দূর থেকে দেখলাম হামাস নেতা হানিয়ার কফিন, মোবাইলে ঢুকল ব্রেকিং হাই এলার্টে ইজরায়েল

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: কাতারে কাতারে মানুষ কাতারের রাজধানীর রাজপথ ধরে চলেছেন। প্যালেস্টাইনের পতাকায় মোড়া নিহত হামাস সংগঠনের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার কফিনে রাখা দেহ সমাধিস্থ…

funeral procession for Hamas leader Ismail Haniyeh in Doha

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: কাতারে কাতারে মানুষ কাতারের রাজধানীর রাজপথ ধরে চলেছেন। প্যালেস্টাইনের পতাকায় মোড়া নিহত হামাস সংগঠনের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার কফিনে রাখা দেহ সমাধিস্থ হল এ দেশে। “ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীর গেরিলা সংগঠন” হামাসের বন্ধু দেশ কাতার। তবে হামাস সংগঠনটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ “জঙ্গি সংগঠন” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

আমি দূর থেকে দেখলাম হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার দেহ নিয়ে শোক মিছিল। ঠিক তখনই ব্রেকিং খবরটা ভেসে উঠল মোবাইল স্ক্রিনে-হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে ইজরায়েল সরকার। আমার আশঙ্কা, হামাস প্রধানকে সমাধিস্থ করার পরেই ইজরায়েলের দিকে উড়ে যাবে ইরানি মিসাইল। পরমাণু শক্তিধর ইরানের হামলা হলে আরও এক পরমাণু শক্তিসম্পন্ন ইজরায়েল কী প্রত্যুত্তর দেবে সেই আশঙ্কায় বিশ্ব চিন্তিত।

   

Kolkata 24×7 এর মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ সংবাদদাতা সুজানা ইব্রাহিম মোহনা। তিনি বিশ্ব রাজনৈতিক উত্থান পতনের অন্যতম কেন্দ্র কাতারের রাজধানী দোহা শহরে থাকেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর রিপোটার্জ পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে তুলে ধরেন।

কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপের আসরে এই ফিলিস্তিনি আবেগ ছিল চোখে পড়ার মত। ফিলিস্তিনি আবেগ পুরো আরব বিশ্ব জুড়েই আছে। অর্থাত প্যালেস্টাইনের সমর্থনে শিয়া-সুন্নি ‘ঝগড়া একপাশে রেখে ‘মুসলিম দেশগুলি এক সারিতে সামিল হয়। সেই কারণেই ফিনিস্তিনি হামাস সংগঠনকে মান্যতা দিয়েছে শিয়াপন্থী ইরান আর সুন্নিপন্থী কাতারসহ অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলি।

জামাত ইসলামিকে জঙ্গি চিহ্নিত করে হাসিনার হুঙ্কার পাকিস্তানের প্রেতাত্মাদের ঠাঁই নেই

ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইন দ্বন্দ্বের কারণে বারবার রক্তাক্ত মুহূর্ত দেখেছে দুনিয়া। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যেভাবে ফিলিস্তিন সংগঠন হামাস সরাসরি ইজরায়েলে নিরাপত্তা বলয় ভেঙে গণহত্যা চালিয়েছিল তার প্রত্যাঘাতে ইজরায়েলি বাহিনীও গাজা ভূখণ্ডের নিরাপরাধ ফিলিস্তিনিদের গণহত্যায় অভিযুক্ত।

ইজরায়েলের সেনা অভিযানে গাজার ক্ষমতা হারিয়েছে হামাস। সংগঠনটির রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া কাতার সরকারের রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। তিনি ইরান সরকারের আমন্ত্রণে সে দেশের প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তেহরান সফরে গেছিলেন। সুকঠিন ইরানি নিরাপত্তা বলয়ে থাকা হামাস প্রধান হানিয়াকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে খুন করা হয়। এতে ইজরায়েলি গুপ্তচর সংগঠন মোসাদ জড়িত বলেই মনে করা হচ্ছে।

খুনের তদন্তে উঠে এসেছে, যে বাড়িতে হামাস প্রধানকে রাখা হয়েছিল সেখানেই দূর নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরক মজুত ছিল। রিমোটের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ইরানি নিরাপত্তার বলয় ভেঙে এভাবে বিস্ফোরণে হামাস প্রধানকে খুনের জেরে বিশ্ব স্তম্ভিত। এমন হত্যা ইজরায়েলের গুপ্তচর বিভাগ মোসাদ বারবার ঘটিয়েছে।

ইরান সরকারের তরফে হামলার হুমকি আসার পর ইজরায়েল অতি সতর্ক। কারণ, তাদের অতি সুরক্ষিত আয়রন ডোম বলয় অর্থাত আকাশেই মিসাইল ধংস করার পদ্ধতি ভেঙেছিল হামাস সংগঠনই। রক্তাক্ত সেই ৭ অক্টোবরে হাজারের বেশি মিসাইল ছুঁড়ে ইজরায়েলের নিরাপত্তা বলয়ের দম্ভে আঘাত করেছিল হামাস। এবার ইরান দিয়েছে হামলার হুমকি। মিসাইল হামলা চালিয়ে ইরানি সুরক্ষা বলয় ফের ভেঙে রক্তাক্ত পরিস্থিতি ঘটিয়েছে হামাসে মিত্র হিজবুল্লাহ জঙ্গি সংগঠন।