ভারতে ইলিশ পাঠানো ইস্যুতে বেকায়দায় ড. ইউনূসের সরকার, সুপ্রিম নোটিশে চাঞ্চল্য

দেশে (Bangladesh) বেকা়য়দায় সরকার প্রধান (Muhammad Yunus) ড, ইউনূস। কেন দুর্গাপূজার (Durga Puja) সময় পড়শি ভারতে ইলিশ মাছ পাঠানো হবে এই প্রশ্নে জর্জরিত অন্তর্বর্তী সরকার।…

HILSA 1 ভারতে ইলিশ পাঠানো ইস্যুতে বেকায়দায় ড. ইউনূসের সরকার, সুপ্রিম নোটিশে চাঞ্চল্য

দেশে (Bangladesh) বেকা়য়দায় সরকার প্রধান (Muhammad Yunus) ড, ইউনূস। কেন দুর্গাপূজার (Durga Puja) সময় পড়শি ভারতে ইলিশ মাছ পাঠানো হবে এই প্রশ্নে জর্জরিত অন্তর্বর্তী সরকার। অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি উঠেছে। এবার ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধের জন্য আইনি নোটিশ গেল।

গণবিক্ষোভে বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) নিজ দেশে ‘স্বৈরাচারী’.হিসেবে চিহ্নিত। তাঁর বিরোধীদের দাবি, ‘গণহত্যাকারী’ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া ভারতে ইলিশ যাবে না।

   

ক্ষমতা পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল ভারতে ইলিশ রফতানি করা হবে না। ভারতীয় মৎস্য আমদানিকারকদের অনুরোধ করা হয় দুর্গাপূজার সময় যেন ইলিশ পা়ঠানো হয়। এই সময় পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসমে বাংলাদেশের ইলিশ চাহিদা বেশি থাকে। এমন অনুরোধের পর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বাংলাদেশ। ঘোষণা করা হয় দুর্গাপূজার সময় ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রফতানি করা যাবে।

ইলিশ রফতানি অনুমতির প্রতিবাদে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এই নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রফতানি নীতি ২০২১ ২০২৪ অনুযায়ী ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রফতানি যোগ্য কোনো মাছ নয় । এই অবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রক ভারতে ইলিশ মাছ রফতানির অনুমতি দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছে। ভারতে ইলিশ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিতে রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহম্মদ মাহমুদুল হাসান এই নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়েছে, ইলিশ মাছ একটি সামুদ্রিক মাছ। এই ইলিশ মাছ বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমারসহ বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়। এই ইলিশ মাছ যখন সমুদ্র থেকে নদীতে বিশেষ করে বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে আসে, তখন এই ইলিশ মাছ অত্যন্ত সুস্বাদু হয়ে উঠে । এই কারণে সামুদ্রিক ইলিশের চেয়ে পদ্মার ইলিশ অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সুস্বাদু।

নোটিশে বলা হয়েছে, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিশাল ও বিস্তৃত সমুদ্রসীমা রয়েছে। ভারতের জলসীমায় ব্যাপকভাবে ইলিশ উৎপাদন হয়। এই বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে ভারতের ইলিশ মাছ আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু ভারত মূলত বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ইলিশ আমদানি করে থাকে। বাংলাদেশে ভারতীয় এজেন্টরা ও মাছ রপ্তানিকারকরা সারা বছর ধরে পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ মজুদ করে রাখে এবং বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে পদ্মা নদীর সব ইলিশ মাছ ভারতে রফতানি করে ও ক্ষেত্রবিশেষে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার করে। বাংলাদেশের পদ্মা নদীর সব ইলিশ মাছ ভারতে রফতানি ও পাচার হওয়ার কারণে বাংলাদেশের জনগণ বাজারে গিয়ে পদ্মার নদীর ইলিশ পায় না। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের জনগণকে সামুদ্রিক ইলিশ খেতে হয়, যা পদ্মার ইলিশের মতো সুস্বাদু নয়।

আইনি নোটিশে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে যে সীমিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যায়, তা দেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী যথেষ্ট নয়। এ অবস্থায় যদি পদ্মার সব ইলিশ ভারতে চলে যায় তাহলে বাংলাদেশের জনগণ এই পদ্মার ইলিশ খেতে পারবে না। এভাবে বাংলাদেশের জনগণকে পদ্মার ইলিশ থেকে বঞ্চিত করে ভারতের জনগণকে পদ্মার ইলিশ খাওয়ানো সরকারের জন্য সমীচীন নয়। এ কথা সত্য যে, বাংলাদেশ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র ভারত থেকে আমদানি করে থাকে কিন্তু ভারত সরকার কখনোই তার নিজের দেশের জনগণের চাহিদা না মিটিয়ে বাংলাদেশে কোনো পণ্য রফতানি করে না।

বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, আমাদের সেই কমিটমেন্টটা এখনো আগের মতোই আছে, আমরা বাংলাদেশের মানুষের জন্য ইলিশের প্রাপ্যতা যেন নিশ্চিত করতে পারি। তিনি বলেছেন রফতানি বন্ধের দায়িত্ব তো আমার না। আমি আহ্বান জানাতে পারি কিন্তু বন্ধ করতে পারি না। রফতানি বা আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বাণিজ্য মন্ত্রকের। ফরিদা আখতার সম্প্রতি বলেছিলেন আমরাও দুর্গোৎসব করি। দেশের মানুষ আগে ইলিশ খাবেন।