লোকসভা ভোটের প্রচারে বাংলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) একযোগে আক্রমণ করেছেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন, মমতাদি ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী বানাতে চান। শাহর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল। প্রাক্তন সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, অভিষেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন। আর সেটা হবেন জনতার রায় মাথায় নিয়ে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসেও অভিষেকের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন কুণাল ঘোষ। সেই সময় কুণাল বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে এক এবং অভিন্ন হয়ে তৃণমূল লড়ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০৩৬ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। তার পরে মুখ্যমন্ত্রী হবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব-আলোচনার কোনও অবকাশ নেই। কুণালে সেই মন্তব্য নিয়ে রীতিমতো শোরগোল সৃষ্টি হয়েছিল।
আজ, মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানে সভা করতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহ। সভা থেকে পরিবারতন্ত্র ইস্যুতে তৃণমূলকে আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, মমতাদি ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী বানাতে চান। বাংলার মানুষই ঠিক করবে, তাঁরা ভাইপোর রাজত্ব চায় নাকি মোদীজির সুশাসন চায়? মোদীকে ফের প্রধানমন্ত্রী করতে বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারকেও জেতানোর আবেদন জানান শাহ।
উন্নয়ন ইস্যুতেও এদিন তৃণমূলকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন শাহ। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের মানুষের জন্য কী কী করেছেন, তার খতিয়ান দেন। তিনি বলেন, ১২ কোটি মানুষের বাড়িতে শৌচালয় তৈরি করে দিয়েছেন মোদীজি। একই সঙ্গে ৪ কোটি মানুষকে পাকা ঘর করে দেওয়া হয়েছে। আর মোদীজির পাঠানো উন্নয়নের পুরো টাকাটা বাংলার সরকার লুট করে নিয়েছে। তৃণমূল সরকার কেন্দ্রের প্রকল্পগুলির নাম পরিবর্তন করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শাহ।
এদিকে মালদহের সভা থেকে আবার এর পাল্টা বিজেপিকে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটে হারার ভয় পাচ্ছে বিজেপি, এই দাবিও করেন মমতা। তাঁর কথায়, প্রথম দু’দফার ভোটের পরই ভয় পেয়ে গিয়েছে বিজেপি। নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে বিজেপি খবর পেয়েছে, ভোট কমে গিয়েছে। তাই ওরা খুব ভয় পাচ্ছে। ভয়ে বিজেপির বুক দুরদুর করছে। মোদীবাবুর নামে আর ভোট হচ্ছে না। তাই এখন গলাবাজিও কমে এসেছে।
প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে এবার সাত দফায় লোকসভা নির্বাচন হচ্ছে। ১৯ এপ্রিল এবং ২৬ এপ্রিল, দু’দফার ভোট ইতিমধ্যেই সমাপ্ত হয়েছে। তৃতীয় ধাপে ৭ মে, চতুর্থ ধাপে ১৩ মে, পঞ্চম ধাপে ২০ মে, ষষ্ঠ ধাপে ২৫ মে এবং সপ্তম ধাপে ১ জুন ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়া চলবে মোট ৪৩ দিন। আগামী ৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।