ডিএ বৃদ্ধির দাবি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। কিন্তু, তার বাইরেও সুখবর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মীদের জন্য। স্বাস্থ্য প্রকল্পে আরও একটি সুবিধা পেতে চলেছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, চোখের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ‘লুসেনটিস’ নামের ইনজেকশনের পুরো দাম পাওয়া যাবে সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পের মাধ্যমে।
এই ইনজেকনের জন্যে আগে সরকারি কর্মীদের ৪৫ হাজার টাকা দেওয়া হত স্বাস্থ্য প্রকল্পের মাধ্যমে। বাকি টাকা সংশ্লিষ্ট কর্মীদেরই নিজের পকেট থেকে দিতে হত। তবে এখন নিয়মে বদল হল। এই ইনজেকনের পুরো দামই মিলবে সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পের মাধ্যমে। তবে, ‘লুসেনটিস’ ইনজেকশনের দাম ৫০ হাজার পেরোলে তা অর্থদফতরের মেডিকেল সেলের কাছ থেকে আগাম অনুমোদন যোগ্য।
সিলিন্ডারের দামে বিরাট চমক দিল সরকার, রেট বাড়ল না কমল?
এছাড়া, রাজ্য সরকারি কর্মীদের স্বাস্থ্য প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে ১০০ মিলিলিটার হিউম্যান অ্যালবুমিনে (২০ শতাংশ)। এতদিন এই ওষুধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা করে দেওয়া হত রাজ্য সরকারি কর্মীদের। এখন থেকে পুরো দামই পাবেন সরকারি কর্মীরা।
পশ্চিমবঙ্গ হেলথ স্কিমে এবার আরও ন’টি হাসপাতালকে যুক্ত করা হয়েছে। সরকারি কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য স্কিম চালু করে রাজ্য সরকার। সেই স্কিম নিয়ে কয়েকদিন আগেও একটি নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল সরকারের তরফে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৪ জুলাই রাজ্য অর্থ দফতরের মেডিক্যাল সেলের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় বাংলার সব সরকারি কর্মী এবং পেনশনভোগীদের জন্যে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, আরও বেশ কয়েকটি হাসপাতালকে পশ্চিমবঙ্গ হেলথ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা হল।
কোন কোন হাসপাতাল পশ্চিমবঙ্গ হেলথ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হল?
– কলকাতা কিডনি ইনস্টিটিউট (কালিকাপুর)
– টেকনো ইন্ডিয়া ডামা হেলথকেয়ার সেন্টার (ইএম বাইপাস)
– তপোবন হাসপাতাল (দুর্গাপুর)
– আরামবাগ ডায়াগ্নস্টিক (আরামবাগ)
– এএসজি হাসপাতাল (বিটি রোড)
– এএসজি হাসপাতাল (দেশপ্রাণ শাসমল রোড)
– হিমালয়ান আই ইনস্টিটিউট (শিলিগুড়ি)
– জ্যোতির্ময় আরোগ্য ভবন (চণ্ডীতলা, শ্রীরামপুর)
– মেডিট্রাস্ট ডায়াগ্নস্টিক (কাশিপুর রোড, দমদম)
রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের স্বাস্থ্য প্রকল্পের বিল জমার পরও টাকা পেতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ করছে সরকার। জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিক্যাল সেলে এবার থেকে একজন চিকিৎসককে রাখা হবে। সরকারি স্কিমে কর্মীদের বিল মেটানোর কাজ এতে অনেকটই দ্রুততার সঙ্গে হবে বলে আশা।
দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণীর বোনেদের বাড়ি কোথায় জানেন কী?
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীরা স্বাস্থ্য প্রকল্পের অধীনে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এবং তাঁদের পরিবার ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্যাশলেস পরিষেবা পেতে পারেন। নিয়ম অনুযায়ী, এমপ্যানেলড হাসপাতালে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ হলে হাসপাতালে ওই কর্মীকে কোনও বিল মেটাতে হয় না। তবে বিল যদি ২ লাখ টাকার বেশি হয়, তাহলে সেই বিল জমা করতে হয় সরকারের কাছে। পরে রিইম্বার্সমেন্টের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মী সেই টাকা ফেরত পান।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য প্রকল্পের মেডিক্যাল সেলে এতদিন কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। এই কমিটিতে এখন স্বাস্থ্য দফতরে মেডিক্যাল অফিসার আছেন। এবার সেই কাজের জন্য অর্থ দফতরও সরাসরি চিকিৎসক রাখার বন্দোবস্ত করছে। তাতে, সরকারি কর্মীদের চিকিৎসা খরচের বিল জমা পড়ার পর তাতে কোনও জটিলতা থাকলে সেই সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে ফেলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।