আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ দেবাঞ্জলির খুব প্রিয় জায়গা শান্তিনিকেতন। দেবাঞ্জলি বলত, শান্তিনিকেতনে গেলে ওর নাকি অসম্ভব ভাল লাগত। ওর প্রিয় উপন্যাস ‘শেষের কবিতা।’ ওর প্রিয় চরিত্র অমিত এবং লাবণ্য। তবে আমাদের আর অমিত লাবণ্য হয়ে ওঠা হয়নি। আমাদের আর ফিরে যাওয়া হয়নি ‘উত্তরায়ণে’। তবুও সময় পেলেই আবারও শেষের কবিতা পড়ে ফেলি। ছুঁয়ে দেখি দারুণ সেইসব দিনগুলোকে যেখানে ছিল নিস্তব্ধতা। চুপিচুপি হেঁটে যাওয়া ঝরা পাতাদের সাক্ষী রেখে। সেই সব সন্ধেগুলোতো স্মৃতির চিলেকোঠায় তুলে রাখা যায়, খুব জোরে বলতে ইচ্ছে করে রবীন্দ্রনাথের কবিতা। গাইতে ইচ্ছে করে রবির গান। রবীন্দ্রনাথ ছাড়া তো আমরা শূন্য। রবীন্দ্রনাথ ছাড়া তো আমরা ভালবাসার মানেই বুঝতে পারতাম না কোনওদিন। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বলেই তো বাঙালির বুক আজও চওড়া।
তাঁর শিল্পকর্ম নিয়ে যুগের পর যুগ ধরে গবেষণা চলবে। আলোচনা হবে। পাঞ্জাবি পরে ২৫ শে বৈশাখ পালন হবে। আসলে তিনিই তো সর্বোত্তম। তাঁকে ছাড়া কি আমাদের এক পাও এগোনো সম্ভব ? তিনি ছিলেন সবার উপরে! আজও আছেন এবং থেকে যাবেন। আসলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪ তম জন্মবার্ষিকী দিন হয়ত সাড়া বাংলা জুড়ে অজস্র অনুষ্ঠান হবে। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন হবে। কিন্তু তিনি বাঙালির মননে প্রতিদিনই আছেন। আমাদের কাছে প্রতিটা দিনিই ২৫ শে বৈশাখ। আজকেও প্রেম ভাঙার যন্ত্রণার কথায় প্রথম মনে আসে রবীন্দ্রনাথ। প্রেমে উত্তাল সময়েও তিনিই আমাদের পথ দেখান।
উদীচী, উত্তরায়ন, তো আজকেও আমাদের রক্তে মিশে আছে। দেবাঞ্জলি যখন উড়ে গেলে বিদেশে, তখন ওর কাছে গীতাঞ্জলি ছিল। গোটা গীতাঞ্জলি শেষ করতে পারেনি, ততক্ষণে সে একটা অন্য দেশে পৌঁছে গেল। আসলে তাঁকে তো অতিক্রম করা যায় না। তিনি অনতিক্রম্য। তিনি সেরা। তিনি মহৎ। তাঁর আলোয় আজকেও আলোকিত হয়ে উঠি। রোদ মেখে হেঁটে আসি বহুদূরে। প্রণাম করে দিন শুরু করি। রবি ছাড়া আমরা শূন্য। রবি ছাড়া আমরা অন্ধকারে। তাঁকে শতকোটি প্রণাম। দেবাঞ্জলির ছবির পাশে আজও গীতাঞ্জলি রাখা। আজও তো পড়ে ফেলি শেষের কবিতা। রবির আলোকে প্রতিদিন।