আরজি কর কাণ্ডের পর রাজ্যের শাসক দল এখন বেশ সঙ্কটময় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্রমশ বিরোধীরা তৃণমূলকে(TMC) কটাক্ষ করছে তো অন্যদিকে আবার তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা বিভিন্ন সময়ে এই ঘটনা নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বিপাকে পড়ছেন। এবার সেই দলে নাম লেখালেন তৃণমূলের সাংসদ তথা চিকিৎসক কাকলি ঘোষ দস্তিদার। আরজি কর নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করার পর নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন তিনি। এমন কী মন্তব্য করেছিলেন তিনি?
গুরুতর অসুস্থ আরজি করের ফরেন্সিক শিক্ষক দেবাশিস সোম, ভর্তি আইসিইউতে
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমের বিতর্কসভা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ। সেখানে আরজি কর কান্ড নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, “কেউ রাতে কাজ করতে করতে বিছানা নেই বলে মাটিতে শুয়ে পড়ছেন এটা ডাক্তাররা ছাড়া আর কেউ করে না। সেটাও আমি পাশ করার ২৫ বছর পরে। ছাত্রীদের কোলে বসিয়ে পাস করানোর একটা চল শুরু হয়েছিল। যাঁর আমি তীব্র নিন্দা করি, ঘৃণা করি। আমার ছেলেরা নিন্দা করেছিল বলে তাঁদের কম নম্বর দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা আজকে প্রথিতযশা চিকিৎসক।
কিন্তু সেই কোলে বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার চলটা যে এখানে এসে দাঁড়াবে, উৎকোচ নিয়ে পাস করানো হবে বা কেউ মুখ খোলার সাহস দেখালে যে কারও থিসিস আটকে রাখা হবে। এটা আমি ভাবতে পারিনি।” প্রসঙ্গত, তিনি নিজেও পড়াশোনা করেছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে। এরপরেই তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ তুলে সরব হয়ে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলেন ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটি। এরপরেই ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটি তাঁদের চিঠিতে আইএমএ থেকে কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে বহিষ্কার করার দাবি জানিয়ে তাদের অভিযোগ, “কাকলি ঘোষ দস্তিদারের মন্তব্য রুচিবিরুদ্ধ, অসম্মানজনক ও নিন্দনীয়।
‘ইজরায়েল যু্দ্ধই কাঁটা’, ত্যাগীর পদত্যাগে বিরোধ বাড়ছে মোদী-নীতীশের
এই মন্তব্য মহিলা চিকিৎসকদের যোগ্যতা, কঠিন পরিশ্রম ও তাঁদের পেশার দায়বদ্ধতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। চিকিৎসকদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত কাকলির।” অন্যদিকে ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটির রাজ্য শাখার সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী বলেছেন, “চিকিৎসককূলকে সৌজন্য বজায় রাখতে হবে। উনি যেটা বলেছেন সেটা সৌজন্য বিরোধী। পরীক্ষায় পাস করার জন্য কোনও ছাত্রী শিক্ষকের কোলে বসবে এই ধরনের কথা না বললেই ভাল হত। এটা অপমান করা এটাই আমাদের মনে হয়েছে।” শুধু তাই নয়, তৃণমূল সাংসদের মন্তব্যকে ঘিরে সমালোচনাও শুরু হয় বিভিন্ন মহলে। কাকলির ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সরব হয় একাধিক চিকিৎসক সংগঠন।
শিবাজি মূর্তি কাণ্ডে উত্তাল মহারাষ্ট্র, শিন্ডেকে ‘চপ্পল মেরে’ তাড়াতে পথে উদ্বব-শরদ
সমালোচনা করেন বিজেপি আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। সেইসঙ্গে সরব হয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফেডারেশনও। তৃণমূলের কাউকেও এই বিষয়ে সেভাবে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। এরপরেই আরজি করের চিকিৎসকদের নিয়ে নিজের বলা মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তৃণমূলের সাংসদ বলেছেন, “আমি নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইছি। যদি ওই মন্তব্যে কারও আঘাত লেগে থাকে, তাহলে তার জন্য আমি দুঃখিত। আমি আমার মন্তব্য প্রত্যাহার করছি। আমি সব সময়েই মেয়েদের সুরক্ষা এবং অধিকার রক্ষার পক্ষেই কথা বলি।”