কথায় বলে একটি ছবি হাজার না বলা কথার সমান । আর এবার সেই ছবিই কি কলকাতার মেয়রের (Mayor Firhad Hakim) সঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সম্পর্কের শৈত্য সামনে নিয়ে এল? সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের মালা রায় বিপুল মার্জিনে পরাজিত করেছেন বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরীকে। আর সেই জন্যই নিজের ওয়ার্ড চেতলা অঞ্চলের বাসিন্দাদের অভিনন্দন এবং ধন্যবাদ জানিয়ে এক বিশেষ কার্ড বিলি করেছেন রাজ্যের পুর এবং নগর উন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। জল্পনার অবকাশও ছিল না। কারণ বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের ছোট বড় মাপের নেতারা ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে কোথাও বিশাল ফ্লেক্স,আবার কোথাও এরকম ছোট বড় কার্ড বিলি করেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে ববির কার্ডের ছবি নিয়ে।
ফিরহাদ হাকিমের এই ধন্যবাদ জ্ঞাপক কার্ডে একদিকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রয়েছে। রয়েছে বিজয়ী প্রার্থী মালা রায়ের ছবিও। সেই সঙ্গে ববি হাকিমের নিজের ছবি রয়েছে।
কিন্তু তৃণমূলের ছোট বড় সমস্ত পোস্টারে এখন যার ছবি থাকাটা একেবারে অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছবি এই কার্ডে নেই! আর সেখানেই শুরু রাজনৈতিক জল্পনা। তৃণমূলের সেনাপতি আখ্যা পাওয়া অভিষেকের ছবি নেই কলকাতার মেয়রের ছাপানো কার্ডে, জল্পনা ছড়াতেও সময় নেরনি এই ঘটনায়।
কলকাতার রাজনৈতিক মহলে, অভিষেক বনাম ববির ঠান্ডা লড়াইয়ের কথা বিভিন্ন সময় শোনা গিয়েছে। এমনকি কলকাতার মেয়র পদে ববি যে অভিষেকের নাপসন্দ, এরকমটাই মত অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের। কিন্তু বরাবর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির ছায়া সঙ্গী এবং তৃণমূলের একেবারে শুরুর দিনের সৈনিক হওয়ার কারণে মমতা দিদি, তার প্রিয় ববির পাশে সব সময়েই থেকেছেন। আর তাতেই প্রতিপত্তি বেড়েছে ফিরহাদের, এমনটাই মত অনেকের।
কিন্তু প্রতিবেদনে শুরুতেই যে কথা বলেছিলাম, একটা ছবি হাজার না বলা কথা বলে দেয়। ববির কার্ডে অভিষেকের মিসিং থাকাটা বিরোধী তথা বঙ্গ রাজনীতির কারবারিদের কাছে কোনও এক মিসিং লিংকের খোঁজ এনে দিল কি? এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখপাত্র, কুনাল ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তার সটান বক্তব্য,”কে তার কার্ডে কার ছবি ব্যবহার করবে বা কোন ডিজাইনের ব্যবহার করবে তার কার্ডে, সেটা তার একান্ত ব্যাক্তিগত ব্যাপার”।
অভিষেক ব্যানার্জি এই মুহূর্তে তার স্বাস্থ্যজনিত কারণে সংগঠনের কাজ থেকে ছুটিতে রয়েছেন। তার একটি ছোটখাটো অস্ত্রোপচার হয়েছে এমনই খবর পাওয়া যাচ্ছে। আর তারই মাঝে এরকম একটি ঘটনায় তৃণমূলের ঘিরে রাজনৈতিক জল্পনায় উস্কানি আরও বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে।