রাজার মুকুট তাঁকে মানায় না। তিনি পার্শ্বচরিত্র হয়ে থাকতেই বুঝি বেশি পছন্দ করেন। তাই তো বাংলার হয়ে রঞ্জিতে সবথেকে বেশি রান করার পরেও তাঁকে রাজা বলা যায় না। তিনি সম্রাট নন, মহারাজাও নন, খুব বেশি হলে তিনি জায়গিরদার। তাই বাংলার বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মান আজকাল ‘জায়গিরদার’ অনুষ্টুপ মজুমদারকে (Anustup Majumdar) খুব একটা ভাবায় না। আজ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলার এই বর্ষীয়ান ক্রিকেট তারকা জানিয়েছেন বাংলা ক্রিকেটজগতে তিনি ‘সেভাবে’ কেউ নন, আর বাংলাকে রঞ্জি জিতিয়েই তিনি অবসরে যেতে চান।
গত কয়েক বছরে বাংলার জন্য নিজেকে পুরোপুরি নিংড়ে দিয়েছেন তিনি। দল যখনই বিপদে পড়েছে তখনই ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছেন রঞ্জিতে বাংলার এক মরশুমে সব থেকে বেশি রান করা তারকা। তবে গত কয়েকটা মরশুমে বঙ্গ ক্রিকেটে অনেক কিছু বদল ঘটেছে। এক সময়ের সতীর্থ এবং বাংলার অন্যতম সেরা ব্যাটার মনোজ তিওয়ারী অবসর নিয়েছেন ক্রিকেট থেকে। এছাড়াও কোচিং স্টাফ পাল্টেছে, এসেছে অনেক নতুন তারকারা। তবে নতুনদের মধ্যেও অতিমানবিক পারফরম্যান্স দেওয়ার প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলেন,” প্লিজ এভাবে বলবেন না। টিমের হয়ে সবাই পারফর্ম করে। আমি আলাদা কিছুই করি না। হ্যাঁ এটা ঠিক যে ওই পরিস্থিতিতে বারবার ব্যাটিং করার ফলে সেটা আমার কিছুটা সুবিধে হয়। জানি ওরকম সিচুয়েশনে কী করতে হবে। আলাদা কোনও চাপ অনুভব করি না।”
এদিন অবসর নিয়ে বাংলার বর্তমান কিংবদন্তি ব্যাটারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি আরও বলেন, ” টিমের সিনিয়র হিসেবে বাড়তি দায়িত্ব কিছুটা নিতেই হয়। সেটাই আপাতত নিচ্ছি। তবে বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করার আগে পর্যন্ত অবসর নিয়ে কিছু ভাবছিনা। দলকে জেতানোটাই এখন মূল লক্ষ্য। ” এদিন বাংলার হয়ে পূর্ব ম্যাচের স্মৃতিচারণাও করতে দেখা যায় অনুষ্টুপকে। আজ মনখারাপ করে তিনি বলছিলেন,”“দুটো ফাইনাল হেরেছি আমরা। তবে রাজকোটের হারটা বেশি কষ্ট দেয়। ওই ম্যাচটা জেতা উচিত ছিল আমাদের। মনে হয় আর কিছুক্ষণ ব্যাটিং করতে পারলে, আমরা জিতে যেতাম। নিজেকে এখনও ক্ষমা করতে পারিনি। আমরা এখন একটাই স্বপ্ন রয়েছে। বাংলার হয়ে রনজি জেতা। যদি বাংলাকে রনজি জেতাতে পারি, তাহলে মনে করব অন্তত কিছু একটা করতে পেরেছি।”
প্রসঙ্গত বেশ কিছুদিন আগে পিসেন ট্রফি খেলার জন্য কলকাতার কালীঘাট ক্লাবে সই করছেন বাংলার তারকা ব্যাটার। এছাড়াও এই ট্রফিতে অনুষ্টুপের্ (Anustup Majumdar) সাথে খেলবেন বাংলার আরও দুই তারকা ব্যাটার ঋদ্ধিমান সাহা ও মনোজ তিওয়ারি। এই প্রথমবার কোনো ক্লাবের হয়ে বাংলা ক্রিকেটের ব্রহ্মা-বিষ্ণু -মহেশ্বরকে। তবে তিনি বাংলার হয়ে রঞ্জি জিতবেন কি ব্যর্থ হবেন, তার উত্তর সময়ের গর্ভে। তবে তাঁর কথাগুলো আবার প্রমান করল আরেক ভারতীয় কিংবদন্তির সেই বিখ্যাত উক্তির সত্যতা,” মনপ্রাণ দিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে চেষ্টা করে যেতে হবে। কোথাও হয়তো ন্যায়বিচার অপেক্ষা করে রয়েছে।’