সৌমেন শীল, আগরতলা: উত্তর প্রদেশ৷ তারপর ত্রিপুরা (Tripura)! বাংলার উন্নয়নের ছবি সরকারি বিজ্ঞাপনে৷ আর তা নিয়েই শোরগোল নেটদুনিয়া৷ নিন্দুকদের অভিযোগ, নিজেদের রাজ্যের উন্নয়ন নেই। তার কারণে বাংলার উন্নয়নের ছবি দেখিয়ে প্রচার চালাচ্ছে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি।
উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের কলকাতার উড়ালপুলের ছবি ব্যবহার হয়৷ যা নিয়ে কড়া আক্রমণ শুরু করে তৃণমূল। ত্রিপুরার বিরুদ্ধে তেমনই অভিযোগ উঠতেই পালটা জবাব দিল আগরতলা। উঠে এল প্রকৃত তথ্য৷ যা নিন্দুকের মুখে রীতিমতো ঝামা ঘষে দিয়েছে৷
শুক্রবার ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের সরকারি ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি ছবি পোস্ট করা হয়। জাতীয় পথ নিরাপত্তা নিয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচারের জন্য একটি প্রতিযোগিতার কথা উল্লেখ রয়েছে তাতে৷ জাতীয় পথ নিরাপত্তা নিয়ে স্লোগান লেখার সেই প্রতিযোগিতায় জয়ী ব্যক্তিকে পাঁচ হাজার টাকা আর্থিক পুরষ্কার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের যে কোন প্রান্তের ব্যক্তিরা ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে।
পথ নিরাপত্তার বিপদ বোঝাতে সেই প্রতিযোগিতার জন্য ব্যস্ত রাস্তার ছবি দেখাতে কলকাতার শিয়ালদহ এলাকার ছবি ব্যবহার করা হয়। ট্রাম লাইনের সঙ্গে কলকাতার লাইফ লাইন হলুদ ট্যাক্সি এবং নীল রঙের বাস দেখা যাচ্ছে। যা দেখে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বিজ্ঞাপনী ছবি চুরির অভিযোগ তুলে বলেন, ‘‘এর আগে উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিজ্ঞাপনে মা উড়ালপুলের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। উত্তরাখণ্ড সরকারের বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হয়েছে অন্ডাল বিমানবন্দরের ছবি। এবার ত্রিপুরা সরকার শিয়ালদহ উড়ালপুলের ছবি চুরি কের বিজ্ঞাপন বানাল।’’
তৃণমূলের এই অভিযোগের পালটা জবাব দিয়েছে ত্রিপুরার প্রশাসনিক কর্তারা। এই বিতর্কে মুখ খুলেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর ওএসডি সঞ্জয় মিশ্র। তিনি বলেছেন, “ট্যুইটের কোথাও বলা হয়নি যে, এটা ত্রিপুরা বা কোন রাজ্যের উন্নয়নের ছবি। ট্রাফিক আইন নিয়ে জাতীয় স্তরের একটি প্রতিযোগিতার বিজ্ঞাপনের ছবি এটা। আর কলকাতা ভারতের মধ্যেই রয়েছে, বাইরে চলে যায়নি। তৃণমূল ত্রিপুরাকে নিজেদের বলে মনে করে না। কিন্তু ত্রিপুরার সাধারণ মানুষ পশ্চিমবঙ্গকে নিজের বলেই মনে করে।”
ত্রিপুরার তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের কর্তা সুপ্রকাশ জামাতিয়া বলেছেন, “এটা কেন্দ্রীয় সরকারের মাই গভ আয়োজিত জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা। ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের কথা পোস্টের কোথাও উল্লেখ নেই। জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় দেশের যে কোন প্রান্তের উপযুক্ত ছবি ব্যবহার করা যেতেই পারে।”
আগরতলার এই সাফাইয়ের পর রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, সমালোচনা করা ভালো৷ তবে কোন কোন ক্ষেত্রে সমালোচনা করা আগে একটু হোমওয়ার্কের প্রয়োজন হয়৷ আর তা না করেই নেতাদের একাংশ তাদের মন্তব্য সোসাল মিডিয়ার প্রচার করে দেন৷ ত্রিপুরার এই টুইটার পোস্ট সেটাই প্রমাণ করল৷