প্রশাসন-জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে অচলাবস্থা কাটাতে উদ্যোগী অপর্ণা সহ বিদ্বজ্জন, দু’পক্ষকেই পাঠালেন ইমেল

আরজি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে এবং হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে গত শনিবার অর্থাৎ ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা (Junior Doctors Hunger Strike)। এখনও…

To resolve the deadlock between the administration and junior doctors, Aparna and other intellectuals have sent emails to both parties.

আরজি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে এবং হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে গত শনিবার অর্থাৎ ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা (Junior Doctors Hunger Strike)। এখনও তাঁরা সেই অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই অনশনরত তিন জন ডাক্তার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এবার রাজ্য সরকার ও আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে মধ্যস্থতার সেতু গড়তে চেয়ে দু-পক্ষকে চিঠি পাঠালেন অপর্ণা সেন, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, রত্নাবলী রায়-সহ বেশ কয়েক জন।

বুধবার সন্ধ্যায় ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে গিয়েছিলেন অপর্ণা সেন। সেখান থেকে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও মঞ্চে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এরপর রবিবার অর্থাৎ আজ তিনি ও আরও কয়েকজন দু’পক্ষের ইনবক্সে ইমেল পাঠালেন। ঠিক কী লেখা হয়েছে ওই ইমেলে? অনশনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের দিনদিন স্বাস্থ্যের অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি তাঁদের আন্দোলনের ‘ন্যায্যতা’ এবং‌ ‘যৌক্তিকতা’ স্বীকার করে নিয়ে লেখা হয়েছে, “অনশনরত চিকিৎসক-বন্ধুদের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরোধ, নাগরিক সমাজের এই সক্রিয়তায় আস্থা রেখে, আপনারা অনশন প্রত্যাহার করুন।”

   

রাজ্য প্রশাসন এবং আন্দোলনরত ডাক্তারদের পাঠানো সেই ইমেলে অপর্ণারা আরও লিখেছেন, “প্রশাসন এবং আন্দোলনরত চিকিৎসক সমাজ, উভয় পক্ষকে জানাতে চাই, এই সমস্যা নিরসনে, দু’পক্ষের মধ্যে একটি নতুন সংলাপের সেতু গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নাগরিক সমাজের কোনও ভূমিকা থাকতে পারে কিনা সেটা যদি জানান, তাহলে আমরা অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সেই বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পারি।”

এর পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসনকে পাঠানো ইমেলে অপর্ণারা লিখেছেন, “অনশনরত চিকিৎসকদের যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে তাঁদের বক্তব্য শুনুন এবং তাঁদের দাবিপূরণের জন্য সততার সঙ্গে সচেষ্ট হন।” ইমেলে আরও লেখা হয়েছে, “সরকার চিকিৎসকদের অধিকাংশ দাবির ন্যায্যতা স্বীকার করা সত্ত্বেও, বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে যে সংশয় এবং নিরাপত্তাহীনতা আন্দোলনরত ডাক্তারদের অনশনের পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে, সেই আর্জি ডাক্তারদের একার নয়, বৃহত্তর নাগরিক সমাজেরও।”

সেইসঙ্গে দু’পক্ষের মধ্যে সংলাপের সেতু গড়ে তোলারও উদ্যোগ নেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন তাঁরা। অপর্ণা সেন ছাড়াও সেই ইমেলে স্বাক্ষর রয়েছে, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, রত্নাবলী, মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র, সিলেবাস কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার, মনোসমাজকর্মী মোহিত রণদীপ, চিত্রপরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, ঋদ্ধি সেন, নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন সহ প্রমুখ।

রবিবার সকালে তাঁদের স্বাক্ষর করা সেই ইমেল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস’ ফ্রন্টকে পাঠানো হয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা দুই পক্ষের উত্তরের।