সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেল না কঙ্গনা অভিনীত ‘ইমার্জেন্সি’, স্থগিত মুক্তি

ক্রমবর্ধমান বিতর্কের মধ্যে, কঙ্গনা রানাউত অভিনীত ‘ইমার্জেন্সি’ (Emergency) ছবির মুক্তি স্থগিত রাখা হল। এই ছবি দিয়েই পরিচালনায় আত্মপ্রকাশ করার কথা ছিল অভিনেত্রী সংসদের। অভিনেত্রী দাবি…

ক্রমবর্ধমান বিতর্কের মধ্যে, কঙ্গনা রানাউত অভিনীত ‘ইমার্জেন্সি’ (Emergency) ছবির মুক্তি স্থগিত রাখা হল। এই ছবি দিয়েই পরিচালনায় আত্মপ্রকাশ করার কথা ছিল অভিনেত্রী সংসদের। অভিনেত্রী দাবি করেছেন যে ন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশনের সদস্যরা হুমকি পাওয়ার পরে ছবিটিকে ছাড়পত্র দিতে ‘অস্বীকার’ করেন তাঁরা। ছবিটির নতুন মুক্তির তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি।

এক্স প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে, কঙ্গনা, যিনি ‘ইমার্জেন্সি’ সিনেমাতে প্রাক্তন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন, শুক্রবার বলেছেন, “একটি গুজব রটেছে যে আমাদের ছবি, ‘ইমার্জেন্সি’কে , সেন্সর শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে এটা সত্য নয়। আসলে, আমাদের ছবিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল কিন্তু পরে সার্টিফিকেশন বন্ধ করা হয় কারণ অনেকে সেন্সর বোর্ডের সদস্যের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে।”

   

এই ভিডিওতে অভিনেত্রীকে আরও বলতে শোনা গিয়েছিল, “আমাদের ওপর চাপ আছে ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকাণ্ড না দেখাতে, ভিন্দ্রানওয়ালেকে না দেখাতে, পাঞ্জাবের দাঙ্গা না দেখাতে। আমি জানি না যে তাহলে কী দেখানোর বাকি থাকবে… এটা আমার জন্য অবিশ্বাস্য এবং দেশের এই অবস্থার জন্য আমি খুবই দুঃখিত।”

ইতিমধ্যে, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল সত্যপাল জৈন শনিবার পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টকে জানিয়েছেন যে সিবিএফসি শিখ সম্প্রদায় সহ সমস্ত সম্প্রদায়ের অনুভূতি বিবেচনা করবে। আদালত ছবিটির শংসাপত্রের বিরুদ্ধে মোহালির বাসিন্দাদের দায়ের করা আবেদনের শুনানি করছিল। সেন্সর বোর্ডের সূত্রে জানা যাচ্ছে যে ছবিতে ‘স্পশকাতর’ এবং ‘সংবেদনশীল’ বিষয় থাকার কারণেই মুক্তির ছাড়পত্র দিতে বেশি সময় লাগছে। তবে মুক্তির তারিখ চূড়ান্ত করার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন সেন্সর বোর্ড।

শিখ সম্প্রদায়ের নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল উদ্বেগ প্রকাশ করার পরে, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এ রেভান্থ রেড্ডিও সম্প্রতি রাজ্যে ‘ইমার্জেন্সি’ ছবির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে নিয়ে বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ছবি মুক্তির স্থগিত হওয়ারপর অভিনেত্রী বলেন, “আমি এই চলচ্চিত্রটি অনেক আত্মসম্মানের সঙ্গে তৈরি করেছি, যে কারণে সেন্সর বোর্ড কোনও খুঁত ধরতে পারবে না। তারা আমার শংসাপত্র আটকে দিয়েছে, কিন্তু আমি ছবিটির একটি আনকাট সংস্করণ প্রকাশ করতে বদ্ধপরিকর। দরকার হলে আদালতে যাব এবং একটি আনকাট সংস্করণ প্রকাশ করব কিন্তু আমি হঠাৎ করে দেখাতে পারব না যে ইন্দিরা গান্ধী তার বাড়িতে মারা গেছেন।”

কয়েক সপ্তাহ আগে ইমার্জেন্সির ট্রেলার মুক্তি পেলে বিতর্ক শুরু হয়। এটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তান আন্দোলনের নেতা জার্নাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালেকে চিত্রিত করা হয়েছে,যিনি একটি পৃথক শিখ রাজ্যের বিনিময়ে ইন্দিরার রাজনৈতিক দলের জন্য ভোট আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর প্রতিক্রিয়ায়, শিরোমণি আকালি দলের দিল্লি ইউনিট সিবিএফসিকে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিল, যেখানে শিখদের ভুলভাবে চিত্রিত হওয়ার কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করে ছবিটির মুক্তি বন্ধ করার অনুরোধ করা হয়েছিল। ট্রেলারটি অকাল তখত এবং শিরোমণি গুরুদ্বারা প্রবন্ধক কমিটি (এসজিপিসি) সহ শিখ সংগঠনগুলির থেকেও তীব্র সমালোচনা পেয়েছিল।

কঙ্গনা ছাড়াও অনুপম খের, শ্রেয়াস তালপাড়ে, মহিমা চৌধুরী, মিলিন্দ সোমান এবং সতীশ কৌশিক অভিনীত ছবিটি মূলত ২০২৩ সালের নভেম্বরে মুক্তির জন্য নির্ধারিত ছিল। তবে পরে এটি ২০২৪ সালের জুনে এবং পরবর্তীতে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।