বলিউড অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানা (Ayushmann Khurrana) কলকাতার আর্জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। বুধবার রাতে অভিনেতা তাঁর ইনস্টাগ্রামে তাঁর প্রতিক্রিয়া তাঁর লেখা একটি কবিতার মাধ্যমে করেছেন। তাঁর পোস্ট করা ভিডিওতে ‘কাশ মে ভি লডকা হোতি অর্থাৎ ‘আমিও যদি ছেলে হতাম’ কবিতাটি তাকে আবৃত্তি করতে দেখা যায়। কবিতার মাধ্যমে আয়ুষ্মান আরজি করের মৃত মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
কবিতার শুরুতে নারীর সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেতা। অভিনেতা তাঁর কবিতায় কবিতায় সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন যে ছেলেরা যদি সারা রাত বাড়ির বাইরে নির্ধিধায় ঘুরে বেড়াতে পারেন এবং সুরক্ষিত ভাবে বাড়ি ফিরতে পারেন, মেয়েরা নয় কেন? অভিনেতা আরও প্রশ্ন তুলেছেন যে চতুর্দিকে মেয়েদের শিক্ষার জন্য নানান প্রকল্প এনেছে দেশের ও বিভিন্ন রাজ্যের সরকার। এর পর যখন সেই প্রকল্পের সাহায্যে লেখে পড়া করে তাঁদের মধ্যে কেউ চিকিৎসক হয়ে উঠছেন সেই চিকিৎসকদের সুরক্ষা নেই কেন?
তাঁর কবিতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশে আয়ুষ্মান ৩৬ ঘন্টা ধরে চলা ঘটনাক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ” যে পুরুষদের বর্বরতার কারণ এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, ওই পুরুষদের মধ্যে একটু হলেও নারীদের স্নিগ্ধতা থাকতো…? ” এর পরে সিসিটিভি এবং অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে কবিতায়। অভিনেতা লিখেছেন, “বলা হয়েছে সেখানে পর্যাপ্ত সিটিটিভি ছিল না, থাকলেও কোনও সুবিধে হতো না, কিন্তু যে কর্মকর্তার তাঁর ওপর নজর রাখার কথা ছিল তাঁর নজর যদি পবিত্র হতো…?”
View this post on Instagram
কবিতাটা আয়ুষ্মান শেষ করেছে এই বলে, “যদি আমি পুরুষ হতাম, আজ আমি হয়তো বেঁচে থাকতাম। ” পুরো কবিতাটি পড়লে মনে হয়ে যেন মৃতা চিকিৎসকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লেখা হয়েছে।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী এক ডাক্তারের নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা দেশকে নাড়া দিয়েছে। শুক্রবার হাসপাতালের সেমিনার হলের ভিতর থেকে চেস্ট মেডিসিন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পিজিটি ছাত্রী চিকিৎসকের অর্ধ-নগ্ন দেহ পাওয়া যায়। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে ডিউটিতে ছিলেন এবং তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে তাঁকে হত্যার আগে যৌন নির্যাতন করা হয়। মৃতার বাবা অভিযোগ করেছেন যে তাঁকে হাসপাতালের ভিতরে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে হস্তান্তর করা হয় । মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে জুনিয়র ডাক্তার, প্রশিক্ষণার্থী এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ধর্মঘট ও বিক্ষোভ দেখান, যার ফলে স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা প্রভাবিত হয়। বুধবার আউটডোর পরিষেবা বন্ধের ডাক দেয় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতলের চিকিৎসকরা।