শিলিগুড়িতে চাকরি প্রার্থী নিগ্রহের ঘটনায় বিস্ফোরক সাংবাদিক সম্মেলন বাংলা পক্ষের

জাল নথি ব্যাবহার করে বাংলায় চাকরির সুযোগ পাচ্ছেন বিহার, উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দারা! এই অভিযোগে আগেই সরব হয়েছিল বাংলা পক্ষ (bangla Pokhho)। দিন কয়েক আগে এমনই এক ভিডিও…

Bengali Pokhho press conference:

জাল নথি ব্যাবহার করে বাংলায় চাকরির সুযোগ পাচ্ছেন বিহার, উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দারা! এই অভিযোগে আগেই সরব হয়েছিল বাংলা পক্ষ (bangla Pokhho)। দিন কয়েক আগে এমনই এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে দেখা গিয়েছিল বিহারের দুই চাকরিপ্রার্থী জাল নথি ব্যাবহার করে কেন্দ্রীয় আধাসেনায় নিয়োগের শারীরিক পরীক্ষার জন্য শিলিগুড়িতে এসে ছিল। দুই বহিরাগত ক্রিমিনালদের ধরতে গিয়েই বাংলা পক্ষর দুই সদস্য রজত ভট্টাচার্য ও গিরিধারী রায় শিলিগুড়ি পুলিসের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন গত ২৬ সেপ্টেম্বর।জাল ডোমিসাইলের দুর্নীতি ফাঁস করতে ও ধৃতদের মুক্তির দাবিতে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করল বাংলা পক্ষ। সংগঠনের সাধারন সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ‍্যায়, সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, শীর্ষ পরিষদ সদস‍্য সম্রাট কর, সৌম‍্যকান্তি ঘোড়ই, অরিন্দম চ‍্যাটার্জী, এমডি সাহিন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাল ডোমিসাইল বিষয়ে জনস্বার্থ মামলা করা বিষ্ণু চৌধুরী।

গর্গ চট্টোপাধ‍্যায় বলেন, “তাঁরা ব‍্যক্তিস্বার্থে এই কাজ করছিলেন না, করছিলেন ভারতের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে। বাংলার ভূমিপুত্রদের ন‍্যায‍্য অধিকার রক্ষা করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। আধাসেনায় নিয়োগ পরীক্ষা হল SSC-GD. এই চাকরির পরীক্ষায় প্রতিটা রাজ্যের রাজ্য ভিত্তিক আসন আছে। যেগুলো সেই রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দাদের জন্য সংরক্ষিত। বাংলার জন্য সংরক্ষিত আসনে বিহার-ইউপি- ঝাড়খন্ড সহ অন্যান্য রাজ্যের ছেলেমেয়েরা (যারা বাংলার স্থায়ী বাসিন্দা নয়) টাকার মাধ্যমে বাংলার ডোমিসাইল সার্টিফিকেট বানিয়ে বা সরাসরি ডোমিসাইল জাল করে চাকরি দখল করছে। ডকুমেন্ট জালিয়াতি তো আইনত অপরাধ৷ এরা BSF, CRPF, SSB, CISF এ চাকরি পাচ্ছে। ক্রিমিনালে ভরে যাচ্ছে আধাসেনা”।

   

সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি বলেন, বিহারে কাঊর বিরুদ্ধে অপরাধ মূলক অভিযোগ থাকলে সে বিহার থেকে পুলিস ভেরিফিকেশন পাশ করবে না। তাই বাংলার জাল ডোমিসাইল নিয়ে চলে আসছে। এখানে টাকার মাধ্যমে পুলিস ভেরিফিকেশন পাশ করে যাচ্ছে। খুনী বা ধর্ষক কেন্দ্রীয় আধাসেনায় বছরের পর বছর চাকরি পাচ্ছে এভাবে৷এরা কি নিরাপত্তা দেবে? “

বাংলা পক্ষের সদস্যরা আরও দাবি করেন, SSC র পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতর, CRPF র আঞ্চলিক সদরদপ্তর, একাধিক SDO অফিস, ডায়মণ্ড হারাবার পুলিস সুপারের অফিসে ডেপুটেশন দিয়েছে, হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছে, প্রায় ৫০ টি FIR করেছে। চাকরিপ্রার্থীদের পাশে নিয়ে বাংলা পক্ষ এই আন্দোলনে চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলা পক্ষর আন্দোলনের ফলে আধাসেনা কর্তৃপক্ষ SSC-GD ২০২১ ও ২০২২ সালে প্রায় ৫৫০০ চাকরি বাতিলের সুপারিশ করেছে এবং চাকরি বাতিল হয়েছে। ৬০% জাল করে চাকরি পেয়েছে। দুবছরেই সংখ্যা ৫৫০০, তাহলে গত এক দশকে কত ক্রিমিনাল আধাসেনায় এভাবে চাকরি পেয়েছে? বাংলা পক্ষর আন্দোলনের ফলে SDO অফিস গুলো থেকে হাজার হাজার ডোমিসাইল বাতিল হচ্ছে।

বাংলায় লাঞ্ছিত বিহারের দুই চাকরিপ্রার্থী, অভিযোগে গ্রেফতার বাংলা পক্ষের রজত

রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার স্বার্থে, বর্ডার সুরক্ষার স্বার্থে এবং বাংলার স্থায়ী বাসিন্দাদের চাকরির স্বার্থে দুজন ক্রিমিনাল যারা জাল কাগজ নিয়ে আধাসেনার চাকরি দখল করতে এসেছিল তাদের ধরেছে। এটা ভারতের সুরক্ষার জন্য এবং বাংলার ছেলে-মেয়েদের জন্য মহৎ কাজ৷ কেন রজত ভট্টাচার্যদের গ্রেফতার হতে হল? এত মামলা করা হল, CBI তদন্ত চলছে, এত ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে- তার পরেও জালিয়াতি হচ্ছে কিভাবে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বা রাজ্য পুলিস ব্যবস্থা না নিলে বাংলার ছেলেমেয়েরা কোথায় যাবে? তাই বাংলার স্থানীয় ছেলেমেয়েদের অনুরোধেই গেছিল রজত ভট্টাচার্য ও গিরিধারী রায়। তারা ক্রিমিনাল না দাবি সদস্যদের।

এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে বাংলা পক্ষ স্পষ্ট ৪ দফা দাবি জানায়, রজত ভট্টাচার্য ও গিরিধারী রায়কে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, জাল ডোমিসাইল মাধ্যমে আধাসেনায় কোনো চাকরি দেওয়া চলবে না জাল ডোমিসাইল ও জাল কাস্ট সার্টিফিকেট দিয়ে গত ১০ বছরে যারা চাকরি পেয়েছে তাদের ভেরিফিকেশন ও তদন্ত করে চাকরি বাতিল করে গ্রেপ্তার করতে হবে৷ আধাসেনায় চাকরিতে ফিজিক্যাল টেস্ট ও মেডিক্যাল টেস্টের ক্যাম্প গুলোর বাইরে রাজ্য পুলিস ক্যাম্প করে আগে কাগজ পত্র চেক করুক।