রাজ্যের নারী সুরক্ষায় জোর দিতে ‘রাত্তিরের সাথী’ লঞ্চ করল নবান্ন

একদিকে যখন আরজি কর-এর ঘটনা নিয়ে সমগ্র বাংলা তথা দেশ উত্তাল হয়ে রয়েছে সেইসময় বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। হাসপাতালে হাসপাতালে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার জন্য…

একদিকে যখন আরজি কর-এর ঘটনা নিয়ে সমগ্র বাংলা তথা দেশ উত্তাল হয়ে রয়েছে সেইসময় বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। হাসপাতালে হাসপাতালে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার জন্য বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল সরকার। এই বিষয়ে আজ শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বড় তথ্য দিয়েছেন। মহিলা কর্মীদের রাতে যাতে ডিউটি করতে অসুবিধা না হয় তার জন্য এবার একটি বিশেষ প্রকল্প আনল সরকার। যার নাম ‘রাত্তিরের সাথী’ (Rattirer Sathi)।

 আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গত ৯ আগস্ট মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয়ে ওঠে বাংলা তথা সমগ্র দেশ। জায়গায় জায়গায় চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ন্যায়ের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। ইতিমধ্যে এই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে সিবিআইকে। সেই রাতে ওই মহিলা চিকিৎসকের সঙ্গে কারা কারা ছিল এবং আরও কী কী হয়েছে তা খুঁজে বের করতে তৎপর সিবিআই। তবে এসবের মাঝেই রাজ্যের সব মহিলা কর্মীদের জন্য ‘রাত্তিরের সাথী’ নামের একটি কর্মসূচি আনল সরকার। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। 

   

কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় চিকিৎসকদের ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাতের শিফটে কাজ করা মহিলাদের জন্য এক বিশেষ কর্মসূচি চালু করতে চলেছে। সরকারি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ, হোস্টেল এবং অন্যান্য জায়গায় নাইট শিফটে মহিলাদের নিরাপদ কাজের পরিবেশ তৈরি করাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য। আনা হয়েছে ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প ।

সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর ‘রাত্তিরের সাথী’ কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এছাড়া আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।  

১) মহিলাদের জন্য টয়লেটসহ আলাদা নির্ধারিত বিশ্রামাগার থাকতে হবে। 

২) রাত্তিরের সাথী বাঁ মহিলা স্বেচ্ছাসেবকরা রাতে ডিউটিতে থাকবেন। 

৩) সিসিটিভি এবং এর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সম্পূর্ণ কভারেজ সহ মহিলাদের জন্য নিরাপদ অঞ্চলগুলি চিহ্নিত এবং তৈরি করা হবে। 

৪) অ্যালার্ম ডিভাইসসহ একটি বিশেষ মোবাইল ফোন অ্যাপ তৈরি করা হবে যা সমস্ত কর্মজীবী মহিলাদের বাধ্যতামূলকভাবে ডাউনলোড করতে হবে। এটি স্থানীয় থানা / পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সাথে সংযুক্ত করা হবে। 

৫) যে কোনও আতঙ্ক / জরুরি পরিস্থিতিতে হেল্পলাইন নং 100/112 ব্যবহার করতে হবে। 

৬) মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, জেলা হাসপাতালে সিকিউরিটি চেক এবং ব্রেথালাইজার টেস্ট করা হবে।

এছাড়াও অতিরিক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে যেগুলি হল..

 

১) সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, মহিলা হোস্টেল এবং এই জাতীয় অন্যান্য স্থানে নৈশ পুলিশের টহল চলবে।

 

২) হাসপাতাল ইত্যাদির সব ফ্লোরে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

 

৩) মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সমস্ত সকলের আইডেন্টি কার্ড থাকতে হবে। 

 

৪) সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং জেলা হাসপাতালে সার্বিক নিরাপত্তা তদারকির জন্য পুলিশ নিরাপত্তা আধিকারিক নিয়োগ করবে।

 

৫) মহিলা চিকিৎসকসহ সকলের কাজের সময়ে ১২ ঘণ্টার বেশি রাখা চলবে না।

 

৬) মহিলাদের জন্য রাত্রিকালীন ডিউটি যতদূর সম্ভব না দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

 

৭) সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জেলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে মহিলা ও পুরুষ উভয়কেই রাখতে হবে। 

 

৮) বিশাখা কমিটি তৈরী করতে হবে।