মহাষষ্ঠীর রাতেই দিল্লিতে চার ছক্কার বৃষ্টিতে সিরিজ পকেটে পুড়ল ভারত

ক্রিকেটকে মহা অনিশ্চয়তার খেলা বলা হলেও কখনো কখনো ফল আগেই নিশ্চিত হয়ে যায়। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশের ব্যাটিং পরিস্থিতিকে সেভাবেই ফুটিয়ে তোলে। গোয়ালিয়রে…

IND beats BAN

ক্রিকেটকে মহা অনিশ্চয়তার খেলা বলা হলেও কখনো কখনো ফল আগেই নিশ্চিত হয়ে যায়। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশের ব্যাটিং পরিস্থিতিকে সেভাবেই ফুটিয়ে তোলে। গোয়ালিয়রে ভারত – বাংলাদেশ সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারার পর এবার দ্বিতীয় ম্যাচেও হারের মুখ দেখল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল (IND beats BAN)। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে টাইগারদের হেলায় উড়িয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচেও ৮৬ রানে পদ্মাপারের দেশকে একপেশে লড়াইয়ে হারালেন সূর্য- হার্দিকরা। সেই সাথে তিন ম্যাচের সিরিজে দুটি তে জিতে সিরিজ পকেটে পুড়লেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা।

মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যায় দিল্লিতে টস জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজিমুল হোসেন শান্ত। ইনিংস শুরু করতে নেমেই বড় ঝটকার মুখে পড়ে ভারতীয় ক্রিকেট দল। পাওয়ারপ্লের মধ্যেই ফিরে যান ভারতের দুই ওপেনার সঞ্জু স্যামসন (১০) ও অভিষেক শর্মা ( ১৫)। ওপেনার হিসেবে অভিষেক ‘পূর্বপরিচিত’ হলেও প্রথমবার এই সিরিজে ওপেন করতে নেমে পুরোপুরি ব্যর্থ হলেন তামিলনাড়ুর উইকেটকিপার – ব্যাটার সঞ্জু স্যামসন।

   

এদিন তাসকিন আহমেদের ইনসুইংয়ে কাট করতে গেলে সহজ ক্যাচ তুলে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্তের হাতে। সঞ্জু ফেরার কিছুক্ষণের মধ্যেই একইরকমভাবে ফিরে যান ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। এদিন মাত্র ৮ রান করে অভিজ্ঞ বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুরের বলে ভুল শর্ট খেলে ফিরতে হয় তাঁকে।

পাওয়ারপ্লেতে পরপর তিন অভিজ্ঞ ব্যাটার ফিরে গেলে ম্যাচের রাশ ধরে নেন নবাগত নীতিশ কুমার রেড্ডি এবং রিঙ্কু সিং। বর্তমানে টি টোয়েন্টি ক্রিকেট ‘সেনসেশন’ রিঙ্কু সিং এদিন ৫৩ রান করেন মাত্র ২৯ বল খেলে। রিঙ্কুর দেখাদেখি হাত খুলে খেলতে শুরু করেন নীতিশও। দিল্লিতে বাংলাদেশি বোলারদের আক্রমনের জবাবে চার-ছক্কার বৃষ্টি নামিয়ে ২৭ বলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম অর্ধশতরান করেন অন্ধ্রপ্রদেশের এই ডান হাতি ব্যাটার।

তবে ১৪তম ওভারে ৩৪ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলার সময় মুস্তাফিজুরের বলে আউট না হলে হয়তো প্রথম সেঞ্চুরিও করতে পারতেন ভারতীয় দলে নবাগত এই তারকা। রিঙ্কু – নীতিশের পর শেষদিকে হার্দিক পান্ডিয়া এসে ৩২ রান যোগ করেন ১৯ বলে। শেষমেষ ৯ উইকেট হারিয়ে ২২১ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা খাড়া করে ভারত।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে বেশ কিছু বাউন্ডারি মারলেও ধীরে ধীরে প্রকট হতে থাকে টাইগারদের ব্যাটিং ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ভারতীয় পেসার অর্শদীপর বলে আউট হন পারভেজ (১৬)। প্রথম ম্যাচের পর আজও বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল (১১) শিকার হন ওয়াশিংটন সুন্দরের।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে লিটন দাসও (১৪) বরুণ চক্রবর্তীর বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড। ৬০ রানেই টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এরপর অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ (৪১) বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করলেও খুব একটা সফল হননি। ব্যাট হাতে বাংলাদেশের সংহারক হয়ে ওঠা নীতিশ রেড্ডির বলে রিয়ান পরাগের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। তবে মাহমুদউল্লাহ রান করলেও ব্যর্থ হয়েছেন তৌহিদ (২), মেহেদি হাসান মিরাজ (১৬)। ভারতের হয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করার পাশাপাশি বল হাতেও দুটি উইকেট নিয়েছেন নীতিশ কুমার রেড্ডি। আজ ম্যাচের সেরাও তিনি। এছাড়াও দুটি উইকেট পেয়েছেন মিস্ট্রি স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী। বাকি আর্শদীপ, ওয়াশিংটন, রিয়ান , অভিষেক পেয়েছেন একটি করে উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ২২১/৯ (নীতিশ ৭৪, রিংকু ৫৩, পান্ডিয়া ৩২; রিশাদ ৩/৫৫, তাসকিন ২/১৬, মোস্তাফিজ ২/৩৬, তানজিম ২/৫০)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৫/৯ (মাহমুদউল্লাহ ৪১, পারভেজ ১৬, মিরাজ ১৬, লিটন ১৪; বরুণ ২/১৯, নীতিশ ২/২৩)।
ফল: ভারত ৮৬ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নীতিশ রেড্ডি।