কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। সিবিআই কয়েক হাজার অযোগ্য প্রার্থীর হদিশ পেলেও যোগ্য প্রার্থীদের তুলনায় তাঁদের সংখ্যা অনেকটাই কম। ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং চাকরিহারা একাংশ। এবার যোগ্যদের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
এক্স হ্যান্ডেলে শুভেন্দু লেখেন, যোগ্য প্রার্থীদের দুর্ভোগের জন্য একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করা যায়, তাঁরা চোখের জল ফেলতে বাধ্য হয়েছেন কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের গা বাঁচাতে মরিয়া ছিলেন, আসলে এসএসসি যোগ্য এবং অযোগ্যদের মধ্যে যে কোনও পার্থক্য তৈরি করলে আদতে তা দোষ স্বীকার করা হত।
একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) প্যানেলে যাঁরা শিক্ষক ও অশিক্ষক পদ কিনেছেন বা নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁদের বাঁচানোর জন্য (কারণ তাঁরা তৃণমূল নেতাদের আত্মীয়) যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও ২৫,৭৫৩ জন কর্মীর সিংহভাগকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিসর্জন দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এক্স হ্যান্ডেলে করা একটি পোস্টে শুভেন্দু একটি চিঠির ছবি দিয়েছেন। সেই চিঠিতে দেখা যাচ্ছে, এসএসসির তৎকালীন চেয়ারম্যান বালাজি সলিউশন বলে কলকাতার টেগোর পার্কের একটি সংস্থাকে, ২০১৬-র এসএসসির ওএমআর সহ যাবতীয় কাগজপত্র নষ্ট করে করার নির্দেশ দিয়েছে। ২২ এপ্রিল ২০১৯ সালে এই চিঠিটি লেখা হয়েছিল। (এই চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি kolkata24x7.in)
চিঠির ছবি পোস্ট করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, দেখুন এসএসসি-তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধস্তনরা কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ নষ্ট করেছিল, যা তুষ থেকে শস্য (অর্থাৎ, যোগ্য প্রার্থীদের বেছে নিতে) আলাদা করতে সহায়তা করতে পারত।
In order to save those appointees who "purchased" teaching and non-teaching posts or got recruited in the 2016 School Service Commission (SSC) Panel, because they were relatives of TMC Leaders; Mamata Banerjee wilfully sacrificed the major chunk of the 25,753 Employees, despite… pic.twitter.com/hvyapN0W5J
— Suvendu Adhikari (Modi Ka Parivar) (@SuvenduWB) April 29, 2024
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের এই নজিরবিহীন রায়ের ফলে চাকরি হারিয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, এসএসসি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে হবে। সুদের হার হবে বছরে ১২ শতাংশ।
এই মামলার শুনানিতে আজ, সোমবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, প্রচুর সংখ্যক চাকরি বাতিল হয়েছে। সব ওএমআর শিট নষ্ট করে দিয়েছে। যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করবেন কীভাবে? উপায় না থাকাতেই হয়ত এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকোর্ট। অন্য কোনও উপায় না থাকলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, দুর্নীতির সুবিধাভোগী কারা সেটা দেখতে হবে।
আগামী সোমবার, ৬ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে আজ মামলাটির শুনানি হয়। এদিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, প্যানেলের বাইরে থেকে নিয়োগ করা হয়েছে। এটা তো বিশাল জালিয়াতি।
এর পাল্টা রাজ্যের আইনজীবী সওয়াল করেন, সিবিআই তো ৮ হাজার অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীর খোঁজ পেয়েছিল, কোন যুক্তিতে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট?