রাতের অন্ধকারে জ্বলেছিল চিতার আগুন। ছাই চাপা পড়েছিল অনেক প্রশ্ন। উত্তর মিলতে পারে মার্চের ১০ তারিখ (UP Election 2022)।
এখনও পর্যন্ত যা খবর, ওবিসি (OBC) ভোটারদের জন্য ঝাঁপাতে চলেছে বিজেপি (BJP)। প্রার্থী তালিকাতে স্পষ্ট সেই ইঙ্গিত। শনিবার মোট ১০৭ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৪৪ জন ওবিসি ও ১৯ জন তফশিলি জাতির প্রতিনিধি। প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন ১০ জন মহিলা। এমনকি যে আসনগুলো ওবিসি বা তফশিলি জাতির প্রতিনিধিদের জন্য সংরক্ষিত নয়, সেগুলোর টিকিটও দেওয়া হয়েছে অনগ্রসর জাতির প্রতিনিধিদের। বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি, ৬০ শতাংশ প্রার্থী অনগ্রসর শ্রেণীভুক্ত। ১০ জন মহিলা প্রার্থীকেও দেওয়া হয়েছে টিকিট। উন্নাও (Unnao)-এর প্রার্থীর নাম এখনও ঘোষণা করেনি বিজেপি।
উন্নাও গণধর্ষণ ঘটনা নিয়ে আলোচনা চলেছিল অনেক দিন। আসন্ন নির্বাচনে এই ইস্যুকেই হাতিয়ার করেছে কংগ্রেস (Congress)। নির্যাতিতার মা-কে ভোটের টিকিট দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরা।
উন্নাও-এর ঘটনায় উঠে এসেছিলে উচ্চ শ্রেণী বনাম নিম্ন শ্রেণীর মধ্যেকার ভেদাভেদ। এবারের নির্বাচনে তথাকথিত পিছিয়ে পড়া মানুষদের টার্গেট করেছে বেশিরভাগ দল। নির্যাতিতার পরিবার অনগ্রসর শ্রেণীর বলে জানা গিয়েছিল। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উন্নাও-এ ৩০ শতাংশেরও বেশি মানুষ পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর। কৃষি কাজের সঙ্গেও যুক্ত অনেকেই। ফলত নির্যাতনের ঘটনার পাশাপাশি সেখানকার ভোটারদের মনে প্রভাব ফেলতে পারে কৃষক বিদ্রোহ। এবং পরবর্তীকালে কেন্দ্রীয় সরকারের নতজানু হওয়ার সিদ্ধান্ত।
২০১৯ সালের আগের খবর। উত্তর প্রদেশের আরও ১৭টি অনগ্রসর জাতিকে ওবিসি ভুক্ত করেছিল যোগী আদিত্যনাথের সরকার। সমাজের নিম্নকোটির মানুষদের কাছে ভালো ইমেজ বানানোর চেষ্টা করেছিল ভাজপা সরকার। তারা কতটা সফল তা বলবে ভোটের ফল। তবে এটুকু অনুমান করা যায়, ২০২২-এর ভাবনা অনেক আগে থেকেই ঘুরতে শুরু করেছিল গেরুয়া নেতৃত্বের মগজে। সেই মতো তৈরি হচ্ছিল নীল নকশা। মাঝে উন্নাও-এর ঘটনা উঠে এসেছে বিরাট প্রশ্ন চিন্হের মতো। সম্প্রতি একের পর এক নেতা চলে গিয়েছেন দল ছেড়ে। স্বামী প্রসাদ মৌর্যরা ছিলেন বিজেপির ট্রাম্প কার্ড। পিছিয়ে পড়া মানুষদের সামনে ভারতীয় জনতা পার্টিকে কার্যত ভিলেনের রূপ দিয়েছেন তারা। নির্বাচনের দোরগোড়ায় এসে এই নাটকীয়তা বোধহয় আগেভাগে কল্পনা করতে পারেনি বিজেপি নেতৃত্ব। তিলে তিলে গড়ে তোলা পরিকল্পনার সামনে কঠিন পরীক্ষা। তিরে এসে তরী ডুবির আশঙ্কা।