News Desk: সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করা তারপর সেফ হাউসে রেখে নির্যাতন করা। বিশেষত মহিলাদের যৌন নির্যাতন করার ভিডিও তুলে ব্ল্যাকমেল করার হুমকি এসবই বিবরণ দিয়েছে বাংলাদেশের (Bangladesh) মানব পাচারকারীদের চক্র। ঢাকার মিরপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করেছে ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (RAB) বাহিনী।
মানবপাচার চক্রের চক্রের দলপতি রেজাউল হক ওরফে সেলিম। তার দুই সহযোগী মহম্মদ বুলবুল আহমেদ মলিক ও নিরঞ্জন পাল। ধৃতদের জেরা করে কলকাতা ও দিল্লির টর্চার সেলের সন্ধান মিলেছে বলে জানিয়েছে ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন।
কলকাতায় কারা এই চক্রে জড়িত?
ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে কলকাতার রাজিব খান, মানিক ও দিল্লির রবিন সিং এই চক্রের এজেন্ট। গত কয়েক বছর ধরে এই চক্রটি সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে মানব পাচার করে আসছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ ও অষ্ট্রেলিয়ার পাঠানোর কথা বলে চাকরি প্রার্থীদের গোপনে ভারতে আনা হতো। কলকাতা ও দিল্লির টর্চার সেলে চলত অকথ্য নির্যাতন। সেই নির্যাতনের ভিডিও ভিকটিমদের আত্মীয়দের কাছে পাঠিয়ে আদায় করা হতো লাখ লাখ টাকা।
মুক্তিপণের ব্যবসা
ঢাকার মিরপুর থেকে ধৃত মানব পাচারকারীদের কাছে নকল পাসপোর্ট, ভিসা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। চাকরি প্রার্থীদের বলা হতো, ভারত থেকে ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া সুবিধা তাই কলকাতা ও দিল্লি যেতে হবে। ভারতে নিয়ে গিয়ে ভিকটিমদের প্রথমে সেফ হাউসে রাখা হতো। তারপর তাদের ওপর চলত অমানবিক নির্যাতন। এসব নির্যাতন চিত্রের ভিডিওধারণ করে বাংলাদেশে থাকা ভিকটিমদের পরিবারকে পাঠাত চক্রটি। পরিবারকে তারা এসব ভিডিও দেখিয়ে বলত, মুক্তিপণ না দিলে ভিকটিমকে মেরে ফেলবে। প্রিয়জনকে বাঁচাতে সর্বস্ব বিক্রি করে চক্রটির সদস্যদের হাতে টাকা তুলে দিতেন আত্নীয়রা।
মঙ্গলবার র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, গত বছরের নভেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর কথা বলে জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তিকে ভারত পাচার করে চক্রটি। কলকাতায় আটক থাকেন জাহাঙ্গীর। কলকাতার টর্চার সেলে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। তার পরিবারকে চাপ দিয়ে অর্থ আদায় করে পাচারকারী চক্রটি। দেশে এসে জাহাঙ্গীর চক্রটির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার দেওয়া তথ্য ও অভিযোগ যাচাই করে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই চক্রের মূলহোতা সহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।