ঝলসে গেছে পুরো শরীর। আধ পোড়া পূণ্যার্থীর আর্তনাদ ‘পানি দাও পানি দাও’। পাশেই পড়ে আছে এক মহিলার দেহ। তার উপর আর একজন! ভয়াবহ এই ছবি এসেছে (Bangladesh) বাংলাদেশ থেকে। দুর্ঘটনাস্থল বগুড়া। রবিবার রথ নিয়ে শোভাযাত্রায় বিদ্যুতের তারের স্পর্শে একাধিক নিহত। আর অর্ধশতাধিক আহতের চিকিতসা চলছে।
বাংলাদেশের মর্মান্তিক এই রথযাত্রা দুর্ঘটনার মত গতবছর ত্রিপুরার কুমারঘাটে উল্টোরথের শোভাযাত্রায় বিদ্যুতের স্পর্শে মৃত্যু হয়েছিল পূণ্যার্থীদের। দুটি ক্ষেত্রেই রথের চূড়ার সঙ্গে রাস্তার ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারের স্পর্শ হয়। দুটি ক্ষেত্রেই উদ্যোক্তাদের গাফিলতি স্পষ্ট।
রবিবার রথযাত্রা উৎসবের জন্য রাজধানী শহর ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় শোভাযাত্রা ঘিরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। কী কারণে বগুড়ায় রথের চূড়া রাস্তার বিদ্যুতের তার পর্যন্ত লম্বা করা হয়েছিল এই প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন উঠছে রথ চলাকালীন সংশ্লিষ্ট এলাকায় কেন বিদ্যুত পরিষেবা সাময়িক বন্ধ করা হয়নি? দুর্ঘটনার জন্য ইসকন কর্তৃপক্ষেরও গাফিলতি আছে বলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
বগুড়ার রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কমপক্ষে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজন আশঙ্কাজনক। রবিবার বিকেলে বগুড়া শহরের সেউজগাড়ী আমতলা মোড় এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, সেউজগাড়ী ইসকন মন্দির থেকে রথযাত্রা শুরু হয়। স্থানীয় আমতলা মোড় এলাকায় পৌঁছালে রথের চূড়া সড়কের বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে আগুন ধরে যায়। রথের ওপরে এবং নিচে বসে থাকা পূণ্যার্থীরা ঝলসে যান।
দুর্ঘটনায় মৃতরা হলেন অলোক সরকার (৪০), অতশী রানী (৪০), রঞ্জিতা মোহন্ত (৬০), নরেশ মোহন্ত (৬৫) এবং আরও এক মহিলা। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেন কলেজ হাসপাতাল ও মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের বাইরে নিহত ও আহতদের আত্নীয়রা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তারা বলছেন এ রথযাত্রা হয়ে গেল মরণযাত্রা। এক মৃতের আত্মীয়র বুকফাটা আর্তনাদ ‘হে জগন্নাথ এভাবে জানটা নিলে’!