ভারতীয় শিল্প মহলের কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব রতন টাটা (Ratan Tata) বুধবার রাতে ইহজগতের মায়া ত্যাগ করে চির শান্তির দেশে গমন করেছেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। বার্ধক্যজনিত সমস্যা নিয়ে মুম্বাইয়ের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বহু নতুন উদ্ভাবনীর স্মৃতির সঙ্গেই এক বুক স্বপ্ন নিয়ে চলে গেলেন তিনি। ভারতীয় অটোমোবাইলের বাজারে তাঁর অবদান মানুষের মনে চিরকাল থেকে যাবে। টাটা গোষ্ঠীর তত্ত্বাবধানে বেশ কিছু গাড়ি বাজারে এলেও সেগুলি ছিল রতন টাটার মস্তিষ্ক প্রসূত। আজ সেই গাড়িগুলির মধ্যে কয়েকটি বাজারে বিক্রি হলেও বেশিরভাগ ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেয়েছে। চলুন রতন টাটার হাত ধরে বাজারে আসা এমনই কয়েকটি চিরস্মরণীয় ও বিপুল জনপ্রিয় গাড়ি সম্পর্কে জেনে নিই।
Tata Estate
১৯৯২ সালে Tata Estate গাড়িটি দেশের বাজারে পা রেখেছিল। এটি টাটার টেলকোলাইন পিকআপ ট্রাকের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। এর ফিচারের তালিকায় জায়গা পেয়েছিল ট্যাকোমিটার এবং পাওয়ার উইন্ডো। যা তৎকালীন সময়ে সেগমেন্টের প্রথম ছিল। আবার এতে Mercedes-Benz station wagon-এর বৈশিষ্ট্য দেওয়া হয়েছিল। শক্তির উৎস হিসাবে ছিল একটি ১.৯ লিটার ডিজেল ইঞ্জিন।
Tata Siera
Tata Siera ছিল অফ-রোডের জন্য বিশেষভাবে সক্ষম। অত্যাধুনিক ডিজাইনের এই গাড়িই সে সময় বাজার কাঁপিয়েছিল। ১৯৯১ সালে Tata Talcoline পিকআপ ট্রাকের ওপর ভিত্তি করে এসেছিল। এটি রিয়ার হুইল ড্রাইভ এবং ফোর হুইল ড্রাইভ – উভয় প্রযুক্তিতে বেছে নেওয়া যেত। তিন দরজা ভার্সনের এই এসইউভি (SUV) একটি ২.০ লিটার শক্তিশালী ডিজেল ইঞ্জিনে ছুটত।
Tata Indica
হ্যাচব্যাক গাড়ির বাজারে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছিল Tata Indica। এটি ছিল দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতের ডিজেল ইঞ্জিন সহ প্রথম হ্যাচব্যাক গাড়ি। ১৯৯৮ সালে লঞ্চ হয়েছিল মডেলটি। বিভিন্ন ভার্সনে বেছে নেওয়া যেত এই গাড়ি। যা উন্মোচনের এক সপ্তাহের মধ্যেই ১১ হাজারের বেশি অর্ডার পেয়েছিল টাটা। অল্প দিনের মধ্যেই দেশের বেস্ট সেলিং গাড়ির তকমা ছিনিয়ে নিয়েছিল। বিবর্তনের ফলে বর্তমানে এই গাড়ি Tata Tiago নামে বিক্রি হয়।
সপ্তমীতে ৬ ঘণ্টার বেশি লেট, ট্রেন হাওড়া থেকে কখন ছাড়বে দেখুন
Tata Manza
Indica-র প্ল্যাটফর্মের উপর ভিত্তি করে তৈরি Tata Manza ২০০৯-এ বাজারে এসেছিল। Tata X1 প্ল্যাটফর্মের উপর নির্মিত হয়েছিল। এই লাক্সারি সেডান গাড়িতে ছিল এসআরএস এয়ারব্যাগ, ইবিডি সহ এবিএস, ড্যাশ ইন্টিগ্রেটেড অডিও সিস্টেম, অটোমেটিক ক্লাইমেট কন্ট্রোল, লেদার আপহোলস্টেরি, ডায়মন্ড-কাট অ্যালয় হুইল এবং ৫০০ লিটার ট্রাঙ্ক। ২০১৬ সালে গাড়িটির উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
Tata Nano
Tata Nano-র প্রসঙ্গে নতুন করে কিছু বলার নেই। এটি ছিল রতন টাটার (Ratan Tata) অতি স্বপ্নের প্রকল্প। ২০০৮ লঞ্চ হয়েছিল। আসলে সস্তার এই গাড়ি সংস্থার আশা পূরণ করতে অসামর্থ্য হয়েছিল। তাই ২০১৮ তে বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে বাজারে এর বিক্রি থেকে বিদায় নিলেও রতন নিজেই এই গাড়িতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সওয়ারি করে গিয়েছেন।
উপরিউক্ত গাড়িগুলি ছাড়াও Tata Safari ও Tata Nexon রতন টাটার (Ratan Tata) ইচ্ছেতেই বাজারে এসেছিল। এগুলি বর্তমানে এসইউভি গাড়ির বাজার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।