শুধু বাংলাদেশ নয়, এবার জামাতের নজরে ইসলামিক ‘বাংলাস্তান’

সংরক্ষণ বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ক্রমশ রাজনৈতিক বিক্ষোভের রূপ ধারণ করেছিল। যা ছিনিয়ে নিয়েছিল ধর্মান্ধ কয়েকটি রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় সংগঠন আর ভারতবিরোধী অংশ। চলেছে নৈরাজ্য। উৎখাত…

Not only Bangladesh but now the aim of Jamaat is to build Islamic Banglastan, জামাতের নজরে ইসলামিক 'বাংলাস্তান'

সংরক্ষণ বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ক্রমশ রাজনৈতিক বিক্ষোভের রূপ ধারণ করেছিল। যা ছিনিয়ে নিয়েছিল ধর্মান্ধ কয়েকটি রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় সংগঠন আর ভারতবিরোধী অংশ। চলেছে নৈরাজ্য। উৎখাত হয়েছেন শেখ হাসিনা। শেষপর্যন্ত, বাংলাদেশ পরিচালনায় তৈরি করা হয়েছে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। যার রাশ বকলমে জামাত গোষ্ঠীর হাতেই। সময় এগোতেই সেই ইঙ্গিত ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে। ডানা মেলছে মৌলবাদ। পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত দৈনিক সংবাদপত্র ‘বর্তমান’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের জামাত আর হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের এখন একটাই দাবি, গজওয়াতুল হিন্দ অর্থাৎ অমুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। তারপরই আদায় করতে হবে ‘ইসলামিক বাংলাস্তান’! সোশাল মিডিয়ায় এখন এই দাবি নিয়েই হইচই পড়েছে।

‘ইসলামিক বাংলাস্তান’-এর পরিধি-

   

বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সবটাই থাকবে, সঙ্গে জুড়বে ঝাড়খণ্ডের একটা বড় অংশ, বিহারের কিষানগঞ্জ, কাটিহার, নেপালের ঝাপা, মায়ানমারের রাখাইন ও আরাকান অঞ্চল। এছাড়াও আন্দামানের কিছু অংশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের অসম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম এবং মণিপুরের অংশবিশেষ নিয়ে প্রস্তাবিত এই ‘বাংলাস্তান’ গড়ে তুলতে চাইছে মৌলবাদী জামাত ও হেফাজতে ইসলাম। ‘বর্তমান’ সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রস্তাবিত এই অঞ্চল দখলে ফের একবার মুক্তিযুদ্ধ নামার আহ্বান জানানো হচ্ছে সমাজ মাধ্যমে। প্রচারে তুলে ধরা হচ্ছে যে, প্রস্তাবিত ‘বাংলাস্তানে’র সরকারি ভাষা হবে আরবি ও উর্দু।

‘বাংলাস্তান’-এর পক্ষে প্রচার-

ইতিমধ্যেই প্রস্তাবিত ‘বাংলাস্তান’-এর পোস্টার ঢাকা সহ বাংলাদেশের নানা জায়গায় ছাপা হয়েছে। জানা গিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের বেশ কয়েকজন নেতৃত্বও সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার আহ্বানে উস্কানি দিচ্ছেন। গোয়েন্দারা বলছেন, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকত-উল-জেহাদি-ইসলামি (হুজি), জামাতুল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), হেফাজতে ইসলাম এবং জামাতপন্থীরা কখনও বৃহত্তর বাংলাদেশ, কখনও মোঘলস্তান, আবার কখনও মুসলিমাবাদ গঠনের দাবি জানাচ্ছিল। তারই নব্য সংস্করণ এই ‘বাংলাস্তান’। নতুন এই দাবি তোলার ক্ষেত্রে এইসব সংগঠনগুলির মধ্যে যোগসূত্রের ইঙ্গিত মিলেছে বলেও খবর।

পাকিস্তানের ব্লগারদের উস্কানি-

বাংলাদেশের জামাত গোষ্ঠীর এই দাবিকে সমর্থন করেছেন, পাকিস্তানের পেশোয়ার, করাচি, লাহোর ও কোয়েটার কট্টর ভারত বিরোধী কয়েকজন ব্লগারও। ‘বর্তমান’ সংবাদপত্রে প্রকাশ, জেএমবি এবং হুজির জেলখাটা জঙ্গিরাও এই কাজে নাম লিখিয়েছে। এমনও কয়েকজন রয়েছে, যারা মাত্র দু’দিন আগে বাংলাদেশের জেল ভেঙে বেরিয়েছে।

৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা-কে অস্বীকার-

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ধর্মান্ধ নেটিজেনদের সিংহভাগই দেশের নতুন নামকরণ ও নতুন জাতীয় সঙ্গীতের পক্ষে। সেব্যাপারে রীতিমতো সওয়ালও করছেন। অস্বীকার করছেন ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা। এই তালিকায় রয়েছে এমন বেশ কিছু অধ্যাপক, শিক্ষক, প্রযুক্তিবিদ এবং অনাবাসী বাংলাদেশি, যারা হাসিনার আমলে ‘প্রগতিশীল’ বলে পরিচিত। তর্ক চলছে- দেশের নতুন নাম কী হতে পারে? বাংলাস্তান নাকি পূর্ব পাকিস্তান? সমীক্ষা বলছে, ৯১ শতাংশ চাইছেন বিধর্মীদের হটিয়ে নাম হোক ‘ইসলামিক বাংলাস্তান’।