ডম্বুর বাঁধ বিতর্ক, বাংলাদেশের কাছে কোটি কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বাকি, জানাল ত্রিপুরা সরকার

বন্যায় ভেসে উঠল বিস্ফোরক তথ্য। বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা সরকারের দাবি বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাওনা বিপুল পরিমান বিদ্যুৎ বিল। ত্রিপুরা থেকে পড়শি দেশে পাঠানো বিলের টাকা…

বন্যায় ভেসে উঠল বিস্ফোরক তথ্য। বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা সরকারের দাবি বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাওনা বিপুল পরিমান বিদ্যুৎ বিল। ত্রিপুরা থেকে পড়শি দেশে পাঠানো বিলের টাকা বকেয়া থাকলেও নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। কোটি কোটি টাকা বাকি রেখেছে বাংলাদেশ সরকার।

উল্লেখ্য বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রক্তাক্ত ছাত্র-গণবিক্ষোভের ধাক্কায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা। টানা চার বার দেশটিতে সরকার গড়েছিলেন তিনি। গত ৫ আগস্ট গণবিক্ষোভের মুখে দেশত্যাগী হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে সরাসরি নাম না করলেও ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রীর ইঙ্গিত হাসিনার জমানা থেকেই বাংলাদেশে সরবরাহ করা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া।

   

হাসিনা জমানা পতনের পর বাংলাদেশে চলছে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যার কারণ প্রতিবেশি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডম্বুর বাঁধের গেট বিনা নোটিশে খুলে দেওয়া। ভারত অমানবিক আচরণ করেছে বলে বাংলাদেশের অভিযোগ।

ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ বিবিসিকে জানিয়েছেন, “আমরা যদি অমানবিক হতাম, তাহলে অনেক আগেই সেটা হতে পারতাম বিদ্যুৎ দেওয়া বন্ধ করে দিয়ে। কারণ বিদ্যুৎ বাবদ প্রায় ১৮০ কোটি ভারতীয় টাকা তাদের কাছে আমাদের বকেয়া আছে। তাও নিয়মিত ৫০-৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা সরবরাহ করে যাচ্ছি। অথচ আমাদের নিজেদের রাজ্যের বহু জায়গায় বিদ্যুৎ নেই এখন।”

গোমতী জেলার ডম্বুর বাঁধের জলধারণ ক্ষমতা নিয়ে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে দাবি করা হয়েছে আমরা ডম্বুরের গেট খুলে দিয়েছি। সেটা সঠিক তথ্য নয়। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে যদি প্রতিনিধিরা ত্রিপুরায় আসেন আমি নিজে গাড়ি করে তাদের নিয়ে যাব ডম্বুর দেখাতে। তারা নিজেরা দেখতে পারেন যে আমরা নিজের থেকে গেট খুলে দিতে পারি কি না! সেটা সম্ভব কি না!

বৃহস্পতিবার ডম্বুর বাঁধ বিতর্কের আবহে বিদেশমন্ত্রক জানায় ওই জলাধারের গেট খোলা হয়নি। এরপর ভারতের রাষ্ট্রদূত (হা়ইকমিশনার) প্রণয় ভার্মা জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে ভারতের তরফে জানানো হয়, ডম্বুর বাঁধ ইচ্ছাকৃত নয়, স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে গেছে।

গত কয়েকদিনের অতি বৃষ্টির কারণে ত্রিপুরার গোমতী জেলা দিয়ে বাংলাদেশের দিকে বয়ে যাওয়া গোমতী নদীর জলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। ভারত ও বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। গোমতী, হাওড়াসহ ত্রিপুরার নদীগুলো বিপদসীমা পার করেছে। রাজধানী আগরতলা, গোমতী জেলাসহ রাজ্যের সব জেলাতেই দুর্যোগের কারণে জারি হয়েছে সতর্কতা।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা হেলিকপ্টারে শুক্রবার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। শাসকদল বিজেপির দাবি, রাজ্য সরকার বন্যা মোকাবিলায় যথাসম্ভব কাজ করছে। বিরোধী দল সিপিআইএমের দাবি, বন্যা মোকবিলায় রাজ্য সরকারের দেখা নেই। বিরোধী দলনেতা জীতেন্দ্র চৌধুরী জানান, দলীয় ছাত্র-যুব সংগঠনের সদস্যরাসহ বিভিন্ন বাম সংগঠন নেমেছে ত্রাণ বণ্টনে।