চার যুগ পেরিয়ে অপেক্ষার অবসান (Jagannath Temple)। পুরীর রত্ন ভাণ্ডারের (Jagannath Temple) সমস্ত কক্ষের দরজা খোলা হলো। যে ভিতর কক্ষের খোলা যায়নি এতদিন পর্যন্ত, তার দরজাও আজ খোলা হল (Jagannath Temple)।
গতকালই উড়িষ্যার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন এই বিষয়ে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। রত্ন ভান্ডার (Jagannath Temple) খোলার ক্ষেত্রে উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনও পাওয়া হয়ে গিয়েছিল। পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আজ বেলা একটা ২৮ মিনিটের শুভ তিথিতেই প্রায় চার দশক পরে আবারও মানুষের পদার্পণ হলো রত্ন ভান্ডারের গুপ্ত কক্ষে। দীর্ঘকাল ধরে বয়ে চলা জল্পনার প্রবাহে যেন বাস্তবের আলো এসে পড়ল।
রত্ন ভান্ডারের সমস্ত রত্ন বার করবার জন্য ছটি বড় বড় সিন্দুক আনা হয়েছিল। সকাল সকাল পৌঁছে গিয়েছিলেন ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের অফিসারেরা। সুপ্রিম কোর্টের গঠিত বিশেষ কমিটির সদস্যরাও এদিন পৌঁছে গিয়েছিলেন পুরী মন্দির চত্বরে। চূড়ান্ত সতর্কতা এবং নিরাপত্তার মধ্যেই শুরু হয় রত্ন ভান্ডার খোলার কাজ। বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ভুবনেশ্বর থেকে সর্প বিশারদদের টিমও হাজির ছিলেন পুরী মন্দিরে।
এখনও অব্দি যা জানা যাচ্ছে, সবকটি কক্ষেরই দরজা খোলা সম্ভব হয়েছে। কাঠ নির্মিত লাল হলুদ রঙের ছয়টি প্রকাণ্ড সিন্দুকের ভিতরের অংশ পিতলের পাতে মোড়ানো। সেই সিন্দুকগুলির মধ্যেই যাবতীয় রত্ন অলংকার এবং মূল্যবান দ্রব্যাদি সুরক্ষিতভাবে ভরে বার করে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হবে রত্ন ভান্ডারের সংরক্ষণ এবং মেরামতির কাজ।
টালমাটাল পরিস্থিতি ‘ইন্ডিয়া’র, সম্মুখসমরে জোটের দুই প্রধান দল
অসমর্থিত সূত্রের খবর প্রায় ৩৭৬ প্রকারের সোনার গয়না রয়েছে একেবারে ভেতর কক্ষে। বাইরের কক্ষগুলিতে মোটামুটি 79 রকমের সোনার গয়না থাকার সম্ভাবনা আছে। যদিও সরকারি আধিকারিকেরা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন যতক্ষণ না অব্দি পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব এবং পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে, পুরো রত্নভাণ্ডার নিয়ে কোন কিছুই বলা যাবে না।
গোটা উড়িষ্যা জুড়ে বহু পুরনো প্রচলিত কাহিনী আজ আবারও যেন প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। পুরান কথিত বৈদুর্যমণি এবং নীলকান্ত মণির মতো অমূল্য সম্পদ রয়েছে মহাপ্রভু জগন্নাথের এই রহস্যময় রত্ন ভান্ডারে। গোটা পুরী জুড়ে এই জনশ্রুতি এখনও শোনা যায়। আজ যে রত্ন ভান্ডারের দরজা খোলা হল, তাতে এই দুই রত্নের হদিশ পাওয়া যায় কিনা? জগন্নাথ ভক্তদের নজর থাকবে সেদিকেও।
তবে উড়িষ্যা সরকার সূত্রে জানা যাচ্ছে ১৯৭৮ সালে যখন শেষবার খোলা হয়েছিল তখন ৭০ দিন ধরে এই পুরো রত্ন ভান্ডারের হিসেব এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চলেছিল । অনেক বিশেষজ্ঞের মতে এই সময়সীমা দেখেই বোঝা যায় কি বিপুল পরিমাণ ধন সম্পত্তি রয়েছে পুরীর মহাপ্রভু জগন্নাথের।
কত কম টাকায় চড়তে পারবেন ‘বন্দে ভারত’? রইল তালিকা
সূত্রের খবর সেই বছর ১৩ ই মে থেকে ২৩ শে জুলাই অব্দি সময় লেগেছিল গোটা রত্ন ভান্ডারের ক্যাটালগ এবং হিসেব কর প্রস্তুত করতে। তবে তখনও নাকি সম্পূর্ণ সম্পত্তির হিসেব করা হয়নি বলে শোনা যায়। এবার প্রায় চার দশক পরে পর ২০২৪ সালে কতদিন সময় লাগে মহাপ্রভু জগন্নাথের জাগতিক সম্পত্তির হিসেব করতে সেটাই দেখার বিষয়।