নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর মুখে ‘অনুপ্রবেশকারী’ এবং ‘একের বেশি সন্তান’ প্রসঙ্গে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি মুসলমান বিরোধী বলে প্রচারে পাল্টা ঝড় তোলার চেষ্টা করে বিরোধী দলগুলো। ভোট আবহে অস্বস্তি বাড়ে গেরুয়া শিবিরের। এবার ওই নিন্দারই জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী। এক বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদী বলেছেন য়ে, ‘যদি আমি হিন্দু-মুসলিম করি, তাহলে সামাজিক জীবনে থাকার যোগ্যতা হারাব।’ প্রধানমন্ত্রীর সাফ কথা, ‘আমি ভোট ব্যাঙ্কের জন্য কাজ করি না। আমি বিশ্বাস করি সব কা সাথ, সব কা বিকাশে।’
তাঁর মন্তব্যের অপব্যাখ্যা হয়েছে বলে দাবি করেচেন প্রধানমন্ত্রী। সাক্ষাৎকারে মোদী বলেন, ‘আমি স্তম্ভিত। কে বলল অনুপ্রবেশকারী আর বেশি সন্তানের প্রসঙ্গ তোলা মানেই মুসলিমদের কথা বলা হচ্ছে? এই সমস্যা দরিদ্র হিন্দু পরিবারেও রয়েছে। তারা নিজেদের সন্তানকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিতে পারছে না। আমি কখনও হিন্দু বা মুসলিমের নাম নিইনি। আমার কেবল আবেদন, আপনারা ততগুলিই সন্তানের জন্ম দিন যাদের আপনারা পালন করতে পারবেন।’
ধর্মীয় বিভেদ নয়, উল্টে দেশবাসীর উন্নয়নই তাঁর এবং বিজেপি সরকারের সংকল্প বলে স্পষ্ট করে দিয়েচেন মোদী। বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত আমার দেশের মানুষ আমাকে ভোট দেবে। যেদিন হিন্দু-মুসলিম নিয়ে কথা বলা শুরু করব, সেদিন আর সামাজিক জীবনে থাকতে পারব না। আমি কখনই হিন্দু-মুসলিমে বিভেদ সৃষ্টি করব না এবং এটা আমার প্রতিশ্রুতি।’
Indian Railways: খুব সাবধান, চলন্ত ট্রেনে যেসব কাজ করলে জরিমানা-জেল নিশ্চিৎ!
মঙ্গলবার রাতের সাক্ষাৎকারে মোদীর মুখে উঠে আসে গুজরাট দাঙ্গা প্রসঙ্গেও। বলেন, ‘আমার অনেক মুসলিম বন্ধু আছে। ২০০২ সালের পর আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল বিরোধী দলের নেতারা। কিন্তু শেষপর্যন্ত সব বুল প্রমাণিত হয়েছে।’
এরপরই তাঁর সঙ্গে মুসলমানদের সুসম্পর্ক তুলে ধরতে স্মৃতির পাতায় ডুব দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমাদের পাড়ায় মুসলিম পরিবার থাকত। ইদ উপলক্ষে আমরা বাড়িতে রান্না করতাম না। কারণ খাবার আসত আমাদের আশপাশের মুসলিম প্রতিবেশীদের কাছ থেকে। এমনকী আমাদের মহররমে তাজিয়া করতে শেখানো হয়েছিল।’
তাহলে কি এই লোকসবা ভোটে মুসলিমদের বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাবেন তিনি? জবাবে মোদী বলেন, ‘দেশের মানুষ আমাকে ভোট দেবে। যেদিন আমি হিন্দু-মুসলিম করা শুরু করব, সেদিন আমি জনজীবনে থাকার অধিকার হারাবো। আমি হিন্দু-মুসলিম করব না। এটা আমার অঙ্গীকার’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী রাজস্থানে একটি জনসভায় অভিযোগ করেছিলেন যে, কংগ্রেস মানুষের সোনা ও সম্পত্তি কেড়ে নিতে চায় এবং ‘যাদের বেশি সন্তান রয়েছে’ তাদের মধ্যে বিতরণ করতে চায়। দাবি করেন যে, হিন্দু মহিলাদের মঙ্গলসূত্রও নিরাপদ নয়।