পৈশাচিক কর্ম করে ‘ফুরফুরে মেজাজে’ নাক ডেকে ঘুম সঞ্জয়ের? বন্ধুর বিস্ফোরক দাবী!

আর জি করের (R G Kar)  নৃশংস ঘটনার দিন রাত্রে কী কী করেছিল মূল অভিযুক্ত? সেই নিয়ে একাধিক তথ্য এবং তত্ত্ব উঠে এসেছে 9R G…

RG KAR rape case main accused Sanjay Rai's poligraph test report

আর জি করের (R G Kar)  নৃশংস ঘটনার দিন রাত্রে কী কী করেছিল মূল অভিযুক্ত? সেই নিয়ে একাধিক তথ্য এবং তত্ত্ব উঠে এসেছে 9R G Kar)। কিন্তু এবার ঘটনার দিন (R G Kar) অভিযুক্ত সঞ্জয়ের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ সময় কাটানো তার সহকর্মীর মুখে আরও বিস্ফোরক তথ্য পাওয়া গেল। যা শুনে অভিযুক্ত সঞ্জয়ের উপরে সন্দেহ আরও দৃঢ় হবে সিবিআই আধিকারিকদের, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।

সূত্র মারফত খবর যে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয়ে রাইয়ের পলিগ্রাফ টেস্টের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। শুধু সঞ্জয় নয়, সঙ্গে আরও ৬ জনের পলিগ্রাফ টেস্টের খবর পাওয়া যাচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছেন একদিকে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ, ঘটনার দিন নির্যাতিতার সঙ্গে ডিউটিতে থাকার চারজন ডাক্তার এবং সঞ্জয়ের এই বন্ধু তথা সহকর্মী। কলকাতা পুলিশের এই সিভিক ভলান্টিয়ার এবার একাধিক চমকে দেওয়ার মতো তথ্য জানালেন সাংবাদিকদের।

   

সঞ্জয়ের বন্ধু তথা কলকাতা পুলিশের আরেক সিভিক ভলেন্টিয়ারের মতে ঘটনার পরের দিন রীতিমত হাসিখুশি দেখাচ্ছিল সঞ্জয়কে। কিন্তু অদ্ভুত বিষয়, সে কোনওভাবেই আর জি কর হসপিটালে যেতে চাইছিল না। সঞ্জয়ের এই বন্ধুর মতে বিভিন্নভাবে যাচ্ছি-যাচ্ছি করেও যেন সে আর জি কর চত্বর এড়িয়ে চলার চেষ্টাই করছিল। এমনকি এত বড় ঘটনার কথা শুনেও সেই অর্থে কোন হেলদোল দেখায়নি সে। যা কার্যত সঞ্জয়কে প্রথম গ্রেফতার করা তদন্তকারীদের বক্তব্যকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্কুলের প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য, কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ

অপরদিকে ঘটনার দিন রাত্রে বেলায় তাদের গতিবিধি নিয়ে একাধিক বক্তব্য রেখেছেন সঞ্জয়ের এই বন্ধু তথা সহকর্মী। সেখানে রাত্রেবেলা উত্তর কলকাতার যৌনপল্লীতে যাওয়ার কথা যেরকম রয়েছে, সেরকমই রয়েছে একসাথে বসে মদ্যপানের স্বীকারোক্তিও। কিন্তু রাত তিনটের সময় আর জি কর চত্বরে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন সঞ্জয়ের বন্ধু। যদিও সঞ্জয়ের এই বন্ধুর দাবি যে তিনি কিন্তু গেট থেকেই অ্যাপ ক্যাব বুক করে তাদের ব্যারাকে ফিরে গিয়েছিলেন।

