে সর্বসাকুল্যে ৪৭ জনকে খতম করা হয়েছিল।

   

১৫ আগস্টের এই গণহত্যার ঘটনা যখন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পেরেছিলেন তখন তাঁর আফশোস ছিল বারবার গুপ্তচর বিভাগ মারফত আক্রমণের সতর্কতা দেওয়া হলেও শেখ মুজিবুর রহমান সেটি উপেক্ষা করেছিলেন। বাংলাদেশে গত পনের বছর চলেছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার শাসন। রক্তাক্ত গণবিক্ষোভে তিনি গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন। তিনি ভারতে আশ্রিত।

পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের খুনের পর তিনি ও তাঁর বোন শেখ রেহানা ভারতে আশ্রিত ছিলেন। শেখ হাসিনার নেত়ৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাসীন। এই সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে বাতিল করছে জাতীয় শোক, শিশু ও ঐতিহাসিক ৭ মার্চসহ আটটি দিবস।

বাংলাদেশের অন্যতম সংবাদপত্র ‘ইত্তেফাক’ জানাচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, আটটি জাতীয় দিবস বাতিল করা সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। শিগগিরই এসব দিবস বাতিল করে পরিপত্র (নোটিশ) জারি করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ‘ইত্তেফাক’ আরও জানাচ্ছে,অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও সরকারি ছুটি বাতিলের পরামর্শ দেয় বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। 

ব্যাপক ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের বিষয়টি উপদেষ্টামণ্ডলীর বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাতিল হওয়া আটটি দিবসের মধ্যে পাঁচটিই শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের জন্ম ও মৃত্যু সংক্রান্ত।

এর মধ্যে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস। এ ছাড়া বাতিলের তালিকায় রয়েছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস, ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস।