ট্রেনের চাকা আদৌ পাল্টাতে হয়? একটানা চলে কত বছর?

লোকাল হোক বা দূরপাল্লা- লক্ষ লক্ষ যাত্রী রোজ ট্রেনে চড়েন। যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে সতর্ক ভারতীয় রেল। কোনও অঘটন যাতে না ঘটে যায়, তার জন্য রেল…

Is it necessary to change the wheels on the train How many years does it last, ট্রেনের চাকা আদৌ পাল্টাতে হয়? একটানা চলে কত বছর?

লোকাল হোক বা দূরপাল্লা- লক্ষ লক্ষ যাত্রী রোজ ট্রেনে চড়েন। যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে সতর্ক ভারতীয় রেল। কোনও অঘটন যাতে না ঘটে যায়, তার জন্য রেল নিরাপত্তার দিকে জোর দেয়। সুরক্ষার স্বার্থে প্রতিনিয়ত পদক্ষেপ করা হয়, নিয়মিত চলে নজরদারি। আপনি যে ট্রেনে চেপে প্রতিদিন যাতায়াত করেন, জানেন তার চাকা কী দিয়ে তৈরি? ট্রেনের চাকা কি কখনও বদলানো হয়?

চার চাকা হোক বা দু’চাকা, চাকা নষ্ট হয়ে গেলে বা ফেটে গেলে সাধারণত বদল করাই দস্তুর। কিন্তু ট্রেনে তো চাকা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাহলে কী হয়?

   

কী দিয়ে তৈরি ট্রেনের চাকা?

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনের বিভিন্ন ধরণের চাকা থাকে। সেগুলির ওজন ২৩০ কেজি থেকে ৬৮০ কেজির মধ্যে হয়ে থাকে। এর মধ্যে কয়েকটি পণ্যবাহী ট্রেনের চাকা বেশ বড় হয়ে থাকে। সেগুলোর ওজনো হয় প্রায় ৯০০ কেজি পর্যন্ত। রেলের খবর অনুসারে, বেঙ্গালুরুর রেল হুইল ফ্যাক্টরিতে মূলত ভারতীয় রেলের জন্য চাকা তৈরি হয়। মূলত ঢালাই লোহা এবং ইস্পাত- মূলত এই দু’টি জিনিস দিয়েই তৈরি হয় ট্রেনের চাকা।

কত বছর ধরে চলে ট্রেনের চাকা?

ট্রেনটি প্রতিদিন কত কিলোমিটার চলে, কত সময়ের ব্যবধানে চলে। এছাড়া কোন ধরণের জলবায়ুর মধ্যে ট্রেনটি যাতায়াত করে, কতটা ওজন বহন করে, অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট ট্রেনটির ক্ষমতা কত এইসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর ট্রেনের চাকা কত বছর চলবে, তা নির্ভর করে থাকে।

সাধারণ ট্রেনের চাকার বয়স মোটামুটিভাবে ৩ থেকে ৪ বছর। প্রায় ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ মাইল এক একটি ট্রেনের চাকা গড়াতে পারে। আর পণ্যবাহী ট্রেনের চাকার বয়ত হতে পারে ৮ থেকে ১০ বছর। আড়াই লক্ষ কিলোমিটার পর্যন্ত সফর করতে পারে এই ট্রেন।

মেট্রোতে লাগেজ হারিয়েছে? ফিরে পেতে অবলম্বন করুন এই পদ্ধতি

সাধারণত প্রতি ৩০ দিনে একটি ট্রেনের চাকা পরীক্ষা করা হয়। সামান্য ত্রুটি পাওয়া গেলেও তা পাল্টে দেওয়া হয়। রেল হুইল ফ্যাক্টরি বেঙ্গালুরু-র ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুসারে, ট্রেনের চাকাগুলির উপর এক বছরের ওয়ারান্টি থাকে।

ট্রেনের চাকার ওজন কত?

জানলে অবাক হবেন, ট্রেনের একটা চাকার ওজন এতটাই যে, ১০ জন মানুষও তা হাত দিয়ে তুলতে পারে না। আবার, কোচ ভেদে চাকার ওজনও ভিন্ন হয়৷ স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার তথ্য অনুসারে, ট্রেনের ইঞ্জিন ও কোচে বিভিন্ন ওজনের চাকা লাগানো হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ওজনের চাকা লাগানো হয় EMU ট্রেনের বগিতে। এক একটি চাকার ওজন প্রায় ৪২৩ কেজি। অন্যদিকে, একটি সাধারণ ট্রেনের বগিতে লাগানো একটি চাকার ওজন ৩৮৪ থেকে ৩৯৪ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।

Indian Railways: ট্রেনে তো চড়েন, জানেন কোচের গায়ে থাকা ডোরাকাটা দাগের অর্থ?

এছাড়া লাল রঙের LHB কোচের এক চাকার ওজন হয় প্রায় ৩২৬ কেজি।

ট্রেনের ইঞ্জিনে লাগানোর চাকার চেয়ে বগিতে লাগানো চাকার ওজন বেশি৷ একটি ট্রেনের ডিজেল ইঞ্জিনের একটি চাকার ওজন প্রায় ৫২৮ কেজি৷ সেখানে একটি বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনের একটি চাকার ওজন ৫৫৪ কেজি। ন্যারোগেজে চলা ট্রেনের ইঞ্জিনের চাকার সর্বনিম্ন ওজন ১৪৪ কেজি।