প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কমিশনের কড়া পদক্ষেপের পরই মুখ খুলেছেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী। কমিশনের সিদ্ধান্তে তাঁর মানহানি হয়েছে বলে মনে করছেন প্রাক্তন বিচারপতি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘অশালীন’ মন্তব্যের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য এই বিজেপি প্রার্থীর প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যা মেনে নিতে পারছেন না অভিজিতবাবু। কমিশনের কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর সংবাদ মাধ্যমে প্রাক্তন বিচারপতি বলেছেন, ‘আমি কমিশনকে জবাব দিতে গিয়ে বলেছিলাম, যদি কোনও পদক্ষেপ করা হয়, তার আগে যেন অতিরিক্ত জবাব দেওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু কোনও সুযোগ না দিয়েই কমিশন এই নির্দেশ দিয়ে দিল।’ তাঁর সংযোজন, ‘অন্য লোকের মান আছে, রেখা পাত্রের মান নেই, আমার মান নেই, তা তো হতে পারে না। দরকারে কমিশনের এই নির্দেশ খারিজ করার আর্জি জানিয়ে আমি আদালতে যাব।’
Suvendu Adhikari: শুভেন্দুর কনভয় লক্ষ্য করে ‘চোর-চোর’ স্লোগান, কী করলেন বিরোধী দলনেতা?
অভিজিতের বিরুদ্ধে কমিশনের পদক্ষেপে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রশ্ন, ‘মমতা ব্যানার্জি মহিষাদলে এসে কী সব বলে গিয়েছেন। তখন কি নির্বাচন কমিশন ঘুমোচ্ছিল? বাপ-বেটা, গদ্দার- কত কী বলেছেন। ওঁদের জন্য এক নিয়ম আর অভিজিৎ গাঙ্গুলির জন্য আলাদা নিয়ম?’
গত বৃহস্পতিবার তমলুকে বিজেপির এক প্রচারসভায় বক্তব্য রাখেন অভিজিতবাবু। সেখানকার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, ‘তৃণমূল বলছে, রেখা পাত্রকে কেনা হয়েছিল ২০০০ টাকায়! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তুমি কত টাকায় বিক্রি হও? তোমার হাতে কেউ ৮ লক্ষ টাকা গুঁজে দিলে চাকরি হয়, কেউ ১০ লক্ষ টাকা দিলে রেশন হাওয়া হয়ে যায়। কেন তোমার দাম ১০ লক্ষ টাকা? তুমি কেয়া শেঠকে দিয়ে মুখে মেকআপ করাও বলে? আর রেখা পাত্র গরিব মানুষ, লোকের বাড়িতে কাজ করে, আমাদের প্রার্থী। সে জন্য তাঁকে ২০০০ টাকায় কেনা যায়?’
বিজেপির হেভিওয়েট প্রার্থীর এই মন্তব্যের পরই নিন্দায় মুখর হয় তৃণমূল। কমিশনে অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল। গত ১৭ মে তমলুকের বিজেপি প্রার্থীকে নোটিস পাঠায় কমিশন। জানিয়েছিল, বিজেপি প্রার্থী জবাব না-দিলে একতরফা পদক্ষেপ করা হবে। ২০ মে (সোমবার) কমিশনকে জবাব দিয়েছিলেন অভিজতবাবু। যাতে সন্তুষ্ট হয়নি কমিশন। সংস্থার বক্তব্য, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যে ভারতের এক জন মহিলার মর্যাদাহানি হয়েছে। এরপরই মঙ্গলবার অভিজিতের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কমিশন।