মঙ্গলেই নবান্ন অভিযান, রাজ্যের আবেদনে হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাইকোর্ট

মঙ্গলবার শান্তিপূর্ণ অভিযানের ডাক দিয়েছে ছাত্র সমাজ। উদ্বিগ্ন মমতা সরকার। অভিযান বন্ধে আদালতে গিয়েছিল নবান্ন। তবে তাতে মান্যতা দিল না কলকাতা হাইকোর্ট। উল্টে, বিচারপতি হরিশ…

Calcutta High Court did not stop the Nabanna Abhijan on August 27 despite the Mamata governments plea

মঙ্গলবার শান্তিপূর্ণ অভিযানের ডাক দিয়েছে ছাত্র সমাজ। উদ্বিগ্ন মমতা সরকার। অভিযান বন্ধে আদালতে গিয়েছিল নবান্ন। তবে তাতে মান্যতা দিল না কলকাতা হাইকোর্ট। উল্টে, বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে সম্মতি দিয়েছেন। যদিও আগেই ছাত্র সমাজের মিছিলে অনুমতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। জানিয়েছিলেন, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে কোনওভাবেই আটকানো যাবে না বা প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। যতক্ষণ তার প্রয়োজন না পড়ছে, যতক্ষণ প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ, ততক্ষণ কোনও বাধা বা আইনি পদক্ষেপ করতে পারবে না রাজ্য প্রশাসন।

শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডনের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে ছিল ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযান রোধ সংক্রান্ত মামলার শুনানি। দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শেষে নবান্ন অভিযান নিয়ে রাজ্য সরকারের করা মামলায় হস্তক্ষেপ করেনি কলকাতা হাইকোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হল, সুপ্রিমকোর্টের গাইডলাইন মেনে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করা যেতে পারে।

   

২৭ অগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ছাত্র সমাজ। সরাসরি কোনও রাজনৈতিক ব্যানারে এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়নি। শুধুমাত্র ছাত্র সমাজের নাম দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চলছে। এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের কোনও অনুমতি না নিয়ে কী করে অভিযানের ডাক দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিল রাজ্য।

প্রসঙ্গত, ২৭ তারিখ যে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে তাতে কোনও রুট বলা হয়নি। অর্থাৎ শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল আসতে পারে। পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্বেগ সেটাই। কারণ, গত ১৪ তারিখ রাতে এমনই হয়েছিল। শহর জুড়ে প্রতিটি এলাকাতেই রাস্তার মোড়ে বড় বড় জমায়েত হয়েছিল। পরে এক সাংবাদিক বৈঠকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও জানিয়েছিলেন, এই সব জমায়েত নেতৃত্ববিহীন ছিল। ফলে কোথায় কত লোকের জমায়েত হতে পারে তা আন্দাজ করা মুশকিল ছিল।

নবান্ন অভিয়ানের নামে শান্তিপূর্ণ মিছিল বলে যা শুরু হবে, কোনও একটা উস্কানিতে তা অশান্ত হয়ে উঠতে পারে বলে দুঃশ্চিন্তায় রাজ্য। সেই কারণে এ ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য। এমনকী বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানির মাঝেও এই প্রসঙ্গের অবতারণা করে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল বিচারপতিদের উদ্দেশে বলেন, ‘এই ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২৭ তারিখ একটা প্রতিবাদ মিছিল রয়েছে। যদি কোনও প্রতিবাদ মিছিল হয়, তাহলে রাজ্য সরকারকে যেন বলা হয় কোন রুটে এই মিছিল হবে। একটা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর থাকতে হবে।’

কপিস সিব্বল আরও বলেন, “ওরা পতাকা নিয়ে যায়, কিন্তু পতাকা খুলে নিলেই তো সেটা লাঠি হয়ে গেল। আমাদের কাছে ছবি আছে। তাই আদালতের কাছে আর্জি যে, রাজ্য সরকারের পেশ করা স্ট্যাটাস রিপোর্ট দেখা হোক। এবং একটা নির্দেশ দিয়ে বলা হোক যেন এসওপি অনুসরণ করা হয়।”

তারই প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে কোনওভাবেই আটকানো যাবে না। শুক্রবার শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশই বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্ট।