দশ দফার মধ্যে পূরণ মাত্র সাত দফা, হতাশায় ভেঙে পড়লেন চিকিৎসকরা

নিজেদের ১০ দফা দাবি পূরণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ধর্মতলা চত্বরে আমরণ অনশনে বসেছেন বিভিন্ন কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকরা (Junior Doctors Protest)। এরই মধ্যে রবিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব…

Out of ten demands, only seven have been met, and the doctors have fallen into despair.

নিজেদের ১০ দফা দাবি পূরণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ধর্মতলা চত্বরে আমরণ অনশনে বসেছেন বিভিন্ন কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকরা (Junior Doctors Protest)। এরই মধ্যে রবিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-সহ সব চিকিৎসক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়ে একটি ইমেল করেছিলেন। সোমবার এই বৈঠকে বসার ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব।

আর তারপরেই যেমন কথা তেমন কাজ। সোমবার স্বাস্থ্য ভবনে সেই বৈঠক হয়। কিন্তু আজকের সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি বলেই জানালেন সিনিয়র চিকিৎসকরা। রবিবার নবান্নের তরফ থেকে সেই ইমেল করে জানানো হয়েছিল, প্রত্যেক সংগঠন থেকে দু’জন করে প্রতিনিধি সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন। এমনকি সেই বৈঠকে যারা উপস্থিত থাকবেন তাঁদের নামও ইমেল করে জানাতে বলা হয়েছিল।

   

এরপরেই সোমবার সেই মর্মে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-সহ চিকিৎসক সংগঠনগুলির সঙ্গে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সেই বৈঠক শুরু হয়। তবে এদিনের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী উপস্থিত থাকলেও দেখা মেলেনি স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের। প্রত্যেকটি চিকিৎসক সংগঠনের সদস্যেরা বৈঠকে ঢোকার আগে জানিয়েছিলেন, তাঁরা জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবিকে সমর্থন করেন।

শুধু তাই নয়, তাঁদের এই আন্দোলনকে যৌক্তিক বলেও মনে করেন। কিন্তু বৈঠক থেকে বেরিয়ে কার্যত ক্ষোভ উগরে দেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা। তাঁদের বক্তব্য, সোমবার জুনিয়র চিকিৎসকদের ১০ দফা দাবি পূরণ নিয়ে কোনও লিখিত প্রতিশ্রুতি দেয়নি সরকার। ফলত, সরকার জুনিয়র চিকিৎসকদের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফেরার আর্জি জানালেও তা বর্তমানে কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা।

সিনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে একজন প্রশ্ন তুলে বলেছেন, “থ্রেট কালচারে অভিযুক্তেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। দুর্নীতিগ্রস্ত লোকেরা স্বাস্থ্য প্রশাসনে বিভিন্ন পদে বসে রয়েছে। পুলিশের ভূমিকা কী, তা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি। এরপরে কীভাবে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানো সম্ভব?” কিন্তু এদিকে রাজ্যের মুখ্যসচিব জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদের ১০টি দাবির মধ্যে সাতটি মানা হয়েছে।

বাকি তিনটি দাবি কার্যকর করার বিষয়ে মুখ্যসচিব বলেছেন, “তিন দাবির বিষয়ে সরকারের কাছে সময়সীমা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এগুলির বিষয়ে সময়সীমা দেওয়া সম্ভব নয়।” প্রসঙ্গত, আজকের বৈঠকে দক্ষিণ কলকাতার একটি পুজোমণ্ডপে ‘বিচার চাই’ স্লোগান দিয়ে যে আন্দোলনকারীরা গ্রেফতার হয়েছিলেন তাঁদের প্রসঙ্গও উঠেছিল।

তবে আজকের বৈঠক প্রসঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে দেবাশিস হালদার বলেছেন, “এই বৈঠক সম্পর্কে আমাদের কিছু জানা নেই। আন্দোলন আমরা করছি। অনশনও আমরা করছি। অথচ আমাদেরই বৈঠকে ডাকা হল না। তাই এই বৈঠক খুব একটা ফলপ্রসূ হবে বলে মনে হয় না।” তবে জুনিয়র ডাক্তারদের ‘আমরণ অনশন’ তোলার আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। জানা গিয়েছে, সোমবারের এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন ১২টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। প্রতিটি সংগঠন থেকে দু’জন করে সদস্য আজকে উপস্থিত ছিলেন।