প্রদেশ কংগ্রেসের পদে আর নেই, জানতেনই না অধীর! বিস্ফোরক মন্তব্য

কংগ্রেসের সিদ্ধান্তে অখুশি পোড় খাওয়া কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)? বর্তমান সময়ে এখন এই একটা প্রশ্নই বারবার উঠে আসছে। ২৪-এর লোকসভা ভোটে…

কংগ্রেসের সিদ্ধান্তে অখুশি পোড় খাওয়া কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)? বর্তমান সময়ে এখন এই একটা প্রশ্নই বারবার উঠে আসছে। ২৪-এর লোকসভা ভোটে যে অধীর রঞ্জন চৌধুরী তৃণমূলের তারকা প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের কাছে হেরে যাবেন এটা হয়তো কেউ ভাবতেও পারেননি। এরপর থেকেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল যে অধীরের থেকে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড দূরত্ব বজায় রাখছে। এরপর কফিনে শেষ পেরেকটা তখন পড়ে যখন দলেরই আরেক হেভিওয়েট নেতা গুলাম আলি মীর (Ghulam Ali Mir) অধীরকে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলে সম্বোধন করেন।

এরপরেই এই নিয়ে এবার গোটা বিষয়টি খোলসা করলেন অধীর। আর তিনি এবার যা বললেন তা শুনে সকলেই অবাক হয়ে গিয়েছেন। অধীর এক কথায় বোঝালেন যে তিনি জানতেনই না কখন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হয়ে গিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার কংগ্রেস (Congress) নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “যেদিন মল্লিকার্জুন খাড়গে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি হলেন, সেদিন থেকেই দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের অন্য সব পদ অস্থায়ী হয়ে যায়। এমনকি আমার পোস্টটিও সাময়িক হয়ে যায়। লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন মল্লিকার্জুন খাড়গে টেলিভিশনে বলেছিলেন যে প্রয়োজনে আমি দল থেকে বেরিয়ে যেতে পারে, এই কথা আমাকে বিচলিত করেছিল।”

   

বাংলায় ভোটের ফলাফল প্রসঙ্গে অধীর বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের ফলাফলও দলের পক্ষে ভাল ছিল না। আমি দলের অস্থায়ী সভাপতি হলেও এটা আমার দায়িত্ব ছিল। এর পরে আমি খাড়গেজিকে বলেছিলাম, যদি সম্ভব হয় তবে আপনি আমার জায়গায় অন্য কাউকে নিয়োগ করতে পারেন। এরই মধ্যে দল আমাকে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতাদের একটি বৈঠক ডাকার জন্য জানিয়েছিল। কারণ দল দুটি প্রস্তাব পাস করতে চেয়েছিল, আমি জানতাম যে আমার সভাপতিত্বে এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল এবং আমি তখনও পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস সভাপতি ছিলাম। তবে বৈঠকের সময় গুলাম আলি মীর বক্তব্য রাখার সময় বলেছিলেন যে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিও রয়েছেন। তখনই জানতে পারি আমি পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি হয়েছি।’

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের মুখে পড়ার পর বড় পদক্ষেপ নিয়েছে কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে। পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গুলাম আহমেদ মীর এই তথ্য দিয়েছেন। সোমবার অধীর রঞ্জন-সহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকজন নেতা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেই তাঁকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অধীর রঞ্জন চৌধুরী ১৯৯৯ সাল থেকে একটানা বহরমপুর কেন্দ্র থেকে লোকসভার সাংসদ ছিলেন। গত বছর তিনি লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা ছিলেন।

তবে এবার লোকসভা ভোটে তৃণমূলের ইউসুফ পাঠানের সামনে হারতে হয় তাঁকে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বেণুগোপাল আগেই কংগ্রেস নেতাদের জানিয়েছিলেন, রাজ্যে নেতৃত্বের সমস্যা থাকলে মানুষ ইমেল বা মেসেজের মাধ্যমে নিজেদের মতামত জানাতে পারেন। যাঁদের দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল তাঁদের মধ্যে ছিলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, আবুদুল মান্নান, দীপা দাশমুন্সি, অমিতাভ চক্রবর্তী, নেপাল মাহাতো, মনোজ চক্রবর্তী, ইশা খান চৌধুরি। দীপা দাশমুন্সি কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি কেরালা, তেলেঙ্গানা ও লাক্ষাদ্বীপের দায়িত্বে। অধীর রঞ্জন চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়নি।