প্রয়াত বিশ্বের রাজনীতিতে বারবার ঘুরিয়ে দেওয়ার নায়ক-বিতর্কিত মার্কিন কূটনীতিক (Henry Kissinger) হেনরি কিসিঞ্জার। শতবর্ষী কিসিঞ্জার ছিলেন নোবেল জয়ী ও বহু দেশে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানোর পর সেই দেশকে আমেরিকার অনুকূলে নিয়ে আসার রূপকার। তবে কিসিঞ্জার সমঝে চলতেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও কমিউনিস্ট দেশ সোভিয়েত ইউনিয়নকে।
হেনরি কিসিঞ্জার একজন বিতর্কিত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং কূটনীতিক। কানেকটিকাটে তার বাড়িতে কিসিঞ্জার মারা গেছেন। কিসিঞ্জার তার শতবর্ষ পেরিয়ে সক্রিয় ছিলেন, হোয়াইট হাউসে মিটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি নেতৃত্বের শৈলীর উপর একটি বই প্রকাশ করেছিলেন এবং উত্তর কোরিয়ার দ্বারা সৃষ্ট পারমাণবিক হুমকি সম্পর্কে সেনেট কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। গত জুলাই মাসে তিনি চিনের প্রেসিডেন্ট জিনপিংয়ের সাথে দেখা করতে বেইজিংয়ে একটি আকস্মিক সফর করেন।
1970-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান সরকারের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের অধীনে সেক্রেটারি অফ স্টেট হিসেবে বহু বিশ্ব কাঁপানো কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত ও অভ্যুত্থান ঘটানোর মূল রূপকার ছিলেন কিসিঞ্জার।
1971 সালে ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ ও বাংলাদেশ তৈরির তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন কিসিঞ্জার। তাঁর কূটচালে মার্কিন নৌবহর পাকিস্তানের মদতের জন্য ভারতের দিকে আসছিল। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে কূটনৈতির লড়াই শুরু হয় কিসিঞ্জারের। ইন্দিরা ও ভারতকে সাহায্য করতে দ্রুক কমিউনিস্ট সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের নৌবহর পাঠায়। বিপদ বুঝে মার্কিন নৌবর সরে গেছিল।
ইন্দিরার কাছে ধাক্কা খেলেও হেনরি কিসিঞ্জার একাধিক দেশে সামরিক ও গণঅভ্যুত্থান, প্রতিবিপ্লব ঘটানোর রূপকার। বিশেষত দক্ষিণ আমেরিকার বামপন্থী মানসিকতার সরকারগুলিকে ধংস করতে সফল হয়েছিলেন কিসিঞ্জার। তবে জীবদ্দশায় কিউবার মতো কমিউনিস্ট সরকারের দেশে অভ্যুত্থানের বহু চেষ্টা হয়েছিলেন অসফল।
সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পিছনে কিসিঞ্জারের সফল ভূমিকা ছিল। তবে তিনি সম্প্পতি কমিউনিস্ট দেশ চিনে কেন গেছিলেন তার নিয়ে তীব্র কৌচুহল ছড়ায়। কূটনীতির নিয়ম মেনেই শতবর্ষী কিসিঞ্জার ছিলেন নীরব।