শতাব্দী প্রাচীন বট গাছ, না কেটে প্রতিস্থাপন করে নজির গড়লেন সাংবাদিকরা

শঙ্কর দাস, বালুরঘাট : হামেশাই খবরের শিরোনামে জঙ্গল কেটে উন্নয়ন যজ্ঞের কথা। একই সঙ্গে টিভি সংবাদপত্রে চোখে পড়ে গাছ ও কাঠ পাচারেরও ঘটনা। এসবের মাঝে…

শঙ্কর দাস, বালুরঘাট : হামেশাই খবরের শিরোনামে জঙ্গল কেটে উন্নয়ন যজ্ঞের কথা। একই সঙ্গে টিভি সংবাদপত্রে চোখে পড়ে গাছ ও কাঠ পাচারেরও ঘটনা। এসবের মাঝে নজরকাড়া উল্টো চিত্র ধরা পড়লো দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট। বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা কয়েক দশকের পুরাতন বট বৃক্ষ(Banyan Tree) না কেটে সেটিকে সরিয়ে অন্যত্র প্রতিস্থাপন করে নজির সৃষ্টি করলেন সাংবাদিক ও পরিবেশপ্রেমীরা। একাজে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সহযোগিতায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে বালুরঘাট পুরসভা ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাপ্রশাসন।

বালুরঘাটের প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলাপাড়ায় অবস্থিত দঃ দিনাজপুর জার্নালিস্টস ক্লাব প্রাঙ্গনের পুরাতন বট গাছটি সম্প্রতি বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল। যে পরিস্থিতিতে গাছটি কেটে ফেলা ছাড়া অন্যকোন উপায়ও ছিল না। কিন্তু দঃ দিনাজপুর জার্নালিস্টস ক্লাবের সদস্য সাংবাদিকরা ও পরিবেশপ্রেমী কয়েকজন উদ্যোগ নেন যে গাছটিকে অন্যত্র কোথাও স্থানান্তরিত করে প্রতিস্থাপন করবেন।

   

বিষয়টি জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা ও পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্রকে জানালে উভয়েই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। টানা চারদিনের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় অবশেষে গাছটিকে জার্নালিস্টস ক্লাব প্রাঙ্গন থেকে সমূল উঠিয়ে তিন কিলোমিটার দূরে ডাঙ্গা ফরেস্টে সফল ভাবে প্রতিস্থাপন করে দিয়েছেন। তিন তিনটি হাইড্রোলিক মেশিনের সাহায্যে গাছটিকে উপড়ে তোলা হয়। তারপর সেটিকে ট্রেলারে চাপিয়ে নানান ঝক্কি পেরিয়ে ফরেস্টে নিয়ে গিয়ে সেখানে মাটিতে পুঁতে দিতে সফল হয়েছেন।

প্রাচীন কোন গাছকে একস্থান থেকে সরিয়ে আরেক জায়গায় নিয়ে গিয়ে পুঁতে দেওয়ার এই কাজ উত্তরবঙ্গে প্রথম বলে দাবি পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের। জার্নালিস্টস ক্লাব পুরসভা ও প্রশাসনের এই উদ্যোগ সমাজের কাছে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিবে বলেও সকলে মনে করছেন। উন্নয়ন মূলক কোন কাজে কোথাও কোন গাছ বাঁধার সৃষ্টি হলে সেটিকে আর কেটে ফেলার দরকার হবে না। অন্যত্র প্রতিস্থাপন করে গাছটিকে নতুন জীবনদান করা যাবে।