ভারতের বাঁধ ইচ্ছাকৃত নয় ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে’ খুলেছে, ইউনূসকে জানালেন রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা

প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অতি বৃষ্টির কারণে ত্রিপুরা থেকে ধেয়ে যাওয়া গোমতীসহ বিভিন্ন নদীর বন্যার জলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অংশে বন্যা। দুই দেশের লাখ লাখ মানুষ বন্যার্ত।…

প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অতি বৃষ্টির কারণে ত্রিপুরা থেকে ধেয়ে যাওয়া গোমতীসহ বিভিন্ন নদীর বন্যার জলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অংশে বন্যা। দুই দেশের লাখ লাখ মানুষ বন্যার্ত। বাংলাদেশের (Bangladesh) তরফে অভিযোগ করা হয় ত্রিপুরায় অবস্থিত ডম্বুর জলাধারের গেট কোনও আগাম নোটিশ ছাড়াই ভারত সরকার খুলে দেয়। এর জেরে তীব্র বিতর্ক।

বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম দাবি করেন, আগাম সতর্কতা ও প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ না দিয়েই বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে। ভারত অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে অসহযোগিতা করছে।

   

ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসের (ভারতীয় হাইকমিশন) সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভকারীরা ভারতকে হুঁশিয়ারি দেন। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাকে ‘সুযোগ’ করে দিতে ভারত আগাম সতর্কতা ছাড়া বাঁধ খুলে দেয়। বন্যা বিতর্কে তড়িঘড়ি ভারতের বিদেশমন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানায় এমন কিছু করা হয়নি।

বিতর্কের এই আবহে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন ভারতের রাষ্ট্রদূত (হাইকমিশনার) প্রণয় ভার্মা। বৈঠক শেষে জানান, ভারতের ডম্বুর বাঁধ ইচ্ছাকৃত নয়, স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে গেছে।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ‘বৈঠকে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার কথা বলেছেন ভারতীয় হাইকমিশনার। তিনি জানান, ত্রিপুরার বন্যাও অনাকাঙ্ক্ষিত, এতে দুদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

এই বৈঠকে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি ও সংলগ্ন রাজ্য ত্রিপুরার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার। সুসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে পানিবণ্টনে (জলবন্টন) দু’দেশের সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।’ তিনি জানান, নদী বিষয়ে দু’দেশের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি করার বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারকে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বাঁধ খোলা বিতর্কে কী বলছে ত্রিপুরা সরকার?
বিবিসি জানাচ্ছে, ত্রিপুরার গোমতী জেলাতেই গোমতী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ডম্বুর স্লুইস গেট খুলে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ব্যাপক বন্যা হয়েছে বলে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। ত্রিপুরার বিদ্যুৎ দফতরের অধীন ওই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। এই দফতরের মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেছেন, “যে প্রচারটা করা হচ্ছে ডম্বুর গেট খুলে দেওয়া নিয়ে, সেটা অপপ্রচার ছাড়া কিছু না।”

ত্রিপুরার বিদ্যুত মন্ত্রী জানান, এই জলাধারটির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৯৪ মিটার। জলস্তর এর বেশি উঠলেই নিজের থেকেই জল গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে। জলস্তর আবার নিচে নেমে গেলে নিজের থেকেই গেট বন্ধ হয়ে যাবে। জলস্তর সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতার বেশি হয়ে যেতেই জলাধারের দুটি গেট দিয়ে জল বেরোচ্ছে।