বঙ্গ বিজেপিতে বেড়েই চলেছে অন্তর্কলহ….। রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ফের বিস্ফোরক রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার। লোকসভা ভোটে বঙ্গ বিজেপির এই হতাশা জনক ফলাফলের পেছনে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও ক্ষুব্ধ রানাঘাটের সাংসদ। বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভোটে সেটিং তত্ত্বকে সামনে তুলে আনতে চেষ্টা করেন।
বিজেপির রাজ্য নেতাদের অদক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর এই মুহূর্তে ছন্নছাড়া অবস্থায় রাজ্য বিজেপির সংগঠন। তখন বিজয়ী সাংসদ মুখ খোলায় স্বাভাবিকভাবেই ফের অস্বস্তিতে পড়তে হল বঙ্গ বিজেপিকে। এদিন তিনি বলেন,” ভোটে বিপুল কারচুপি হয়েছে। আমি নিজেই একজন ভুয়ো পোলিং আধিকারীককে ধরেছি। এই ভাবে তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সেটিং হয়েছে তা ধরতেই পারেনি রাজ্যে নেতারা। “আশা করি আমাদের দলের এই বিপর্যয়ের সঠিক পর্যালোচনা হবে।”
কেন্দ্রীয় বাহিনীও আশানুরূপ ভূমিকা পালন করেনি বলেও দাবি রানাঘাটের দু-বারের বিজয়ী সাংসদের। ২০১৯ এবং ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটে রানাঘাট কেন্দ্র থেকে জিতেছেন জগন্নাথ সরকার। এবার আশা ছিল জিতলে হয়তো কেন্দ্রে কোনও এক মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পাবেন তিনি। কিন্তু সেই আশাতেও সেগুরে বালি ঢেলে দিয়েছে সদ্য গঠিত নরেন্দ্র মোদীর সরকার। অন্যান্য রাজ্যে থেকে কেন্দ্রে মন্ত্রীত্বের সংখ্যা বাড়লেও বাংলার শিকে ছিঁড়েছে মাত্র দুটি রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরই পেয়েছেন এই দুটি পদ। অন্যদিকে, মন্ত্রীত্ব না পেয়ে কিছুটা হতাশা ঝরে পড়ে জগন্নাথ সরকারের গলায়। তিনি স্পষ্টতই বলেন,” দল মনে করেনি,তাই মন্ত্রীত্ব পাযনি। দলের সিদ্ধান্তই মেনে নিতে হবে।” দলের সিদ্ধান্তের দোহাই দিলেও কিছুটা হলেও মনক্ষুন্ন হয়েছেন তাঁর কথায় এমন আভাসই পাওয়া গিয়েছে।
৪ জুন ভোটের ফলাফল বেরোতেই দলের বিপর্যয় নিয়ে প্রথম মুখ খোলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁকে ‘কাঠিবাজি’ করে আসানসোল কেন্দ্রে সরানো হয়েছিল বলে অভিযোগ আনেন তিনি। তারপর বিষ়্ুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, অগ্নিমিত্রা পলেরা একে একে রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুললে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে। সেই বিদ্রোহীদের তালিকাতে ছিলেন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকারও। এবার আরও একদম এগিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি। তবে রাজ্য বিজেপিতে বিদ্রোহের আগুন এবার ছড়িয়ে পড়ল পাহাড়েও। এদিন কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাও নির্বাচনে ভরাডুবির জন্য শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারকেই দায়ী করেছেন। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে রাজু বিস্তাকে দার্জিলিঙে প্রার্থী করা নিয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়েছিলেন তিনি। এমনকী তাঁর বিরুদ্ধে নির্দল হয়েও লড়তে চান পাহাড়ের বিজেপি বিধায়ক।