ঘটনার দিন সঞ্জয় তার এই সহকর্মীর এক আত্মীয়কে ভর্তি করা এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যাপারে নিজের দায়িত্ব নিয়ে একাধিক কাজ করেছিলেন আর জি করে। রীতিমতন সেদিন সঞ্জয় অভিভাবকের ভূমিকাতেই অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সঞ্জয়ের বন্ধুর মতে তাদের আত্মীয়কে ভর্তি করানো থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রক্রিয়া সঞ্জয় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ঠিকঠাক মতো হচ্ছে কিনা দেখাশোনা করেছে। কিন্তু রাত তিনটের সময় কাকে দেখবার জন্য সঞ্জয় হাসপাতালে ঢুকেছিলেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে সঞ্জয়ের বন্ধুর দাবি যে একই প্রশ্ন করা সত্ত্বেও সেদিন রাত্রে কোন উত্তর তাকে দেয়নি সঞ্জয়। এদিকে ভাইরাল হওয়া সিসিটিভি ফুটেছে সঞ্জয়ের হেলমেট হাতে ওই সেমিনার হলে ঢোকার মুহূর্তের ছবি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।

ফলে স্বাভাবিকভাবে এই মুহূর্তে একটাই প্রশ্ন তদন্তকারী থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞদের মনে ঘোরাফেরা করছে। যদি সঞ্জয়ের বন্ধু সব সত্যি কথাই বলেন, তাহলে সেক্ষেত্রে দুটো প্রশ্ন সামনে চলে আসছে। প্রথমত আগের দিন যে রোগীরকে নিয়ে এত দৌড়ঝাপ করল সঞ্জয়, পরের দিন তার সম্পর্কে কেন সে খোঁজ খবর নিল না? অন্যদিকে আরও একটা প্রশ্ন উঁকি মারছে তদন্তকারীদের মনে। আরজিকর কার্যত সঞ্জয়ের অবাধ বিচরণভূমি। সে কলকাতা পুলিশের একজন সিভিক ভলান্টিয়ারও । ফলে আর জি করে এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে জানা সত্ত্বেও কেন সেখানে যেতে চাইছিল না সে? কেন নানা অছিলায় পরের দিন আরজিকর যাওয়া এড়াতে চেয়েছে সঞ্জয়?

সিপিএমের ইস্তেহারে ‘ফাঁসি’ ইস্যুতে বামেদের কটাক্ষ কুনালের

সঞ্জয়ের বন্ধুর দাবি, পরের দিন ব্যারাকে বেলা দশটা অব্দি নাক ডেকে ঘুমোতে দেখা গিয়েছে সঞ্জয়কে। তাকে ঘুম থেকে তুলে খবরটা দেওয়ার পরেও সে কার্যত কোনওরকম আগ্রহই দেখায়নি। এমনকি হাসপাতলে যাওয়ার প্রশ্ন তুলতেও সে এড়িয়ে গেছে বলেই দাবি সঞ্জয়ের বন্ধুর। অথচ সে ছিল যথেষ্ট খোশ মেজাজেই।

সূত্র মারফত খবর সাইকোমেট্রি টেস্টের পরে সঞ্জয়ের মানসিক অবস্থা নিয়ে রীতিমত চমকে দেওয়ার মতো তথ্য মিলেছে। যৌনতার সংক্রান্ত বিষয়ে আর ৫ জন সাধারণ মানুষের মতো তার মানসিকতা যে মেলে না। সেই বিষয়ে নাকি একেবারে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে বলেই দাবি একাংশের। সে ক্ষেত্রে কী তাহলে সঞ্জয়ের এই বন্ধু তথা সহকর্মীর দাবিগুলো প্রত্যেকটাই ঠিক? সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

আর তাই আপাতত সঞ্জয়ের পাশাপাশি সঞ্জয়ের এই বন্ধু তথা কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলেন্টিয়ার্সকেও পলিগ্রাফিক টেস্টের আওতায় রাখছেন তদন্তকারীরা। বিশেষজ্ঞ মহলের মতি তদন্তে এখন একটাই প্রশ্ন সবার আগে আসছে। এক নাকি একাধিক? অর্থাৎ শুধু সঞ্জয় নাকি তার পেছনে রয়েছে আরও অন্য কেউ? আপাতত তাই জাস্টিসের জন্য পলিগ্রাফেই ভরসা রাখছেন সিবিআইএর তদন্তকারী অফিসারেরা।