পাকিস্তানের (Pakistan) মন্দিরে মিলল গুপ্তধন। পাকিস্তানের প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি যৌথ দল মন্দিরের ধ্বংসস্তূপের আড়ালে লুকিয়ে থাকা গুপ্তধন আবিষ্কার করে। দক্ষিণ পূর্ব পাকিস্তানের মহেঞ্জোদারো তে হাজার হাজার বছরের পুরনো বৌদ্ধ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পান প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। বলা হচ্ছে মন্দিরটি পাকিস্তানের বৌদ্ধ যুগের অন্যতম প্রাচীন মন্দির। এ বৌদ্ধ মন্দিরের ধ্বংসস্তূপের খনন কাজ চালানোর সময় গুপ্তধনের সন্ধান পান খননকারীরা। খননকারী দলের এক সদস্য জানান, আর্কিওলজিক্যাল ডিরেক্টর সৈয়দ সাকিরের নেতৃত্বে মহেঞ্জোদারো ধ্বংসাবশেষের একটি দেওয়াল ভেঙে খননকার্য চালাচ্ছিল তারা। তখনই হাজার হাজার পুরনো দুর্লভ মুদ্রা দেখতে পান তারা। ঘটনাটি সাথে সাথে কর্তৃপক্ষকে জানালে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা মুদ্রা গুলোকে উদ্ধার করে নেন। পুরনো মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের নীচে হাজার হাজার মুদ্রা দেখে অবাক তারাও। ইতিমধ্যে উদ্ধার হওয়া মুদ্রা গুলো পাঠানো হয়েছে আর্কিওলজিকাল ল্যাবটারিতে। খননের সময় পাওয়া মুদ্রাগুলো এখন প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণাগারে সাবধানে পরিষ্কার করা হচ্ছে।
শোনা যাচ্ছে বিশেষজ্ঞরা সতর্কতার সঙ্গে এখানে মধ্যগুলোকে পরিষ্কার করে এটি নিয়ে আরো গবেষণা চালাবেন। তবে ইতিমধ্যে মুদ্রা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষণা করে জানা গেছে মুদ্রা গুলো প্রায় দুই হাজার বছরের পুরনো। যেখান থেকে তামার এই দুর্লভ মুদ্রা পাওয়া গেছে জায়গাটি মহেঞ্জোদারো সভ্যতার অংশ ছিল। বৌদ্ধ মন্দিরের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে পুরাতত্ত্ববিদ ও গবেষকদের অনেকেই মনে করছেন এগুলো কুষান সাম্রাজ্যের আমলের। কারণ ওই সময়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল বৌদ্ধ ধর্ম। জানা গেছে উদ্ধার হওয়া কুষাণ যুগের তামার মুদ্রাগুলি সবুজ রঙয়ের। প্রায় দুই হাজার বছর আগে থেকেই মুদ্রাগুলি মাটির নিচে থাকার কারণে মুদ্রাগুলি গোলাকারখণ্ডে পরিণত হয়েছে। মুদ্রা গোলকটির ওজন সাড়ে পাঁচ কেজি। যেটিতে অনেকগুলি মুদ্রা জড়ো হয়ে আছে। এছাড়াও আরো কিছু মুদ্রা পাওয়া গেছে আলাদাভাবে।
তবে কেবল মুদ্রা নয় খননের সময় আরো কিছু প্রাচীন নিদর্শন পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত, ইতালীয় প্রত্নতাত্ত্বিক মিশন খাইবার পাখতুনখোয়া প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের সহযোগিতায় গত সত্তর বছর ধরে পাকিস্তানের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলিকে খনন ও রক্ষা করছেন। ২০২০ শুরুতে পাকিস্তানের সোয়াচ জেলা খননের সময় প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ১৩০০ বছরের পুরনো বিষ্ণু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছিলেন। এ সময় প্রত্নতাত্ত্বিকেরা মন্দির ছাড়াও গ্রিসের রাজা মিয়ান্ডারের আমলের খরোষ্ঠী ভাষায় লেখা আংটি বাসনপত্র এবং ২৭০০ টিরও বেশি অন্যান্য নিদর্শন উদ্ধার করেছেন।
এছাড়া ২০২১ সালে তাই ও প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় এবং খাইবার পাখতুনখোয়া বিভাগে পিএইচডি ছাত্ররা সোয়াচ জেলা খননে যুক্ত হয়। এই খননের সময় তারা বেশ কিছু প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন পান। পান পুরনো মন্দিরের সন্ধান। পাকিস্তান জাদুঘর ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পরিচালক ডক্টর আব্দুল সালাম জানান, পাকিস্তান এবং ইতালির প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি যৌথ দল মন্দিরটি আবিষ্কার করেছিলেন। প্রত্নতাত্ত্বিকবিদরা মনে করেন, পাজিরা শহরের সাম্প্রতিক নিদর্শন প্রমাণ করেছে যে পাকিস্তানের সোয়াচ ৬ থেকে ৭ টি ধর্মের পবিত্র স্থান।