News Desk: চব্বিশ ঘন্টা হয়ে গেল হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা (Helicopter Crashed) প্রয়াত হয়েছেন দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াত (Bipin Rawat)। স্ত্রীক ও বাকি জওয়ানদের নিয়ে ১৩ জন মৃত। এই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ কী তা এখনও জানা যায়নি। মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ দুর্ঘটনার পিছনে বিদেশি শক্তির হাত থাকার কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
বিশেষজ্ঞরা অনেকেই মনে করছেন রাওয়াত নিজের গোটা কর্মজীবনে ছিলেন চিনের (china) পথের কাঁটা। কারণ পাহাড়ে যুদ্ধের ক্ষেত্রে রাওয়াতের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ধারেকাছে ভারতে কম অফিসার আছেন। অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে সম্বল করেই রাওয়াত বার বার চিনা আগ্রাসন রুখে দিয়েছেন। ডোকলামে চিনের আগ্রাসন রুখতে রাওয়াত মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। সে সময় তিনি ছিলেন দেশের সেনাপ্রধান।
নরেন্দ্র মোদী জমানায় ভারতীয় সেনা নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল মায়ানমারে। এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রাওয়াত। পরে সেনা সর্বাধিনায়ক হিসেবেও উত্তরাখণ্ড, অরুণাচল, লাদাখ সীমান্তে চিনা সেনার মোকাবিলা করেছেন। গালওয়ান উপত্যকায় চিনকে রুখে দিতে পরিকল্পনায় ছিলেন রাওয়াত। চিনের সেনার বিরুদ্ধে চিনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাওয়াত। বেজিংয়ের চক্ষুশূল। তাই রাওয়াতের কপ্টার দুর্ঘটনার পিছনে বিদেশি শক্তির হাত নেই সেই সম্ভাবনা কেউ একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না।
রাওয়াতের মৃত্যুর পর নিরাপত্তা কৌশল বিশারদ ব্রহ্মানি চেল্লানি যে মন্তব্য করেছেন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। চেল্লানি বলেছেন, রাওয়াতের দুর্ঘটনার সঙ্গে তাইওয়ানের চিফ অব জেনারেল স্টাফ শেন ইয়ামিংয়ের কপ্টার দুর্ঘটনার অদ্ভুত মিল রয়েছে। তবে, এর পরেই সতর্ক থাকতে তিনি বলেছেন, এই দুটি ঘটনার মিল থাকার অর্থ এই নয় যে, দুটি ঘটনার মধ্যে কোনও একই শক্তির হাত আছে।
উল্লেখ্য, তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে চিন।এই দাবি বরাবরই খারিজ করেছে তাইওয়ান। ২০২০ সালে তাইপের কাছে এক পাহাড়ি এলাকায় কপ্টার দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারিয়েছিলেন তাইওয়ানের চিফ অব জেনারেল স্টাফ সেন ইয়ামিং। আমেরিকার তৈরি কপ্টারে সওয়ার হয়েছিলেন শেন ও আরো ৭ তাইওয়ান সেনাকর্তা।
রাওয়াতের মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহলেও বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়েছে। চিন সরকার রাওয়াতের কপ্টার দুর্ঘটনার পিছনে আমেরিকার দিকেই ইঙ্গিত করেছে। চিনা সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে লেখা হয়েছে, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ মিসাইল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আমেরিকা একেবারেই পছন্দ করছে না। রাশিয়ার থেকে এই মিসাইল কেনার বিষয়ে উদ্যোগী ছিলেন তাই রাওয়াত। তাই এর মৃত্যুর পিছনে আমেরিকার যোগ থাকা অসম্ভব কিছু নয়।