ভোট প্রচারে ঠান্ডা গলায় শামীম ওসমান বলেছিলেন ‘খেলা হবে’, ‘আমরাই খেলব’। বাংলাদেশের (Bangladesh) বাহুবলী বিতর্কিত এই রাজনীতিক তারপর লাগাতার খেলা দেখিয়ে জাতীয় সংসদের আসনটি ধরে রেখেছেন। আওয়ামী লীগের সাংসদের তৈরি ‘খেলা হবে’ স্লোগানটি সামাজিক মাধ্যমে সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করে। স্থায়ী ঠিকানা হয় তৃণমূল কংগ্রেস!
রাজনৈতিক বিশ্লেষণে বারবার উঠে এসেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের বাহুবলী নেতা অনুব্রত মণ্ডলের অত্যন্ত প্রিয় এই স্নোগান। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অনুব্রত (কেষ্ট) ঠাণ্ডা গলায় বলতেন ‘খেলা হবে’। শামীম ওসমান ও অনুব্রত মণ্ডল দুজনেই পরস্পরের বিষয়ে ওয়াকিবহাল। সূত্রের খবর, গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল জেলে যেতেই বাংলাদেশের সাংসদ শামীম ওসমান ঘনিষ্ঠ মহলে খোঁজ খবর নিয়েছিলেন।
ভয় ছড়ানোয় অভিযুক্ত শামীম ওসমান বাংলাদেশে চলতে থাকা গণবিক্ষোভ প্রেক্ষিতে নীরব কেন এমনই প্রশ্ন উঠছে। শামীম ওসমানের উপস্থিতিতে জনতা নির্বাক হয়ে যেত এখন প্রবল রক্তাক্ত বিক্ষোভের মাঝে তিনি অদৃশ্য। সূত্রের খবর, দলীয় কর্মীরাও তাদের শামীম ভাইয়ের খোঁজ পাচ্ছেন না। তিনি দেশত্যাগী বলেই প্রবল গুঞ্জন। ‘খেলা হবে’ জন্মদাতা শামীম ওসমান ভীত! ঠারে ঠোরে আওয়ামী লীগের একাংশ এমনটা মেনে নিচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জের সাংসদ ও হেভিওয়েট নেতা শামীম ওসমান পলাতক বলেই বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের দাবি। তবে শামীম ওসমান বাংলাদেশ আছেন নাকি অন্যদেশে চলে গেছেন তা স্পষ্ট হয়নি। বিতর্ক উস্কে উঠেছে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনের একটি ফেসবুক পোস্টে। তিনি লিখেছেন,
“ছাত্র আন্দোলনের জোয়ার দেখে দু’ডজন মন্ত্রী আর এম পি বাংলাদেশ থেকে সপরিবার পালিয়েছে। এদের পাসপোর্টে ইউরোপ আমেরিকার ভিসা মনে হয় লাগানোই থাকে। এদের স্যুটকেস মনে হয় হাফ গোছানোই থাকে। বিপদ দেখলেই চম্পট। দেশ গোল্লায় যাক, সরকার ধ্বসে পড়ুক, তাদের কিছু যায় আসে না। আর একটা ধাক্কা এলে তো মনে হয় বাকি মন্ত্রীরাও পালাবে।”
সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ইস্যু তথা কোটা আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিকা স্বৈরাচারী বলে অভিযোগ করেছেন বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। তাদের বিক্ষোভ ক্রমে গণবিক্ষোভে রূপান্তরিত হয়েছে। পুলিশ-পড়ুয়াদের সংঘর্ষে ফের রক্তাক্ত বাংলাদেশ। বিক্ষোভকারীদের তরফে অসহযোগ আন্দোলনের বার্তার পাশাপাশি স্লোগান উঠছে ‘স্টেপডাউন হাসিনা’।
হাসিনাকেই চরম কটাক্ষ ‘আমরা অনেকদিন হাসি না’, বাংলাদেশে নিহত বহু শিশু- জানাল ইউনিসেফ
কোটা সংরক্ষণ ইস্যুতে গত জুলাই মাস হয়েছিল রক্তাক্ত। তবে বাংলাদেশ সরকারের দাবি, পড়ুয়াদের আন্দোলন ঘিরে যে সংঘর্ষ ছড়িয়েছিল তাতে জামাত ইসলামি ও অন্যতম বিরোধী দল বিএনপির উস্কানি সংযোগ স্পষ্ট। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে যতটুকু কোটা ব্যবস্থা আছে তা বজায় থাকবে। আদালতের নির্দেশে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে।