পাখির চোখ ২০২৬, যুব সমাজের ভোট টানতেই কী শিল্পমুখী মমতা?

কলকাতাঃ  আগামী বিধানসভা ভোটের আগে শিল্পমূখী ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে উদ্যোগী হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যকে উন্নয়ণমূখী করতে শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।…

Mamata Banerjee

কলকাতাঃ  আগামী বিধানসভা ভোটের আগে শিল্পমূখী ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে উদ্যোগী হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যকে উন্নয়ণমূখী করতে শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। ২০০৬ সালে টাটার ফিরে যাওনা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। বাম আমলে সেই ন্যানো কারখানার ‘ভূত’ দীর্ঘদিন তাড়িয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। তারপর রাজ্যে বিনিয়োগের যে খরা হয়েছিল, তা নিয়ে রাজ্যকে কাঠগড়ায় তুলেছিল বিরোধীরা। সেই পরিস্থিতিতে শিল্পবান্ধব ভাবমূর্তি গড়ে তোলাই ছিল রাজ্যের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। 

Higher Secondary 2025: বড় ঘোষণা উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীরা এখবর আগে পড়ুন

   

বাংলায় বিপুল বিনিয়োগ হচ্ছে চর্ম শিল্পে। উত্পাদন ও বিপণনে গড়া হবে হাব। আলিপুরের মতো জায়গায় তৈরি হবে চর্ম পণ্যের শপিং মল। নবান্নে লেদার এক্সপোর্টারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিভিন্ন দফতরের সচিবেরা। জানা গিয়েছে বর্তমানে ১১৫০ একর জমিতে ৫০০ টি চর্ম ট্যানারি উত্পাদনের কাজ করছে। সেখানে ইতিমধ্যেই ২৫০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। যাতে পাঁচ লক্ষের ওপর কর্মসংস্থান হয়েছে। এবার নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামীদিনে আরও ১০০০০ কোটি টাকা চর্ম শিল্পে বিনিয়োগ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এই বিনিয়োগের ফলে আরও ১৮৭ টি ট্যানারি তৈরি হবে। তাতে আরও আড়াই লক্ষের ওপর কর্ম সংস্থান হবে। অর্থ্যাত্ আগে ও পরে সব মিলিয়ে সাড়ে সাত লক্ষের ওপর কর্মসংস্থান হতে চলেছে। এমনটাই দাবি রাজ্য প্রশাসনের।

ভোটে জিতেই বেপাত্তা! ৪৩ দিন পর বহরমপুরে পা রাখলেন তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ

পাশাপাশি চর্ম শিল্প উত্পাদন কেন্দ্রের পরিকাঠামোর উন্নয়ণে আরও ১৯০০ কোটি বিনিয়োগ করা হবে। যারমধ্যে জমি সংক্রান্ত কেনা বেচাতেই বরাদ্দ হবে ১০০০ কোটি টাকা। বাকি খরচ কারখানা নির্মাণ ও চর্ম পণ্যের বিপনণ কেন্দ্র বা শপিং মল গড়তে ব্যয় হবে। আলিপুরের মিউজিয়ামের সংলগ্ন জায়গাতেই তৈরি হবে এই বিপনণ হাব।

অন্যদিকে, সম্প্রতি নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ার ডোমজুড়ে বিপুল বিনিয়োগ করতে চলেছে বিড়লা গোষ্ঠীর ই-ভেহিকেলে বাইক নির্মাণকারী সংস্থা রাফট কসমিক ইভি। সেখানে একশো কোটি টাকার বিনিয়োগ হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। বিনিয়োগ করতে ইতিমধ্যে ডোমজুড়ে আট একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আগামী ডিসেম্বর থেকেই কারখানায় উত্পাদন শুরু হবে। এই বিনিয়োগে কমপক্ষে ২০০ জনের কর্মসংস্থান হব। এমনটাই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। ইতিমধ্যেই শেয়ার বিনিয়োগ করে কারখানা গড়ার ‘ফান্ড’ জোগার করতে শুরু করেছে বাণিজ্যিক সংস্থাটি।

বাড়ছে পড়ুয়াদের লাশ, হাসিনাকে বার্তা ‘খুনিদের সঙ্গে আলোচনা নয়’

ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের নাসিক ও ভিওয়ান্ডিতে দুটি কারখানা চলছে বিড়লা গোষ্ঠীর। সেখানে বছরে ৭০০ টি করে ই-ভেহিকেল বা বৈদ্যুতিন বাইক উত্পাদন হচ্ছে। সংস্থাটির সূত্রে জানানো হয়েছে, বর্তমানে ওই দুই কারখানায় ৬০ শতাংশ বিদেশি প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয়। কিন্তু বাংলার ডোমজুড়ে কারখানা হলে সেখানে ১০০ শতাংশই ভারতীয় প্রযুক্তিতে উত্পাদন হবে। এই কারখানায় ২৫০০ বৈদ্যুতিন স্কুটার ও বাইক তৈরি হওয়ার কথা। আগামী দিনে বাংলা থেকেই বের হতে পারে বৈদ্যুতিন চারচাকাও।

গত লোকসভা নির্বাচনে গ্রামাঞ্চলে ভোটের শতকরা বাড়লেও শহরের পুর এলাকায় ভোট কিন্তু কমেছে রাজ্যের শাসক দলের। আর পুর এলাকাতে অধিকাংশ ইস্যুই জড়িত থাকে পুর পরিসেবা ও কর্মসংস্থানের প্রশ্ন। এবার ২০২৬ বিধানসভা ভোটের আগেই যুব সম্প্রদায়ের মন জিততে শিল্প-সংস্থানকেই নজর দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।