নবরাত্রির প্রাক্কালে জানুন দেবীর ন’টি রূপের কথা!

দুর্গাপুজোকে বাঙালির শ্ৰেষ্ঠ উৎসব বলা হয় (Navaratri)। আর কয়েকদিন বাদেই উৎসবের অমোঘ আনন্দে মেতে উঠবে বাঙালি সমাজ। ঢাকের আওয়াজ, শিউলি ফুলের গন্ধে ভরে উঠবে চারপাশ।…

Navaratri and its Spiritual Significance

দুর্গাপুজোকে বাঙালির শ্ৰেষ্ঠ উৎসব বলা হয় (Navaratri)। আর কয়েকদিন বাদেই উৎসবের অমোঘ আনন্দে মেতে উঠবে বাঙালি সমাজ। ঢাকের আওয়াজ, শিউলি ফুলের গন্ধে ভরে উঠবে চারপাশ। আশ্বিনের শারদপ্রাতে সঙ্গে ছেলেমেয়েকে নিয়ে মা আসবেন মর্ত্যে। বাঙালিরা যখন দুর্গাপুজোর আনন্দে মাতোয়ারা, তখনই গুজরাটে ধুমধাম করে পালন করা হয় নবরাত্রি। গুজরাট ছাড়াও মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, ব্যাঙ্গালোরেও এই উৎসব পালন করা হয়। এই নবরাত্রি অর্থাৎ ৯টা রাতে নয়জন শক্তির পুজো করা হয়। ন’টি ভিন্ন ভিন্ন রূপে পূজিতা হন মা দুর্গা। শারদ নবরাত্রিতে দুর্গা, ভদ্রকালী, জগদম্বা, অন্নপূর্ণা, সর্বমঙ্গলা, ভৈরবী, চণ্ডিকা, ললিতা, ভবানী ও মুকাম্বিকা রূপের আরাধনা করা হয়। জেনে নিন দেবীর এই নয়টি রূপের মাহাত্ম্য।

মহিষাসুরকে বধ করার জন্য দেবতাদের সমন্বয়ে প্রকট হন মা দুর্গা। কঠোর তপস্যার ফলস্বরূপ মহিষাসুর যখন নিজেকে সর্বশক্তিমান ভেবে স্বর্গ, মর্ত্য, পাতালে অত্যাচার শুরু করে, তখনই অসুর নিধনে, অশুভ শক্তির দমন করতে অবির্ভূতা হন মা দূর্গা। মায়ের এই রূপ সকলের সকল দুর্গতি নাশ করে।

   

নবরাত্রির প্রথম দিনে পূজিতা হন মা শৈলপুত্রী। এক হাতে ত্রিশূল এবং অন্য হাতে পদ্ম ধারণ করে বৃষ-এর ওপর অধিষ্ঠান করেন এই দেবী। দেবী পার্বতী হিমালয়ের কন্যা, তাই দেবীর এই রূপের নাম শৈলপুত্রী।

দ্বিতীয় দিনে দেবীর ব্রহ্মচারিণী রূপের আরাধনা কর হয়। দেবী এক হাতে রুদ্রাক্ষ মালা এবং অন্য হাতে পবিত্র কমন্ডলু নিয়ে খালি পায়ে হাঁটেন। কথিত আছে এইসময় দেবী মহাদেবকে খুশি করার জন্য ধ্যানে নিমগ্ন ছিলেন।

দেবী চন্দ্রঘন্টা পূজিতা হন তৃতীয় দিনে। তার কপালে থাকে অর্ধচন্দ্র এবং দেবীর দশটি হাত থাকে। বাঘের পিঠের উপর অধিষ্ঠান করেন দেবী।

চতুর্থ দিনের আরাধ্যা দেবী হলেন দেবী কুষ্মাণ্ডা। দেবীর নামের অর্থ হল ‘কু’ (সামান্য), ‘উষমা’ (উষ্ণতা বা শক্তি) এবং ‘আমন্ডা’ (ডিম), যার অর্থ মহাবিশ্বের স্রষ্টা। এই দেবী মালপোয়া প্রসাদে বিশেষ প্রসন্ন হন।

পঞ্চম দিনে স্কন্দমাতা দেবীর পুজো করা হয়। যার চারটি হাতের মধ্যে এক বাহুতে পদ্ম এবং একটি পবিত্র কমন্ডলু এবং অন্য দুটিতে একটি ঘণ্টা থাকে। এই দেবীর প্রিয় ফল হল কলা।

নবরাত্রির ষষ্ঠ দিন দেবী কাত্যায়নীকে উৎসর্গ করা হয়, যিনি আদিশক্তির একটি রূপ। সিংহ বাহিনী এই দেবী, ঋষি কাত্যায়নের কন্যা। এই দেবীকে মধু নিবেদন করলে, দেবী প্রসন্ন হন।

সপ্তম দিনে দেবীর কালরাত্রি রূপের আরাধনা করা হয়। শ্যাম বর্ণা এই দেবীর হাতে থাকে একটি ত্রিশুল এবং এই দেবীর বাহন হল গাধা। কথিত আছে, অসুর নিধনের জন্য দেবী নিজের শরীরের উজ্জ্বল রং ত্যাগ করেছিলেন। ঘরে সুখ ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রসাদ হিসেবে দেবীকে গুড় নিবেদন করা হয়।

নবরাত্রির অষ্টম দিন দেবী মহাগৌরীকে উৎসর্গ করা হয়। নারকেল দিয়ে এই দেবীর পুজো করলে দেবী প্রসন্ন হন।

নবরাত্রির নবম বা শেষ দিন দেবী সিদ্ধিধাত্রীর আরাধনা করা হয়। দেবী দুর্গার এই রূপ পরিপূর্ণতাকে নির্দেশ করে। তিল ছাড়া এই দেবীর পুজো সম্পন্ন হয় না।