ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরামে প্রাকৃতিক দুর্যোগ-অতিবৃষ্টিতে গোমতীসহ বিভন্ন নদীর জলে সীমান্তের দুদিকেই ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। নদীগুলোর নিম্নাঞ্চল (ভাটি অঞ্চল) বাংলাদেশের (Bangladesh) দিকে পড়ছে। এরফলে সিলেট, চট্টগ্রাম বিভাগের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যা কবলিত। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জানাচ্ছে, বৃষ্টির কারণে দেশের একমাত্র কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদের (Kaptai lake) জল বিপদসীমার কাছাকাছি। বাঁধটি ফেটে যাওয়ার আশঙ্কায় সেখান থেকে জল ছাড়া শুরু হল।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম ও বাংলাদেশের একমাত্র কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদ। চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙামাটিতে এই কাপ্তাই বাঁধটি অবস্থিত। কর্ণফুলি নদীর উপর নির্মিত কাপ্তাই হ্রদের কৃত্রিম জলাধারের ধারণ ক্ষমতা ৬,৪৭,৭০,০০,০০০ ঘনমিটার। সংযুক্ত পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালে এটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ১৯৭১ সাল থেকে এই হ্রদটি বাংলাদেশের সম্পত্তি। অপরূপা কাপ্তাই হ্রদ বাংলাদেশের বৃহত্তম বাঁধ ও একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
কাপ্তাই হ্রদে জল-বিস্ফোরণের আশঙ্কা
গত কয়েকদিনের দুর্যোগে কাপ্তাই হ্রদের জলধারণ ক্ষমতা বিপদ সীমার কাছাকাছি চলে এসেছে।পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। রবিবার সকালে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞান শিক্ষিকাদের বোরখা নির্দেশ, তসলিমা লিখলেন ‘জিহাদিস্তান’ বাংলাদেশ
কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ জাহের জানিয়েছেন,.বাঁধের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে উঠিয়ে জল ছাড়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক জল নিষ্কাশন হবে কর্ণফুলী নদীতে। জলস্তর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে স্প্রীলওয়ের গেট (জলকপাট) খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।
গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান (ভারতের অংশ) থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে জলস্তর বেড়ে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা বা বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছায়। ফলে হ্রদ সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জল ছাড়া না হলে বাঁধ ভাঙার সম্ভাবনা থাকছে।
কাপ্তাই হ্রদের জল বৃদ্ধি পাওয়াতে দেশের একমাত্র জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রে দৈনিক পাঁচটি ইউনিটে সর্বোচ্চ ২১৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।